‘এখন নারীর পোশাকের দৈর্ঘ্য নিয়ে কথা বলার সময় না’
নারীর পোশাক নিয়ে বিতর্ক যেনে পিছু ছাড়ছে না। নারীর যোগ্যতাও যেন ঢাকা পড়ে যায় পোশাক বিতর্কে। সমাজের একদল মানুষ যেকোনো সামাজিক বিশৃঙ্খলার দায় সরাসরি নারীর পোশাকের ওপর চাপিয়ে দেয়।
কিছুদিন আগে নরসিংদী রেলস্টেশনে এক তরুণীকে হেনস্তা করা হয় পোশাকের জন্য। এরপর হাইকোর্টও বিশৃঙ্খলার জন্য দায়ী করেছেন সেই তরুণীর পোশাককে। সেই ঘটনা আলোচনায় আসার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী নারীর পোশাক বিয়ে প্রশ্ন তুলে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনা নিয়ে যখন দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা তখন মুখ খুলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
সোমবার (২৯ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েন অব বাংলাদেশের (ইরাব) সঙ্গে মতবিনিয়ম সভায় এ বিষয় নিয়ে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, যখন বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, সমাজ এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আমি রোবটিক্স নিয়ে কথা বলবো। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কথা বলবো। এখন নারীর পোশাকের দৈর্ঘ্য নিয়ে তো কথা বলার সময় না। এখন কপালে টিপ আছে কি না, এটা তো প্রশ্ন হতে পারে না।’
দীপু মনি আরও বলেন ‘কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটছে। কিছুদিন আগে একবার টিপ নিয়ে এক ধরনের কথা হলো। এখন আবার নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে কথা হচ্ছে। এগুলো বাংলাদেশে মিমাংসীত বিষয় ছিল। কোন স্বার্থে, কার স্বার্থে এবং কারা এগুলো নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উত্থাপন করছে, অমিমাংসীত করছে?’
আমাদের ভূখণ্ডকে মেল্টিং পট হিসেবে তুলনা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এখানে সব ধরনের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি আছে। একটা সময় ছিল যখন এই ভূখণ্ডে ১৭টা ভাষা, ভাষাভাষীর মানুষ ছিল। যে ভূখণ্ডে একটা ভাষাকে ভিত্তি করে একটা বিশাল আন্দোলন হয়ে রক্তপাতের মধ্যে দিয়ে একটা জাতিরাষ্ট্রের জন্মের সূচনা হলো এবং যেখানে এত রক্ত দিয়ে অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে, ধর্ম নিরপেক্ষতার পক্ষে একটা মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করলাম, সেই দেশে এটা তো মীমাংসিত বিষয়।’
তবে দীপু মনির এমন মন্তব্য নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা- সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য ঘুরপাক খাচ্ছে, যেখানে কেউ তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন, আবার কেউ কেউ করছেন বিরোধিতা।