Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তন্বী-আশিকের এক টাকার কাবিন

এক টাকার কাবিন! কোন গল্প বা সিনেমার কাহিনী নয়। সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) এক শিক্ষক দম্পতি এই গল্পের বাস্তব চরিত্র। ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষক আ ফ ম মাহমুদুল হাসান আশিক ও তানিয়া আহমেদ তন্বী ব্যতিক্রমধর্মী এই ঘটনার নায়ক-নায়িকা। সম্প্রতি মাত্র এক টাকা কাবিনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তারা।

 

বর আশিক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। আর তন্বী ২০১৭ সালে গবি থেকে স্নাতক এবং পরের বছর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শিক্ষক হিসেবে পুনরায় গবিতে ফিরে আসেন। শিক্ষকতা শুরুর কয়েকমাস পর তন্বীকে পছন্দের কথা জানান নরসিংদীর ছেলে আশিক।

 

এরপর বেশকিছু সময় নিজে চিন্তাভাবনা ও পরিবারের সাথে আলোচনা করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তন্বী। কিন্তু বিয়ের আগেই নিজের হবু শ্বশুরবাড়িতে এক টাকা কাবিনে উঠিয়ে নেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিন্তু কেন, কি ছিল এর পেছনের উদ্দেশ্য? জানতে চাওয়া হয় কনে তন্বীর কাছে।

 

আলোচিত এ ঘটনার নেপথ্যের কাহিনী জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমি খেয়াল করেছি, অনেক বিয়েতে কাবিনের টাকা নিয়ে গণ্ডগোল হয়। অনেকে প্রশ্ন করেন, মেয়ের সিকিউরিটির জন্য কাবিনের কত টাকা দেয়া যায়। আমার অবাক লাগতো, বিয়ের দিনই কিভাবে মানুষ বিয়ে ভাঙ্গার কথা চিন্তা করে। আমার কাছে মনে হয়েছে, কাবিনের টাকা অনেক বেশি হওয়া এবং এটা নিয়ে ঝামেলার কারণে বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া উচিত না। সেই ভাবনা থেকে আমি শ্বশুরবাড়িতে প্রস্তাব করেছিলাম।'

 

কাবিনের এক টাকা ধার্য করার পেছনে লোক দেখানো কোন উদ্দেশ্য ছিল না বলে জানান এই দম্পতি। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটা সমাজের মানুষের প্রতি একটা মেসেজ। এক টাকা কাবিনের অর্থ আমি এর চেয়ে বেশি কাবিন করতে চাই না। যারা কাবিনের টাকা নিয়ে হাঙ্গামা করেন, তাদের যেন এটা দেখে একটু লজ্জা হয়। যার সাথে সারাজীবন থাকার চিন্তা করি, সেখানে কাবিনের টাকা কোন ইস্যু হতে পারে না।

 

স্বামী-স্ত্রী পরিচয় ছাড়াও এ দম্পতির আরেক পরিচয় ছাত্রী-শিক্ষক। ফার্মেসী বিভাগের ২৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তন্বী সরাসরি আশিকের ছাত্রী ছিলেন। তখনকার কোন স্মরণীয় ঘটনা জানতে চাইলে হাসতে হাসতে তন্বী বলেন, 'একটা ব্যবহারিক কোর্সে আমি এ প্লাস আশা করেছিলাম। কিন্তু স্যার আমাকে এ গ্রেড দিয়েছিলেন। এছাড়া পরীক্ষার সময় স্যার একবার আমার খাতা নিয়ে গেছিলেন।'

 

সারাবিশ্বে যখন অহরহ ডিভোর্সের ঘটনা ঘটছে, তখন এ ধরণের সংবাদ খুবই ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে। বিষয়টি জানাজানির পর থেকেই পুরো ক্যাম্পাসে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন তারা। বিয়ের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী, বন্ধু মহলের সকলে এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ