ধর্ষণের খবর ছড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে ভুক্তভোগীকে হত্যা
ঢাকার দক্ষিণখান থানা এলাকার একটি বাসায় গৃহকর্মীকে(১৫) বাসার নিরাপত্তারক্ষী মোহন(২০) ধর্ষণ করে মেয়েটির ওড়না দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। হত্যার পর মেয়েটির লাশ সাততলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেয়।
১৫ বছরের কিশোরী মেয়েটি ঐ বাসায় দুবছর ধরে কাজ করছেন। মেয়েটির গ্রামের বাড়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ৮ নভেম্বর মেয়েটি সকালে ঘুম থেকে উঠে ছাদবাগানে পানি দিতে ছাদে যায়। ঐ বাসার নিরাপত্তারক্ষী মোহনও তখন ছাদে উঠে। মেয়েটি কে একা পেয়ে নিজের যৌন স্বার্থ চরিতার্থ করতে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুরো ঘটনাটি পাশের ভবনের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় (সিসিটিভি) ধরা পড়ে।
ঘটনার পর মেয়েটির বাবা আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(২) ধারায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত ভার পান দক্ষিণখান থানা উপপরিদর্শক (এসআই) রেজিয়া খাতুন।
ঐ বাসার সদস্যরা জানান মেয়েটি প্রতিদিনই ছাদে যায় গাছে পানি দিতে। কিন্তু ঘটনার দিন যখন সে পানি দিতে গিয়ে অনেকক্ষণ ফিরছিলো না, তখন তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। প্রায় ঘন্টা দুয়েক পর বাসার এক মিস্ত্রী মেয়েটির মৃতদেহ পাশের কচুরিপানার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখে। ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা নিশ্চিত হন এটা তাদের গৃহকর্মীর লাশ। সাথে সাথে তারা পুলিশ কে খবর দেয়। দক্ষিণখান থানার এসআই রেজিয়া খাতুন সেখানে আসেন এবং খুনী কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে সে অস্বীকার করে। কিন্তু পরবর্তীতে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ পান।যেখানে মেয়েটিকে ধর্ষণ ও হত্যার পুরো ঘটনার ভিডিওচিত্রে প্রমাণ পাওয়া যায়।
পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিতে মোহন জানায়, মেয়েটি ধর্ষণের ঘটনা সকলকে জানিয়ে দেওয়ার ভয়ে তাকে হত্যা করে। আদালতে মোহন অপরাধ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
রেজিয়া খাতুন জানান, যতদ্রুত সম্ভব এই মামলায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র আদালতে জমা দেওয়া হবে।
গৃহকর্মী মেয়েটি ছিল দরিদ্র ঘরের মেয়ে। বাবা ইটভাটায় কাজ করেন। তারা পাঁচ ভাইবোন। ঘটনার দুদিন আগেও মেয়েটি তার বাবার সাথে কথা বলে। মেয়েটির মৃত্যুর খবর শুনে তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। হতদরিদ্র বাবা মেয়ের মৃত্যু শোক বুকে নিয়ে দাবি জানান, তিনি আসামি মোহনের ফাঁসি চান।