Skip to content

২৫শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ৯ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্যামেরার বিশ্বসেরা কারিগর জাপান!

সুন্দর মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখার একটিই উপায়  যেটি হচ্ছে ক্যামেরা। আর এই ক্যামেরা শব্দটি এসেছে মূলত গ্রিক শব্দ ‘কামারা’ থেকে যার অর্থ করলে দাঁড়ায় খিলানযুক্ত কুঠরি। এটি সর্বপ্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল ১৭০৮ সালে। ক্যামেরার খেলা হল আলো নিয়ে আর তাই বস্তু থেকে থেকে আসা আলোকে প্রক্রিয়াজাত করার মাধ্যমে একটি পরিপূর্ণ ছবি পাওয়া যায়। আলোর উজ্জ্বলতার তারতম্য তাই ছবির ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তবে এত সব গুছিয়ে যে সুন্দর একটি স্মৃতির আলোকচিত্র তৈরি করে সেই যন্ত্রটি নিয়েই জানবো আজ।

 

বিশ্বের সেরা ১০ ক্যামেরা ব্র্যান্ডের নাম হঠাৎ করে জিজ্ঞাস করলে আপনার মাথায় কিছু ক্যামেরার নাম আসবেই। ক্যানন, নাইকন, সনি, ফুজিফিল্ম, অলিম্পাস, পেনট্যাক্স, প্যানাসনিক, লাইকা, কোডাক ও হ্যাসেলব্লাড। কেউ কেউ টুকটাক দ্বিমত করতে পারেন। তবে শীর্ষ দশে অন্তত ছয়টা জাপানি ব্র্যান্ড না রেখে কি কেউ তালিকা করতে পারবেন? একটু খুঁজে দেখুনতো আদোও কি এর বাইরে সম্ভব?

 

ক্যামেরা কেনার বেলায় জাপানি ব্র্যান্ডগুলো মানুষের পছন্দের শীর্ষে থাকে। জাপানিরা এমনিতেই পারফেকশনিস্ট।  তাদেরকে আদর করে পাগল কিংবা গোড়া বলা হয়। নিখুঁত না করে নাকি কিছুই বানাতে পারেন না তারা। আর সে ব্যাপারে দ্বিমত করার সুযোগ জাপানিরা রাখেওনি। সেই পারফেকশনিস্টরা ক্যামেরা বানালে যে সেটা সেরা হবে, তেমনটাই তো স্বাভাবিক।

 

বিভিন্ন গবেষণার ভিত্তিতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ছবি তোলার যন্ত্রপাতি তৈরিতে পরাশক্তি ছিল জার্মানি। জাপানিরাও সে সময় ক্যামেরা তৈরি করত। তবে সে প্রতিষ্ঠানগুলো জাপানের বাইরে তেমন পরিচিত ছিল না। ক্যামেরা তৈরিতে জার্মানদের আধিপত্যে কেউ ভাগ বসাতে পারে, তা ছিল কল্পনাতীত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ নাগাদ জার্মানির ক্যামেরা তৈরি শিল্প মোটামুটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। কারণ, বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান ছিল জার্মানির পূর্বাঞ্চলে। যুদ্ধে এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করে রাশিয়া। কোন কোন ক্ষেত্রে রুশরা লেন্স তৈরির প্রযুক্তি এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে যায়।

 

একই যুদ্ধে জাপানের শিল্প খাতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। তবে নাইকন, ক্যানন, আসাহির এবং পেন্ট্যাক্সের মত কিছু ছোট ক্যামেরা নির্মাতা পুনরায় দাড়িয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য-চুক্তির জোরে রপ্তানি শুরুর পাশাপাশি বেশ কিছু সুবিধা পায় জাপান।

 

জার্মানির লাইকার প্রযুক্তি সরাসরি নকল করে ক্যানন। নাইকনও লাইকা ও কনট্যাক্সের প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আর জার্মান প্রযুক্তিতে ভর করে সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্স (এসএলআর) ক্যামেরা তৈরির পথে হাঁটে আসাহি অপটিক্যাল কোম্পানি।

 

জাপানের ক্যামেরা তৈরি শিল্প পশ্চিমা বিশ্বে পরিচিতি পায় ১৯৫১ সালে। সে সময় লাইফ সাময়িকীর আলোকচিত্রীরা তাদের জিস কন্টাক্স ক্যামেরার জন্য জাপান থেকে নাইকনের লেন্স কেনেন। ছবিগুলো এত নিখুঁত আসে যে এর কারিগরি দিক তাদের অবাক করে দেয়। সে থেকে নাইকনের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।

 

প্রতিনিয়তই যুক্ত হচ্ছে নতুন ফিচার সমৃদ্ধ বিভিন্ন মূল্যের ক্যামেরা। স্মৃতি গুলোকে মধুর করে রাখে এই ক্যামেরা এবং কিছু সময়ের জন্য ভাসিয়ে নিয়ে অতীতের সেই সুখময় মুহূর্তে। এসকল সুখময় মুহূর্ত গুলো বন্দী করে রাখার বিরাট অবদান হিসেবে জাপানের একটি ধন্যবাদ অবশ্যই প্রাপ্য। আরিগাতো।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ