অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে যা করবেন
করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির নিয়মিত অক্সিজেন মাত্রা পরিমাপ করার জন্য চিকিৎসকেরা অক্সিমিটার ব্যাবহারের পরামর্শ দেন। অক্সিজেন মাত্রা বেশি কমে গেলে রোগীকে ন্যাজাল ক্যানোলা দিয়ে অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। তবে প্রয়োজনের সময় যদি অক্সিজেন মজুদ না থাকে, তখন রোগী শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যেতে পারেন।
রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। যার ফলে মাথা ঝিমঝিম, শরীর দুর্বল, শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে শ্বাস নিতে সমস্যা এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি দু:শ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় কি করবেন? জেনে নিন করণীয়-
টাইট পোশাক পরে থাকলে, দ্রুত তা খুলে ফেলুন যাতে বুক ভরে শ্বাস নেওয়া যায়। করোনা রোগীর শরীরে অক্সিজেন কমে গেলে শুরুতেই পরনের পোশাক ঢিলা করে দিন।
মুখের মাস্কও খুলে দিন। মাস্কের কারণেও শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যেতে পারে।
রোগী নিজে যদি একা থাকেন বা অন্য কেউ যদি তাকে সাহায্য করেন, তাহলে কেউই তাড়াহুড়ো করবেন না।
শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। হাঁটা-চলা এমনকি কিছু খেলেও শরীরে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই হাঁটাচলা বন্ধ করে স্থির থাকুন। খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
রোগীকে বিছানায় উপুড় করে শুইয়ে দিন। বুকের উপর শুয়ে ধীরে ধীরে লম্বা শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কারণ উপুড় হয়ে শোয়ার ফলে ফুসফুসের পিঠের দিকের অংশ সহজে অক্সিজেন পায়।
বর্তমানে চিকিৎসকরা ফুসফুস সুস্থ রাখতে সবাইকে ফুসফুসের ব্যায়াম করার পরামর্শ দিচ্ছেন। সুস্থ ব্যক্তিদেরও এই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে শ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন।
ফুসফুসের ব্যায়ামের জন্য রোগীকে নাক দিয়ে লম্বা করে গভীরভাবে শ্বাস নিতে হবে। ৭-১০ সেকেন্ড অথবা যতক্ষণ সম্ভব ফুসফুসে বাতাস ধরে রাখতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ছাড়তে হবে। এই ব্যায়াম কয়েকবার করতে হবে।
রোগীর শ্বাসকষ্টের সময় আশেপাশের মানুষ কে সরিয়ে দিন। মানুষের ভিড়ে ঘরে অক্সিজেন কমে গিয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড বেড়ে যায়। ঘরের দরজা জানালা খুলে দিন।
তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে সুস্থ করতে এসব উপায় অবলম্বন করতে পারেন। কিন্তু পরিস্থিতি মাত্রাতিরিক্ত খারাপ হলে অক্সিজেন দেওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।