রমজানের শেষদিকে নিজেকে সুস্থ রাখবেন যেভাবে
রমজানের মাঝপথ পেরিয়ে এসেছে। সামনে আরও কিছুদিন রোজা রাখতে হবে। এই সময় শরীর সুস্থ রাখতে হলে খাদ্যাভ্যাস ও দৈনন্দিন রুটিনে কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি। অনেকে রোজার শুরুতে ভালো থাকলেও মাঝপথে এসে ক্লান্তি, পানি শূন্যতা, হজমের সমস্যা কিংবা অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, রমজানের বাকি দিনগুলোতে কীভাবে সতর্কতা অবলম্বন করলে সুস্থ থাকা সম্ভব।

সঠিক খাবার নির্বাচন করুন
ইফতার ও সাহ্রির খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে বয়স, স্বাস্থ্যগত অবস্থা ও শারীরিক চাহিদা মাথায় রাখা জরুরি। ইফতারে বেশি ভাজাপোড়া খাবারের পরিবর্তে সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার রাখুন। সাহ্রিতে এমন খাবার বেছে নিন যা দীর্ঘক্ষণ শক্তি সরবরাহ করতে পারে যেমন প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার। শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখা কিংবা সাহ্রিতে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়া, দুটোই ক্ষতিকর।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
দিনভর রোজা রাখার পর শরীর পানিশূন্য হয়ে যেতে পারে। তাই ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি পান করুন। দৈনিক ৮–১০ গ্লাস পানি পান করা ভালো। ইফতার ও সাহ্রির মাঝে অল্প অল্প করে পানি পান করুন, একসঙ্গে বেশি পানি পান করবেন না। সুগার ড্রিংক, অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও কার্বোনেটেড পানীয় এড়িয়ে চলুন। কারণ এগুলো শরীর থেকে বেশি পানি বের করে দেয়।
স্বাস্থ্যকর ইফতার অভ্যাস করুন
ইফতার শুরু করুন খেজুর ও পানি দিয়ে। এগুলো দ্রুত শক্তি যোগায়। সহজপাচ্য ফলমূল যেমন আঙুর, তরমুজ, আপেল খাওয়া ভালো। তেলেভাজা খাবার এড়িয়ে শরবত, দই ও চিড়ার মতো সহজপাচ্য খাবার রাখুন। ইফতার ও রাতের খাবারে ভাত, মাছ বা মুরগির মাংস, ডাল ও সবজি খেতে পারেন।
সাহ্রিতে ভারসাম্যপূর্ণ খাবার রাখুন
সারাদিন শক্তি ধরে রাখার জন্য সাহ্রিতে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া উচিৎ। ভাতের সঙ্গে সবজি, মাছ, মাংস বা ডাল রাখুন। বেশি ঝাল, তেলযুক্ত ও লবণাক্ত খাবার খাবেন না, এতে পানির তৃষ্ণা বাড়বে। বেশি খাওয়ার দরকার নেই, কারণ অতিরিক্ত খাবার হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন
ইফতারে কেনা খাবারের পরিবর্তে বাড়িতে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি খাবার খান। একবার ব্যবহার করা তেল বারবার ব্যবহার করবেন না। কারণ এতে ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি হয়। প্যাকেটজাত জুস ও প্রক্রিয়াজাত পানীয়ের পরিবর্তে তাজা ফলের রস খান।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ব্যায়াম করুন
রোজায় পর্যাপ্ত ঘুম খুব জরুরি। রাতের ঘুমের সময় কমিয়ে ফেলা হলে দিনের কোনো একসময় বিশ্রাম নিন। ইফতারের পর হালকা ব্যায়াম করুন, যেমন: হাঁটা বা স্ট্রেচিং। সকালে ভারী ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে ক্লান্তি ও পানিশূন্যতা বাড়তে পারে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন
সাহ্রির পর ও রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করুন। খাওয়ার আগে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।ঠান্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়ম মেনে চললে রমজানের শেষ দিনগুলোও সুস্থ ও স্বস্তিতে কাটানো সম্ভব। রোজার পাশাপাশি শরীরের যত্ন নেওয়াও ইবাদতেরই অংশ। তাই সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।