Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘ভ্রমণকন্যা’র দুই কন্যার গল্প! 

নারীদের ঘরের বাইরে বের হওয়া নিয়ে আমাদের সমাজে রয়েছে নানা বিধিনিষেধ। ছোটবেলা থেকেই তাদের শেখানো হয়, 'তুমি মেয়ে, বাইরে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে বহু বিপদ। তোমার কাজ ঘরে থাকা।' আর যদিও ঘর থেকে বের হওয়ার অনুমতি মিলে তাও সঙ্গে থাকতে হবে কোন পুরুষ সদস্যকে। 

এটি আমাদের সমাজের প্রতিদিনকার চিত্র।  শুধু ঘরের বাইরে বের হওয়া নিয়ে প্রতিদিন রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় অনেক মেয়েদের।  আর সেখানে দূরদূরান্তে একা একা ভ্রমণ। এ তো অসম্ভব ব্যাপার। তারপর দরকার পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।  যে ব্যবস্থা আমাদের সমাজে নেই বললেই চলে। এসব কিছু মাথায় নিয়েই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হলে বসে দুই বন্ধু  পরিকল্পনা করেন নারীদের ভ্রমণ বিষয়ক একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার। 

তাদের সেই হুট করে করা পরিকল্পনা আজ পৌঁছেছে সাফল্যের উচ্চশিখরে। নারীদের ভ্রমণের জন্য 'ভ্রমণকন্যা' গ্রুপের কথা জানেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। তবে নারীদের ভ্রমণের জন্য এমন প্ল্যাটফর্ম যারা তৈরি করলেন তাদের কথা ক’জনই বা জানেন। অন্তরালে থাকা সেই দুই নারীর কথা জানা যাক চলুন। 

মানসী সাহা এবং সাকিয়া হক। তাদের বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা সবটাই একসঙ্গে।  কর্মজীবনে দুই জনই ডাক্তার। দুই জনই বিসিএস ক্যাডার হিসেবে নিযুক্ত আছেন । মানসী  আছেন শরীয়তপুরে আর সাকিয়া টেকনাফে। জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা হেঁটেছেন একইসাথে একইপথে। আর তাইতো তারা সফলতার চূড়ায়ও পৌঁছেছেন একই সঙ্গে।

সমাজের সকল নারীদের ভ্রমণের জন্য তৈরি করেছেন নিরাপদ একটি প্ল্যাটফর্ম। নারীদের নিয়ে ঘুরেছেন দেশের আনাচেকানাচে। গুটিগুটি পায়ে ভ্রমণকন্যা এখন অনেক দূর এগিয়েছে। তাদের কমিটির সদস্য সংখ্যা ২৫ জন, ১ হাজার ১০০ জন ভলান্টিয়ার আর ৫৯ হাজার মহিলা সদস্য রয়েছেন। আর সমর্থন রয়েছে পুরো দেশের নারীদের। 

শুধু এখানেই থেমে থাকেননি তারা। তাদের ইচ্ছে জাগে দুই বন্ধু মিলে পুরো দেশ ঘুরে দেখার।  ২০১৭ সালের মার্চে তারা সারা দেশ ঘোরার এই  পরিকল্পনা করেন। তাদের যাত্রা শুরু  হয় সে বছর  এপ্রিলেই। সে যাত্রার সমাপ্তি হয় ২০১৯ সালের ৫ মে ঢাকার মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে।  তবে  এ দেশভ্রমণের সময় তারা যে শুধু ঘুরেই বেড়িয়েছেন তা কিন্তু নয়।  তারা মেয়েদের যৌন স্বাস্থ্য, আত্মরক্ষা, দেশ, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এই সফরে কাজ করেছেন। বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে বাচ্চাদের এসব বিষয়ে ধারণা দিয়েছেন। 

তবে দেশভ্রমণের এ যাত্রা শেষ হলেও এখনি থেমে যেতে নারাজ তারা। পাঁচ বছরের দীর্ঘমেয়াদি এক পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন তারা। মেয়ে শিশুদের আত্মরক্ষাসহ নানান বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রতি মাসে প্রতি বিভাগে দুইটি করে সারা দেশের ১৬টি স্কুলে কাজ করতে চান তারা। তাদের এই উদ্যোগ একদিন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নাম লেখাবে রয়েছে এমন প্রত্যাশাও ৷

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ