Skip to content

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোমায় চলে যাওয়া , আসলে কি?

কোমা শব্দটির সাথে তো মোটামুটি আমরা কমবেশি পরিচিত ,  কিন্তু এ ব্যাপারে ঠিক কতটা জানি আমরা। কোমায় চলে যাওয়া মানে কি? মানুষ কেন কোমায় চলে যায়?  কিভাবেই বা বেরিয়ে আসে কোমা থেকে? 

 

কোমা হলো ব্যক্তির এমন এক শারীরিক অবস্থা  যেখান থেকে মানুষ জেগে উঠতে পারে না এবং  তার কোনো চেতনা কাজ করে না। এ অবস্থায় ব্যক্তি পরিবেশের কোনো উদ্দীপনায়ও সাড়া দেয় না।  মস্তিষ্ক একধরনের ব্যর্থ অবস্থায়ই পর্যবসিত হয়। সাধারণত কোমায় চলে যাওয়া ব্যক্তি কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কোমা থেকে বেরিয়ে আসে। আবার অনেক ক্ষেত্রে সে অবস্থায় রোগী মৃত্যুবরণ করে।  কিন্তু কিছু কিছু বিরল ক্ষেত্রে কেউ মাসের পর মাস, আবার কেউ বছরের পর বছর কোমায় থাকতে পারে।

 

বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার কারণে মানুষ কোমায় চলে যেতে পারে। সাধারণত মস্তিষ্কের কোনো রোগের কারণেই মানুষ বেশি কোমায় চলে যায়। যেমন: স্ট্রোক, মস্তিষ্কের টিউমার, মস্তিষ্কে হেমারেজ বা রক্তক্ষরণ, মস্তিষ্কে সংক্রমণ, এবসেস, থ্রম্বোসিস (রক্তনালি বা হৃদ্‌যন্ত্রে জমাট রক্ত) ইত্যাদি। এছাড়াও মস্তিষ্কের বাইরের কোনো সমস্যার কারণেও মানুষ কোমায় চলে যেতে পারে । যেমন কোনো কারণে যদি মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহের ঘাটতি থাকে , কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওষুধ বা বিষের প্রতিক্রিয়ায়, শরীরে ইলেকট্রোলাইট বা খনিজ লবণের ভারসাম্যহীনতায় বা শরীরের তাপমাত্রা ও রক্তে শর্করা খুব বেশি বা কমে গেলে, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটার কারণে মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়া। 

 

কোমায় চলে গেলে প্রথম দরকার  জরুরি চিকিৎসা দেয়া। যেকোনো ব্যক্তি এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে এবিসির মাধ্যমে তার শারীরিক মূল প্রক্রিয়াগুলো চালু করার চেষ্টা করতে হবে। 
'এ’ মানে এয়ারওয়ে বা শ্বাসনালি, ‘বি’ মানে ব্রিদিং বা শ্বাসপ্রশ্বাস আর ‘সি’ হলো সার্কুলেশন বা রক্তপ্রবাহ নিশ্চিত করা। অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে এই জরুরী চিকিৎসায়ই জ্ঞান ফিরে পায়। এরপরে কোমায় যাওয়ার  কারণ খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। 

 

কারণ জানা গেলে আর দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত হলে অনেক রোগীই জ্ঞান বা চেতনা ফিরে পায় আর সুস্থ–স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে। অনথ্যায় , রোগীর অবস্থার আরও অবনতি ঘটে মৃত্যুবরণ করতে পারে । আবার কেউ কেউ স্থায়ী ভেজিটেটিভ স্টেটে চলে যায়।  তার রক্তচাপ, হৃৎস্পন্দন, শ্বাসপ্রশ্বাস ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঠিক থাকলেও চেতনা বা জ্ঞান ফিরে পায়না। 

 

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের অনলাইনের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীতে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ভেজিটেটিভ স্টেটে থাকার রেকর্ড এলেইন এসপোসিটো নামের একটি মেয়ের, যিনি ১৯৪১ সালে একটি অস্ত্রোপচারের পর কোমায় চলে যান। এবং দীর্ঘ  ৩৭ বছর কোমায় থেকে ১৯৭৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ