অবিকল আরেক পৃথিবী
ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের পৃথিবীর অবিকল ডিজিটাল সংস্করণ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা থেকে শুরু করে নানা কাজে ব্যবহার করা যাবে এই সংস্করণে। বন্যা, খরা, দাবানল বিরুপ আবহাওয়া আমাদের সবার উপর প্রভাব ফেলছে! বিষয়টি বোঝাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ এক বিশাল প্রকল্প নিয়েছে। এজন্যই এটিকে নাম দেওয়া হয় ডিজিটাল টুইন।
ডিজিটাল টুইন কী?
ডিজিটাল টুইন হচ্ছে একটি বস্তু বা ব্যবস্থার ভার্চুয়াল উপস্থাপন একটি সত্যিকারের পরিস্থিতির প্রতিরূপ। বাস্তবধর্মী করে ডিজিটাল টুইন তৈরি করা হয় এবং এক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করা হয়। আমরা যাতে আরো ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারি এজন্য এসব তৈরি করা হয়। ইইউর ‘ডেস্টিনেশন আর্থ’ বা ‘ডেস্টিনই’ নামের এই প্রকল্প ‘আমার বাড়ি তৈরির জন্য এটা কি আদর্শ স্থানা’ এমন প্রশ্নেরও উত্তর দিতে পারে।
‘ডেস্টিনই’কে আমরা আর কোন কোন কাজে ব্যবহার করতে পারি?
‘ডেস্টিনই’ প্ল্যাটফর্মে নানারকম সিম্যুলেশনে প্রবেশ করা যাবে। কোনো এলাকায় বন্যা হলে কী ধরনের পরিস্থিতি হতে পারে বা জলবায়ু পরিবর্তন পর্যটনের উপর কী প্রভাব ফেলবে তা এই অ্যাপ দেখাতে পারবে। বর্তমানে অবশ্য সীমিত কিছু সেবা চালু রয়েছে। কেননা, অ্যাপটিতে অনেক তথ্য এখনো যোগ হচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ পৃথিবীর অবিকল ডিজিটাল প্রতিরূপ তৈরির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে এই প্রকল্প।
পৃথিবীর ডিজিটাল টুইন কীভাবে তৈরি হচ্ছে?
ডেস্টিনই তৈরির মূলে রয়েছে ‘ডেটা লেক’ নামের এক বিশাল তথ্যভাণ্ডার। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা, পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা কোপার্নিকাসসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিবেশ বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ করে এটি। যখনই বিজ্ঞানীরা ডিজিটাল টুইনে কোনো সিম্যুলেশন করেন, সেসব তথ্যও ডাটাবেসে যুক্ত করা হয়। আমাদের ধরিত্রীর ডিজিটান টুইন তৈরি করছে না। চিপনির্মাতা এনভিডিয়ারও একটি রয়েছে। তারা জানিয়েছে যে, তাইওয়ান সরকার ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পেতে এটি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। আর শুধু আমাদের বিশ্বের ডিজিটাল টুইনই নয় এই ডেটা মডেল সব ধরনের কনটেক্সটেই ব্যবহার করা যায়।
আর কোন কাজে ডিজিটাল টুইন ব্যবহার করা যায়?
অস্ত্রোপচারকে আরও নিরাপদ করে তুলতে পারবে। যেকোনো শহরকে আরও বাসোপযোগী করে তোলা। মূলত পরিবেশ ও মানবসংবেদনশীল করে তোলা সম্ভব হবে। গণযোগাযোগকে আরও সময়োপযোগী করে তোলা।
সহজ করে বললে কার্যকারিতা বাড়াতে এবং বুকি কমাতে ডিজিটাল টুইন তৈরি করা হচ্ছে। তবে এসব অনেক কম্পিউটিং ক্ষমতা দরকার, যা বর্তমানে শুধু বড় ইন্সটিটিউটগুলোর রয়েছে। কিন্তু কে জানে, ভবিষ্যতে হয়ত আমরা আমাদের পকেটে ডিজিটাল টুইন নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাবো। ব্যাপরটা মজার হবে না?