পি-টুয়েন্টি সম্মেলন নারীর অগ্রযাত্রায় সহায়ক হোক
আজ ১৪ অক্টোবর ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত নবম পার্লামেন্টারি স্পিকারস সামিট (পি-টুয়েন্টি) সম্মেলনের ‘মেইনস্ট্রিমিং জেন্ডার ইক্যুায়ালিটি ফ্রম উইমেন্স ডেভলপমেন্ট টু ঊইমেন লেড ডেভলপমেন্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, “নারীরা অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের নারীরা অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।” বার্তমান সরকার নারীদের অগ্রযাত্রায় যেভাবে মনোনিবেশ করেছেন তাতে বাংলার নারীরা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ থেকে উত্তরণের মাধ্যমে নারীদের এগিয়ে নিতে পি-টুয়েন্টি সম্মেলন ভূমিকা রাখবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নের নারীদের অবদান অর্ধেক। উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে ঘর-গৃহস্থালির কাজে নারীরা সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। নারীর ক্ষমতায়নে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নারী নেতৃত্বকে সকলে স্বাগত জানাতে হবে।
তিনি বলেন, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠা জরুরি। অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রযাত্রার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব। মেয়েদের যথাযথ শিক্ষা অর্জন সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। নারীদের অর্থনীতির মূল ধারায় সম্পূর্ণরূপে সম্পৃক্ত করতে পারলে টেকসই অর্থনীতি অর্জন করা যাবে। নারীরা দেশের সম্পদ। নারী বৈষম্য দূরীকরণ, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, নারীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, চাকরিজীবী ও শ্রমজীবী নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা ইত্যাদি বিষয়গুলোতে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সকলকে সহযোগিতা করতে হবে। নারীদের অর্থনৈতিক ভূমিকা শক্তিশালী হলে দেশের অর্থনীতি অধিকতর স্থিতিশীল হবে বলে স্পিকার মন্তব্য করেন।
পি-টুয়েন্টি সম্মেলনে স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী যেকথাগুলো তুলে ধরেছেন তা দেশের নারীদের জন্য অবশ্য গ্রহণযোগ্য। তবে নারীর অগ্রযাত্রাকে তরান্বিত করতে হলে এগুলোর বাস্তবায়ণ জরুরি। যদিও পূর্বের চেয়ে বর্তমানে নারীরা নিজেদের প্রতি অধিক সচেতন। তবে সমাজের আমূল পরিবর্তন সূচিত হয়নি। শিরিন শারমিন চৌধুরীর বলেছেন, শ্রমজীবী ও চাকরিজীবী নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা পরায়ণ হওয়ার কথা তা বিশেষভাবে জরুরি। নারীর প্রতি শ্রদ্ধাহীন জাতি কখনোই সার্বিক কল্যাণে অংশ নিতে পারে না। তাই আগে নারীর প্রতি সহিংসতা দূর করতে হবে এবং শ্রদ্ধা পরায়ণ হতে হবে। আর এই শিক্ষা পরিবার থেকেই প্রদান করতে হবে।
পরিবারে সন্তান মায়ের সান্নিধ্যে থাকে বেশি। ফলে একজন মা অর্থাৎ নারীই পারে তার সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে। নারীর এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম সহায়ক সন্তানকে মানুষের মতো গড়ে তোলা। পি -টুয়েন্টি সম্মেলনে ভারতের লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা’র সভাপতিত্বে অস্ট্রেলিয়ার সিনেটের প্রেসিডেন্ট সুয়ে লিয়েন্স, মেক্সিকোর চেম্বার অব ডেপুটিস এর স্পিকার মার্সেলা গুয়েরা ক্যাস্টিলো, দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার নোসিভিয়ে নোলুথান্ডা মাপিসা এনকুয়ালা, স্পেনের কংগ্রেস অব ডেপুটিস এর স্পিকার ফ্রান্সিসকো সোসিয়াস, নাইজেরিয়া সিনেটের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট জিবরিন বারাউ এবং ওমানের স্টেট কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাদরিয়া আল সাহিহি বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় বিভিন্ন দেশের স্পিকারগণ উপস্থিত ছিলেন। নারীদের সার্বিক উন্নতি ও কল্যাণে পি-টুয়েন্টি সম্মেলন সফল হোক। যাতে উন্নত-অনুন্নত ও উন্নয়নশীল সব ধরনের দেশই নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক হয়। নারীর প্রকৃত সম্মান ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি করতে পারে। শ্রদ্ধেয় স্পিকার ড.শিরিন শারমিন চৌধুরীর দেখানো পথ ধরে নারীরা চলুক উন্নয়নের আলোকবর্তিকা হাতে। আত্মপরিচয় গড়ে তুলুক সম্মানের সঙ্গে।