হবু মায়ের পোশাকে বৈচিত্র্য
নারী জীবনের প্রত্যেকটি পর্যায়ের মধ্যে সুন্দরতম একটি পর্যায় গর্ভাবস্থা। গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। গর্ভবতী নারীদের উপর সাধারণত মানসিক চাপও একটু বেশি থাকে। আমাদের দেশে একধরনের ট্যাবু আছে যার কারণে সাধারণত নারীদের একঘরে করে দেয়া হয়। বলা হয়, এ সময় শুধুমাত্র বাচ্চার জন্য বেশি করে, খাবার দাবার আর বিশ্রামের প্রয়োজন। কিন্তু একজন গর্ভবতী নারীর এ সময়টাতে থাকা উচিত উৎফুল্ল ও প্রাণবন্ত। আর এক্ষেত্রে পোশাক ও সাজগোজ অনেকটাই সাহায্য করতে পারে। সাজগোজ বলতে ভারী মেকআপ নয় নিজের যত্ন ও নিজেকে পরিপাটি রাখাকে বোঝানো হয়েছে। আমাদের দেশে সাধারণত গর্ভকালীন সময়ের পোশাক বলতে শুধু ম্যাক্সিকেই ধরা হয়। অনেকে তো আবার নিজেকে আড়ালই করে ফেলেন সমাজের থেকে।
তবে যারা নিজেকে একঘরে করতে না চান, ঘরের ভেতরে ম্যাক্সি পরে থাকলেও বাইরে বেরোতে হলে আলাদা পোশাকের প্রয়োজন পড়ে। আর মাতৃত্বকালীন সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে হলেও পোশাকের ব্যাপারে বিপাকে পড়েন তারা। তবে এক্ষেত্রে চিন্তার কিছু নেই, চাইলে বৈচিত্র্যময় পোশাক পরতে পারেন গর্ভবতী নারীরাও। মায়েদের আরামদায়ক বিভিন্ন ধরণের প্রচলিত ড্রেস রয়েছে। যা একাধারে ফ্যাশনেবল আবার আরামদায়ক। যেমন-
নার্সিং ড্রেস
মেটারনিটি বা নার্সিং ড্রেসকে এখন একটি সুন্দর পোশাক হিসেবে ধরা হয়। এই পোশাক শুধু স্টাইলিশ নয়, আরামদায়কও বটে। গাউন, মিডিস বা কাফতান পোশাক এই সময়ে ওয়্যার্ড্রোবে রাখতে ভুলবেন না যেন। বিভিন্ন ধরনের নকশা, উপাদান, রঙ ও ফ্যাশন-শৈলীর দিকে নজর রাখতে পারেন। এ ছাড়া সেই পোশাক দীর্ঘমেয়াদী ও বহুমুখী কাজের জন্য ফেব্রিক কিনা তা-ও দেখে নেবেন। এমন পোশাক বাছুন যা প্রসবের আগে ও পরে, দু’ সময়েই পোশাক পরতে পারেন।
লেগিংস
গর্ভাবস্থায়ও মেয়েরা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নিয়মিত অফিসে যান। তাঁরা কিন্তু আরামসে লেগিংস পরে অফিসে যেতে পারেন। সুতি বা লিনেনের কুর্তির সঙ্গে লেগিংস খুবই মানানসই। বেশির ভাগ মহিলাই জিনস ও টপ পরতে বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন।
মেটারনিটি জিনস
গর্ভাবস্থায় জিনস পরাটা একটু চাপের হয়ে যায় কোনো কোনো সময়ে। এখন গর্ভবতী মহিলাদের কথা মাথায় রেখে বাজারে নানা ডিজাইনের ও প্যাটার্নের মেটারনিটি জিনস কিনতে পাওয়া যায় যেগুলো পরে ফ্যাশন করা তো যায়ই পাশাপাশি এগুলো খুব আরামদায়কও হয়।
টিউনিক
টিউনিক কিন্তু বহু কাল ধরেই ফ্যাশনের ক্ষেত্রে একটি জায়গা করে নিয়েছে। এই পোশাকটি কিন্তু গর্ভাবস্থায় পরার জন্য আদর্শ। টিউনিক যেহেতু ডিজাইন হিসেবেই একটু ঢিলেঢালা পোশাক, তাই গর্ভবতী মহিলাদের কাছে এটি অত্যন্ত প্রিয় ও আরামদায়ক পোশাক।
নানা ধরনের স্কার্ট
ম্যাক্সি স্কার্ট থেকে শুরু করে এ-লাইন স্কার্ট, প্লিটেড স্কার্ট, এমনকি শর্ট লেয়ারড স্কার্ট গর্ভাবস্থায় পরা যেতে পারে। মানানসই টপ বা শার্ট দিয়ে। আসলে গর্ভাবস্থায় স্কার্ট পরার অনেক সুবিধে রয়েছে। স্কার্ট বেশ আরামদায়ক ঢিলেঢালা পোশাক, গর্ভবতী মহিলাই নিজেকে ফ্যাশনেবল করে তুলতে এ সময়ে স্কার্ট পরতে পছন্দ করেন।
গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তাই সাধারণ সময়ের মতো সবধরনের কাজে আপনি অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। সন্তান এবং নিজের সুস্বাস্থ্যের জন্য কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবেই। তার মধ্যে পোশাক একটি। পোশাক নির্বাচন এমনভাবে করতে হবে তা যেন মা বা সন্তান কারও জন্য ক্ষতির কারণ না হয়।