শিশুর ইন্টারনেট ব্যবহারে সতর্কতা!
কয়েকদশক আগেও শিশুরা হৈ হৈ করে শৈশব উদযাপন করতো। পাড়ার মাঠে সব বাচ্চাদের সাথে আনন্দ উল্লাস, খেলাধুলা করে বেড়ে উঠতো। এখন সেসব চিত্র দেখা যায় না বললেই চলে। ব্যস্ত, চাকরিজীবী বাবা মায়েরা বাচ্চাদের মোবাইলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে এরা নানা রকম গেমস, ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম গুলোর সাথেও অনেক শিশুর পরিচয় ঘটে যায়। এরমধ্যে করোনার কারণে আরো যোগ হয়েছে অনলাইন ক্লাস। যা শিশুদের ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকার আরো একটি সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায়, শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা অনেকে বেড়ে যায়। যা সুফলের সাথে সাথে অধিক ঝুঁকিপূর্ণও বটে।
এতে শিশুরা সাইবার অ্যাবিউজের মত ঘটনার স্বীকার ও হতে পারে। অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে শিশুরা আপত্তিকর বিষয়ের সাথেও জড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি অ্যাডিকশনে মাত্রা বেড়ে গেলে তখন শিশুরা মোবাইল ছাড়া থাকতেই চায় না। অবাধ্য হয়ে উঠে, এমনকি অনেকসময় অপ্রত্যাশিত আচরণও করে। তাই বাবা মায়ের উচিত শিশুর ইন্টারনেট ব্যবহারে অধিক সতর্ক হওয়া। এক্ষেত্রে যা করণীয় :
আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে কি দেখছেন বা কোন সাইট গুলো ব্যবহার করছেন, সে বিষয়ে সতর্ক হোন। বাড়ির বাবা-মা বা প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরা যদি একই ওয়াইফাই সংযোগ ব্যবহার করে আপত্তিকর কিছু সার্চ করে বা দেখে, তা হলে সেগুলো ওই আইপি অ্যাড্রেসেই জমা হয়। ফলে একই ইন্টারনেট ব্যবহার করলে বাড়ির শিশু বা অপ্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরাও কিছু ব্রাউজ করলে ওই জিনিস বা কন্টেন্টগুলো তাদেরও সামনে চলে আসে।
শিশুদের ডিভাইস দেওয়া হলে, সেটিতে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করাটাই নিরাপদ। গুগলে একটা প্যারেন্টাল কন্ট্রোল সিস্টেম আছে, যা ব্যবহার করে শিশু কি দেখছে তার ওপর নজর রাখা সম্ভব।
সেফ ব্রাউজারের মত কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ ইনস্টল করুন। এগুলো যদি শিশুর ডিভাইসে ইনস্টল করা হয় তবে শিশু এটি ব্যবহার করে কোন ধরণের অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট দেখতে পারবে না। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তাবিষয়ক কিছু অ্যাপ ইনস্টল করা উচিত।
নিরাপত্তা-বিষয়ক কোম্পানির থেকে ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সময় সেটাতে শিশুর জন্য সেফ ইন্টারনেটের ফিচারটি আছে কিনা তা যাচাই করে নিন।
চাইল্ড ভার্সন অপশনটি ব্যবহার করুন। ফেসবুক ও মেসেঞ্জারের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের চাইল্ড ভার্সন আছে। সে ক্ষেত্রে শিশুদের একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দেওয়া যায়, যেটি তারা ব্যবহার করলেও অভিভাবকদের সুপারভাইস করার সুযোগ থাকে।
শিশুর ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সময় বেঁধে দিন। প্রয়োজনে বাসায় নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন, বাসায় কখন কখন ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে আর কখন থাকবে না।
ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় আপনিও শিশুর সঙ্গে বসুন। শিক্ষামূলক বিভিন্ন চ্যানেল ও ওয়েবসাইট রয়েছে। তাদেরকে সেগুলো দেখতে উৎসাহিত করুন। নতুন কিছু শিখতে বা তৈরি করতে তাদেরকে আগ্রহী করে তুলুন।