স্বপ্নের পথে পনির কন্যা কিশোরগঞ্জ
রক্ষণশীল সমাজে বরাবরই নারীদের সফল হয়ে উঠার পথটা বেশ কঠিন। কিন্তু নারীরা বারবার সে কঠিন পথ জয় করে নিজেদের প্রমাণ করেছে। সব পেশায় নিজেদের সগৌরবময় উপস্থাপন করেছে। ডাক্তার, পাইলট, বিজ্ঞানী, শিক্ষক কিংবা একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে। বর্তমান সময়ে বহু নারী উদ্যোক্তা হওয়ার দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
এমনকি সফলতাও পেয়েছেন। এমনই এক নারী আজাদ চুভ ভূঁইয়া। যাকে অনেকেই পনির কন্যা কিশোরগঞ্জ বলেও চেনেন। তিনি পেশায় মূলত একজন স্কুল শিক্ষিকা। করোনায় দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এক প্রকার বেকার জীবনযাপন করতেন।
আর তখনই WE – Women and e-commerce Forum এর মাধ্যমে উদ্যোক্তা হয়ে উঠেন। ২০২০ সালের নভেম্বরের দিকে মাত্র একবছরেরও কম সময়ে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করে নিতে সক্ষম হন এই নারী। কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে আন্তর্জাতিক মানের পনির অনলাইন সেবার মাধ্যমে বিক্রি করেই পরিচিত হয়ে উঠেন তিনি।
তাই বলে উদ্যোক্তার এই পথচলায় কোন টানাপোড়েন ছিল না এমনও নয়। প্রথম দিকে তিনি কিভাবে পণ্য ডেলিভারি দিতে হয় সে সম্পর্কেও ধারণা ছিল না। ডেলিভারির খরচ কিংবা নিজের পণ্যের দাম ছাড়াই পণ্য পাঠিয়ে দিতেন।
ছোটবেলায় মায়ের স্বপ্ন ছিল আজাদ শুভ ভূঁইয়া বড় হয়ে ভালো ডাক্তার হবেন। কিন্তু মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি বলে আমৃত্যু যার আক্ষেপ রয়ে যাবে। একজন শিক্ষিকা হওয়ার পাশাপাশি পরিবারের সাপোর্ট নিয়ে একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠা এই নারীর জন্ম ভৈরবে, যিনি বেড়ে উঠেছেন মেঘনার তীরে। মেঘনা ব্রিজের কনক্রিট তার শৈশব চাঞ্চল্যের সাক্ষী হয়েছে। লেখা করেন মিরপুর বাংলা কলেজ থেকে বাংলা নিয়ে অনার্স, মাস্টার্স শেষ করেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা ব্র্যান্ডিং- এর জন্য কাজ করা এই নারী উদ্যোক্তা লকডাউনের পুরো সময়েই কাজে করেছেন। কষ্টকর হলেও থেমে থাকেননি নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে। অল্প সময়ে এতটা সফল হয়েছেন নিজের পরিশ্রম আর সততার সাথে কাজ করে। তিনি স্বপ্ন দেখেন একদিন পনির কন্যা কিশোরগঞ্জকে সারা দেশ চিনবে এক নামে। এদেশের বুকে পনির কন্যা কিশোরগঞ্জ একটি নামকরা ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।