Skip to content

৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লিফটের শিষ্টাচার

আজকাল শহরগুলোতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বহুতল ভবন। যেন নীরব প্রতিযোগিতা চলছে কার ভবন কত উঁচু হবে! এই বহুতল ভবনের জন্য আবার হাজির করা হয় লিফট নামক একটি বস্তুকে। যার সাহায্যে মুহূর্তেই একতলা থেকে ২০, ৩০, ৪০ তলা পর্য ন্যেত যেকোনো তলায় পৌঁছানো যায়। তবে লিফটে খুব কম সময়ই আপনি একা ওঠা-নামার সুযোগ পাবেন। বেশিরভাগ সময়ই লিফটে পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই থাকতে পারেন।

আমরা ক্লাসরুম, অফিস বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খুব সুন্দরভাবে কিছু শিষ্টাচার মেনে চলি। এমন করে লিফটেও কিছু নিয়ম বা ভদ্রতা মেনে চলা উচিত। সেগুলো কী হতে পারে দেখা যাক:

কাউকে ধাক্কা দিয়ে লিফটে উঠবেন না
অনেক সময় লিফটের জন্য একসঙ্গে অনেক মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কিন্তু লিফটের ধারণক্ষমতা যতটা, ততজন মানুষই লিফটে উঠতে পারবে। তাই লাইনে দাঁড়িয়ে, সিরিয়াল মেনে লিফটে উঠবেন। লিফটে ওঠার সময় কাউকে ধাক্কা দেবেন না, আস্তে ধীরে এক এক করে উঠবেন। জায়গা না হলে পরের বারের জন্য অপেক্ষা করুন।

জরুরী কাজ না থাকলে আরেকজনকে জায়গা দিন
লিফটে মানুষ ধারণক্ষমতার বেশি হয়ে গেলে লিফট সিগনাল দেবে কাউকে নামার জন্য। তখন আপনার যদি অতি গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ না থাকে, তাহলে নেমে দাঁড়ান। এমন হতে পারে আপনি হয়তো বা একটি রেস্টুরেন্টে খেতে যাচ্ছেন আর আপনার পরে আসা লোকটি তীব্র জ্যাম ঠেলে এসে কোনো মতে লিফটে উঠলেন অফিসে ঢোকার উদ্দেশ্যে। তাই আগে-পরে চিন্তা না করে যদি আপনার গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ না থাকে তবে নেমে দাঁড়ান।

কেউ লিফট দাঁড়াতে বললে দরজা বন্ধ করে দিবেন না
আপনি লিফটে উঠলেন আর দেখতে পেলেন লিফট থেকে কয়েক হাত দূরে কেউ একজন লিফটে ওঠার জন্য দৌড়ে আসছেন আর আপনাকে অনুরোধ করছেন লিফটটি থামিয়ে রাখার জন্য। তখন দরজা বন্ধ করে চলে না গিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে পারেন তার জন্য। এক্ষেত্রে অবশ্য আপনার খেয়াল রাখতে হবে ভেতরে কেউ লিফট দাঁড় করিয়ে রাখার জন্য সমস্যার সম্মুখীন হবে কি না আর যে ব্যক্তি আপনাকে লিফট দাঁড় করানোর জন্য বলছেন, তার দূরত্ব লিফট থেকে কতটা।

লিফট অনেকক্ষণ ধরে আটকে মালামাল তুলবেন না
ধরুন আপনি ছুটির দিনে সময় করে গাড়ি ভর্তি করে শপিং করে আনলেন। এগুলো এখন ঘরে তোলার পালা। তাই আপনি কী করলেন, লিফট অনেকক্ষণ ধরে সব জিনিস তুলেই যাচ্ছেন। এতে লিফটের ভেতরে যারা অপেক্ষা করছেন, তারাও আপনার প্রতি বিরক্ত হবেন। আবার অন্য কোনো ফ্লোরে যারা লিফটের অপেক্ষা করছেন, তারাও বিরক্ত হবেন। এমনও হতে পারে, কোনো অসুস্থ ব্যক্তি লিফটের জন্য অপেক্ষা করছেন।

হাসাহাসি বা গসিপ করবেন না
ধরুন দুই বন্ধু মিলে লিফটে উঠলেন কিন্তু আপনাদের গসিপ আর থামলো না, কাউকে নিয়ে কথা বলছেন আর অট্টহাসিতে মেতে উঠছেন। এতে করে আপনার প্রতি আশেপাশের মানুষের ভালো ধারণা হচ্ছে না।

ফোনে কথা বলা এড়িয়ে চলুন
লিফটে সাধারণত আপনি কয়েক সেকেন্ডের জন্য থাকেন। ওই সময়টাতে কাউকে কল না করলে কিংবা কারও কল রিসিভ না করলে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তার ওপর আমাদের দেশে বেশিরভাগ জায়গায় লিফটে মোবাইল নেটওয়ার্ক খুব একটা কাজ করে না। তাই ফোন রিসিভ করে জোরে বারবার হ্যালো হ্যালো করে চিৎকার করার চেয়ে লিফট থেকে নেমে তারপর কল রিসিভ করুন।

বাটনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিকে জানান, কোন ফ্লোরে যাবেন
লিফটে বাটনের সামনে যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে থাকেন, তাকে টপকে তার গায়ের সামনে দিয়ে হাত নিয়ে বাটন টিপতে যাবেন না। এক্ষেত্রে সবাই আপনাকে অভদ্র ভাবতে পারে। যে ব্যক্তি বাটনের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, তাকে জানান, আপনি কোন ফ্লোরে যাবেন।

হাঁচি-কাশি নিয়ে সাবধান
হাঁচি-কাশির ফলে একদিকে ভাইরাস ছড়াতে পারে, অন্যদিকে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি অস্বস্তি বোধ করতে পারেন। তাই হাঁচি – কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই হাত বা টিস্যু দিয়ে মুখ ঢেকে নেবেন। আর লিফটে উঠলে অবশ্যই চেষ্টা করুন মাস্ক পরার।

সাবধানে লিফট থেকে নামুন
আপনার গন্তব্যস্থল চলে এসেছে এবং আপনার সামনে কেউ দাঁড়িয়ে আছেন। তাকে ঠেলে লিফট থেকে নামার চেষ্টা করবেন না। আগে তাকে অনুরোধ করে একটু নেমে দাঁড়াতে বলুন, এরপর লিফট থেকে নামুন৷

অনন্যা/জেএজে

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ