বিশ্বের প্রথম বৈদ্যুতিক জাহাজ!
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি নিয়ে বর্তমানে পরিবেশবিদরা বেশ অনেকটাই উদ্বিগ্ন। এখন থেকেই বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস না করতে পারলে তা পৃথিবীর জন্য হতে পারে মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। তাইতো পরিবেশবিদদের পরামর্শ এখন থেকেই শুরু করতে হবে বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসের চেষ্টা৷ আর সেই চেষ্টাস্বরূপ নরওয়েতে চালু করা হলো বিশ্বের প্রথম বৈদ্যুতিক জাহাজ।
ইয়ারা বার্কল্যান্ড নামের ঐ জাহাজটিকে ১৯ নভেম্বর উন্মোচিত করা হয়। কার্বন নির্গমনকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য প্রধানত দায়ী করা হয়৷ এদিকে কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্যেই জাহাজটি চালু করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, কার্বন নির্গমন কমানোর ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক জাহাজ চালু ছোট পদক্ষেপ হলেও এটি সামুদ্রিক শিল্পের ক্ষেত্রে জলবায়ু বিপর্যয় রোধে কিছু হলেও ভূমিকা রাখতে পারবে। এই জাহাজ চলাচলের ফলে বছরে প্রায় ৪০ হাজার ডিজেলচালিত ট্রাক চলার প্রয়োজনীয়তা দূর হবে। এর ফলে কমবে পরিবেশদূষণ।
ইয়ারা বার্কল্যান্ড নামের এই জাহাজটি স্বয়ংক্রিয়, অর্থাৎ চালক ছাড়াই চলতে সক্ষম। ইয়ারা বার্কল্যান্ডে সেন্সর লাগানো রয়েছে। এই সেন্সরের সাহায্যেই জাহাজটি চালক ছাড়া নিজে নিজে চলাচল করবে। ইয়ারা বার্কল্যান্ডের দৈর্ঘ্য ৮০ মিটার এবং ধারণক্ষমতা ৩ হাজার ২০০ টন। জাহাজটি আগামী ২ বছর ধরে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করবে।
নরওয়ের পোরসগ্রুনের একটি কারখানা থেকে ৮ মাইল দূরে ব্রেভিক বন্দরে ১২০ কনটেইনার সার পাঠানোর মাধ্যমে জাহাজটির কার্যক্রম শুরু হয়। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচলের জন্য জাহাজটিতে আরও সংস্কার করতে হবে।
ইয়ারা জাহাজটি যতটুকু পথ পাড়ি দেবে, তার দূরত্ব কম হলেও যাত্রাপথে অনেক বাধা রয়েছে। এটিকে অনেক সরু চ্যানেল পাড়ি দিতে হবে এবং সেতুর নিচ দিয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া যাত্রাপথে অনেক বাণিজ্যিক জাহাজ ও নৌকা থাকবে। আগামী কয়েক মাস জাহাজটির শিক্ষার সময়। যাত্রাপথে জাহাজটিকে অন্য বস্তু চিনতে শিখতে হবে। এরপর তার সাথে কেমন আচরণ করতে হবে তাও শিখতে হবে।
জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে যখন বিশ্বের বড় বড় দেশের নেতাদের মধ্য উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে এবং একের পর এক আলোচনা ও বৈঠক হচ্ছে, ঠিক সেই সময় প্রথম দেশ হিসেবে এমন বৈদ্যুতিক ও স্বয়ংক্রিয় জাহাজ চালু করায় নরওয়েকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন বিশ্ববাসী।