নব্য রূপে খাদির আবির্ভাব
খাদির ব্যবহার এখন বিলুপ্ত প্রায়ে। ফ্যাশনে নানান ধরনের জিনিস আসবে যাবে। অনেক নতুন জিনিসের চর্চা হবে। অনেক পুরাতন জিনিস হারিয়ে যাবে। তবে কিছু ঐতিহ্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রাখা উচিত। বিশেষ করে দেশীয় ঐতিহ্য।
তাই ঐতিহ্যকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে রাজধানীর তেজগাঁও লিংক রোডের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে ১৯ ও ২০ জানুয়ারি হয়ে গেল ‘খাদি দ্য ফিউচার ফেব্রিক শো ২০২৪’ জাঁকজমকপূর্ণ এ ফ্যাশন শো টি পরিচালনা করেছে ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশ (এফডিসিবি) খাদি উৎসব ২০২৪ এর লক্ষ্য হলো ঐতিহ্যবাহী ও পরিবেশবান্ধব খাদি পোশাকের প্রসার নিশ্চিত করা এবং এর পাশাপাশি খাদি কাপড়ের বিভিন্ন পণ্যর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জনসাধারণকে অবগত করা।
সেখানে নানান ধরনের ঐতিহাসিক ও দেশীয় ঐতিহ্য এবং বর্ণিল সব নকশা নিয়ে উপস্থিত ছিলেন দেশ-বিদেশের পুরস্কারপ্রাপ্ত ৪৫ জন দক্ষ শিল্পী ও উদ্যোক্তা।
বাংলাদেশের তাঁতিরা একসময় ‘খাদি’ কাপড় বুনতেন। তবে সেই চর্চা এখন প্রায় বিলুপ্ত। তাই সেই আমেজ খানিকটা ফিরিয়ে আনতেই এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ভারত থেকে কার্পাস সুতা আমদানি করে ১৫০-২০০ কাউন্টের খাদি কাপড় বুনে দেশীয় তাঁতিরা।
সম্পূর্ণ শো – টিতে দেশীয় ঐতিহ্য দিয়ে নানান ধরণের থিমে নতুন প্রজন্মের কাছে বিষয়টি যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে তা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের। পাশাপাশি সেখানে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে দেশীয় উৎসব এবং উৎসব ভিত্তিক রঙিন রং কেও।
সম্পূর্ণ উৎসবে যেই রং গুলো দেখা গিয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল হলুদ,সবুজ (সবুজ রঙের অনেক প্রকারভেদ ছিল), গাঢ় নীল, লাল, খাকি, মেরুন, ধূসর, সাদা ও কালো। সাদা ও কালো রংকে খুব বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এবং এই রঙে পোশাকের মধ্যে অনেক বেশি বৈচিত্র্যতা দেখা গিয়েছে।
সম্পূর্ণ ফ্যাশন শো- তে পোশাকগুলোতে আসলে কি প্রকাশ করতে চেয়েছিল? মূলত পোশাকের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে উৎসবের আমেজ (বসন্ত ও নবান্ন), আর্তনাদ ও অপ্রাপ্তি, সহিংসতা, প্রতিবাদ ও প্রকৃতির নানান নিবিড় সৌন্দর্য্য।
পোশাকের নকশা, সরঞ্জাম, থিম ও প্যাটার্নে নজর কেড়েছে যে বিষয়গুলো তা হল- ঢিলেঢালা পোশাকে আধুনিকতা প্রকাশ পেয়েছে, বেল্টের ব্যবহার বেশ দেখা গিয়েছে। এছাড়াও কুঁচি, ফিতা, ক্রিসক্রস এ ধরনের সেলাই খুবই দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি বাটিক ও টাইডাই নকশা দেখা গিয়েছে। খাদিতে জামদানি এবং নকশি কাঁথা নকশাও তুলে ধরা হয়েছে। হাইনেক,ভি, ওভাল শেপের গলা ডিজাইন নজর কেড়েছে। কিছু কিছু পোশাকে থ্রিডি নকশাও দেখা গিয়েছে। পাশ্চাত্য ভিত্তিক কাটছাটের পোশাকও বেশ লক্ষনীয় ছিল। দিনাজপুরের কান্তজির মন্দির ও কৃষ্ণ-রুক্মিনীর গাথা তুলে আনা হয়েছে। একেকটা পোশাকে নানান ধরনের ফিউশন দেখা গিয়েছে।