যেভাবে বুঝবেন ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হয়েছেন
ফ্যাটি লিভার মারাত্মক অসুখ। যখন কয়েক বছর ধরে লিভার নিজের ভেতরে ফ্যাট জমিয়ে রাখে, তখন মানুষ এই রোগটিতে আক্রান্ত হয়। এ-ক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভার রোগটি থাকলে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। পাশাপাশি, লিভার সিরোসিসের মতো মারাত্মক রোগও দেখা দিতে পারে। তাই ফ্যাটি লিভারের বিষয়ে প্রত্যেককেই সতর্ক হওয়া উচিত।
অনেকেরই ধারণা, কেবল মদপানের ফলেই লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত মদপান এই রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এ কথা সত্যি হলেও যারা মদ্যপান করে না, তারাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে সহজেই। লিভারে অতিরিক্ত স্নেহপদার্থ সঞ্চিত হওয়াই এই রোগের মূল কারণ। প্রাথমিকভাবে খুব বেশি উপসর্গ দেখা না গেলেও একটি উপসর্গ রয়েছে, যা ইঙ্গিত দিতে পারে ফ্যাটি লিভারের। আর এই উপসর্গটি হলো মুখের দুর্গন্ধ।
ফ্যাটি লিভার রোগের একটি অদ্ভুত লক্ষণ হলো, ‘মৃতের শ্বাস’। বিজ্ঞানের ভাষায় ফেটর হেপাটিকাস নামেও পরিচিত এই ‘মৃতের শ্বাস’। এটি এক প্রকার দীর্ঘস্থায়ী গন্ধ, যা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস ও মুখের গন্ধের থেকে আলাদা। নির্দিষ্ট খাবার খাওয়ার পর বা সকালে শ্বাসের গন্ধ পাওয়া সাধারণ বিষয়। কিন্তু ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছে, এমন লোকের ক্ষেত্রে এটি সারা দিন থাকে। দিনভর নিঃশ্বাসে একটি আলাদা সালফারের মতো বা বাসি গন্ধ থাকতে পারে। এটি ফ্যাটি লিভার রোগের একটি সুস্পষ্ট লক্ষণ, যা কোনো মতেই উপেক্ষা করা উচিত নয়।
লিভারের মূল কাজ শরীরের বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ ও ভারী ধাতুকে রক্ত থেকে পরিশুদ্ধ করা। যখন যকৃত ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না, তখন এই উপাদানগুলো দেহের অন্যান্য অঙ্গে জমা হতে থাকে, শ্বাসতন্ত্রও তার ব্যতিক্রম নয়। এই ধরনের একটি পদার্থ হলো ডাইমিথাইল সালফেট। এটি শ্বাসের মাধ্যমে নির্গত বাতাসের সঙ্গে মিশ্রিত হয় বলেই এমন ঘটনা ঘটে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। মুখের গন্ধের সঙ্গে সঙ্গে হলদে ত্বক, পেটে ব্যথা, পা ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যাও লিভারের সমস্যার উপসর্গ। এই ধরনের কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেননিতে হবে।