ছোঁয়ার অনুপ্রেরণায় নির্ভয়ে এগিয়ে যাক নারীরা
প্রত্যেকটি অর্জন মনের জোর আরও শতগুণ বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। আর নারীর ক্ষেত্রে যেকোনো অর্জন সত্যিই প্রশংসার। কারণ আমাদের সমাজে নারীরা প্রতিটা পদে পদে প্রতিবন্ধকতা সহ্য করে সামনের দিকে অগ্রসর হন। তাই একজন নারী যখন তার সফলতার গল্প বলেন, কোনো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, সম্মাননা পান; তখন অন্য নারীরা মনের জোর পান। শত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তাদেরও যে সামনের দিকে এগুতে হবে, সেই দীক্ষা গ্রহণ করেন। এরফলে নারী সমাজের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি হয়।
অনুপ্রেরণার অংশ হতে কার না ভালো লাগে! আর তা যদি হয় আন্তার্জাতিক পরিমণ্ডলবেষ্টিত, তাহলে তো কথায় নেই। দেশের সীমনা ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বে দেশকে তুলে ধরতে পারা গর্বের বিষয়। সেইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরে অবহেলিত নারীদের এগিয়ে নিতে সাহস যোগানো, পাশে থাকা, সাহায্য-সহোযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া নিঃসন্দেহে সাহসী পদক্ষেপ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ২০২২ সালের জন্য বিশ্বের ১০০ জন অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের নারী সানজিদা ইসলাম ছোঁয়া। ময়মনসিংহের নান্দাইলে তার গ্রামের বাড়ি। কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। তার অদম্য উদ্যোগের ফলে যোগ্য মর্যদায় ভূষিত হওয়ার সম্মান দেশকে বহির্বিশ্বে তুলে ধরতে সহয়তা করেছে। সেইসঙ্গে নারীর এগিয়ে চলার পথকে সুপ্রসারিত করেছে।
ছোঁয়ার সামাজিক কার্যক্রম অব্যাহত থাক। দেশের নারীরা মুক্তি পাক। আপন জগতে বেড়ে উঠুক নারী। আর এই অদম্য সাহসী নারী সানজিদা ইসলাম ছোঁয়ার প্রেরণায় নারীরা নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হোক।
বিশ্বের রাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, অ্যাক্টিভিজম ও অ্যাডভোকেসি, স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান অঙ্গনের ১০০ নারী বিবিসির নতুন তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এরমধ্যে অ্যাক্টিভিজম ও অ্যাডভোকেসি শাখায় আছে সানজিদা ইসলাম ছোঁয়ার নাম। যেসব দেশে বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম।
ছোঁয়া নিজের মায়ের এবং স্কুলের উপস্থাপনায় বাল্যবিয়ের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে জানতে পেরে তার এলাকায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বাল্যবিয়ের ঘটনা শুনতে পেলেই বন্ধু, শিক্ষক ও সহযোগীদের নিয়ে পুলিশকে জানাতে থাকেন ছোঁয়া। তারা নিজেদের ‘ঘাসফড়িং’ গ্রুপের সদস্য পরিচয় দেন। তার সাহসী পদক্ষেপে এ পর্যন্ত ৫০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।
২০১৯ সালে নান্দাইল পাইলট গার্লস হাইস্কুলে বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের ‘হ্যালো চেক’ অনুষ্ঠানে বাল্যবিয়ের প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারেন ছোঁয়া। তখন তিনি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। কিশোরী মনে বাল্যবিয়ের প্রভাব তার মনে দাগ কাটে। এরপর থেকে বাল্যবিয়ে বন্ধে কিশোরী মেয়েদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন ছোঁয়া। যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার এবং সমাজের মাঝে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সহয়তা করবে।
ছোঁয়ার সামাজিক কার্যক্রম অব্যাহত থাক। দেশের নারীরা মুক্তি পাক। আপন জগতে বেড়ে উঠুক নারী। আর এই অদম্য সাহসী নারী সানজিদা ইসলাম ছোঁয়ার প্রেরণায় নারীরা নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হোক।