দ্রুততম মানবী কোয়েল
বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি বাংলাদেশ তখনও স্বাধীন হয় নি, ছিল পূর্ব পাকিস্তানের অংশ। রক্ষণশীল সমাজে সেই সময় মেয়েদের ঘরে বাইরে যাওয়া নিয়ে ছিল সংশয়। আর বাইরে গিয়ে খেলাধুলা করা তো দূরের কথা। কিন্তু এই রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করেছিলেন মহীয়সী এক নারী। যিনি দ্রুততম মানবী নামেও পরিচিত। তিনি হলেন কোয়েল। তিনি টানা তিনবার দ্রুততম মানবী হয়েছিলেন।
কোয়েল ১৯৫০ সালে মানিকগঞ্জের সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের পাঞ্জনখাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহন করেন।
কোয়েল ক্রীড়ানুরাগী পারিবারের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণায় সে সময়ের রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থার মধ্যে থেকেও দেশসেরা এ্যাথলিট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এছাড়াও ব্যক্তিগতজীবনে কোয়েল দেশের নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন।
১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের ‘দ্রুততম মানবী’ হবার বিরল গৌরব অর্জন করেছিলেন তিনি। এ ছাড়াও ১৯৬২ এবং ১৯৬৫ সনে লাহোরে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান অলিম্পিকে ৫০ ও ১০০মিটার দৌড়ে অংশগ্রহণ করে রৌপ্যপদক লাভ করেন। ২শ মিটার ও ৮শ মিটার দৌড়, রিলে দৌড় এবং হার্ডলস ছিল তার প্রিয় ইভেন্ট।
দ্রুততম মানবী কোয়েল এক সন্তানের জননী, তার স্বামী খন্দকার কামালউজ্জামান কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। কোয়েলের ছোট বোন টলি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দ্রুততম মানবী।
২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ৬৮ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন দ্রুততম মানবী কোয়েল। রক্ষণশীল সমাজের শিকল ভেঙে নিজের অবস্থান তৈরি করে মেয়েদের জন্য উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়েছিলেন দ্রুততম মানবী কোয়েল।