রান্নায় সহযোগী ও প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য
রান্না করার সময় সকলের মাথায় একটা জিনিসই ঘুরে যে রান্না টা ঠিক হচ্ছে তো? রান্নার স্বাদ ঠিক থাকবে তো? এসব নিয়ে চিন্তা করে দেখা যায় রান্নায় কিছু না কিছু ভুল হয়ে যায়। তাই এসব চিন্তা মাথা থেকে দূর করে রান্নায় ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য মাথায় রাখা উচিত। এতে করে রান্না সহজ হয়ে যাবে এবং মাথায় কোনো চিন্তাও ঘুরবে না। চলুন তাহলে সহযোগী তথ্যগুলো জেনে নেই।
যতটুকু সম্ভব পাতিলে ঢাকনা দিয়ে রান্না করা ভাল, এতে করে খাবারের পুষ্টিমান বজায় খাকে।
মাংস রান্নার সময় প্রথমেই লবণ দেবেন না। মাংস রান্নার মাঝামাঝি সময়ে লবণ দিয়ে ভালভাবে নাড়ুন। এরপর দেখে নিন পরিমাণ ঠিক হল কিনা।
তরকারির ঝোল ঘন করতে চাইলে কিছু কর্ণ ফ্লাওয়ার পানিতে গুলিয়ে নিয়ে ঢেলে দিন। লক্ষ্য রাখবেন কর্ণ ফ্লাওয়ারের দ্রবণটি যেন ভালমতো তরকারির সাথে মিশে যায়।
ভাত রান্না করতে গিয়ে ভাতগুলো ঝরঝরে হচ্ছে না? কোন চিন্তা নেই চাল ধোয়ার পর ১০ মিনিট রেখে দিয়ে তারপর রান্না করুন অথবা রান্নার সময় ১ চা চামচ রান্নার তেল দিন। দেখবেন সুন্দর ঝরঝরে ভাত রান্না হয়েছে।
স্বাস্থ্য সম্মত মুরগীর তরকারি খেতে চাইলে চামড়া ছাড়িয়ে মুরগি রান্না করুন। কারন মুরগির চামড়াতেই থাকে প্রধান ফ্যাট।
সবুজ সবজি রান্না করতে চাইলে এক চিমটি চিনি দেন। দেখবেন সবজি কেমন সবুজ দেখাচ্ছে।
পরদিন রান্না করার জন্য মাংস সেদ্ধ এবং ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন।
রান্নার সময় গরম পানি ব্যবহার করুন।
ফ্রিজের মধ্যে আঁশটে গন্ধ এড়াতে ফ্রিজে এক টুকরো কাঠ কয়লা রেখে দিন। আঁশটে গন্ধ থাকবে না।
মাংস তাড়াতাড়ি সেদ্ধ করতে চাইলে খোসাসহ এক টুকরো কাঁচা পেঁপে দিন।
মাছ, মাংস বা ডিমের ঝোলে অনেক সময় লবণ বেশি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ওই তরকারিতে কয়েকটি সিদ্ধ আলু ভেঙে দিন। লবণ কমে যাবে।
মুরগির মাংস বা কলিজা রান্না করার সময় ১ টেবিল চামচ সিরকা দিন। এতে যেমন গন্ধ থাকবে না, তেমনি তাড়াতাড়ি সিদ্ধও হবে।
মাছ ভাজার সময় তেল ছিটলে একটু লবণ ছড়িয়ে দিন। তেল আর ছিটবে না।
বেরেস্তা করার সময় পেঁয়াজ ভেজে নামানোর আগে সামান্য পানি ছিটিয়ে দিন। তাড়াতাড়ি লালচে হবে।
কাঁচা মাছ বা মাংস ছুরি-চপিং বোর্ডে কাটতে চাইলে বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই পানিতে ভিজিয়ে নরমাল করে নিন।
আলু ও ডিম একসঙ্গে সিদ্ধ করুন। দুটো দুই কাজে ব্যবহার করলেও সিদ্ধ তাড়াতাড়ি হবে।
অনেক সময়ই তাড়াতাড়ি স্যুপ রান্না করলে পাতলা হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে দুটি সিদ্ধ আলু ম্যাস করে স্যুপে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। স্যুপ ঘন হবে।
ডাল তাড়াতাড়ি রান্না করতে আগের রাতেই ভিজিয়ে রাখুন।
মশলাপাতি তাড়াতাড়ি খুঁজে পেতে কৌটার গায়ে নাম লিখে রাখুন।
পরদিন কী রান্না করবেন তা আগের রাতেই ঠিকঠাক করে প্রস্তুতি নিন। তাহলে অল্প সময়ে রান্না হবে।
রান্না করার আগে অবশ্যই মাছ ও সবজির কম্বিনেশন এর ব্যাপারে লক্ষ রাখবেন ।
মাছ রান্না করে হাতের কাছে কাঁচা ধনিয়া পাতা থাকলে তা কুচি করে কেটে বিছিয়ে দিন, স্বাদ দুইশত গুন বেড়ে যাবে।
ডালে বাগার দিতেই হবে, রসুন কুচি তেলে ভেজে ডালে দিয়ে দিতে হবে।
মাংস জাতীয় রান্না করে শেষে বেরেস্তা (পেঁয়াজ কুচি ভাজি) দিয়ে দিন। স্বাদ বেড়ে যাবে।
ডিম সিদ্ব করতে পানিতে সামান্য লবণ দিন। ডিম খেতে সুস্বাদু হবে। গরমাবস্থায় ডিম ছিলবেন না, ঠাণ্ডা করে ছিলুন এতে খোসায় লেগে ডিম নষ্ট হবে না।
কিছু ভাজিতে কড়াইতে তেল গরম হলে যা দেবেন তার সাথে সামান্য লবণ দিয়ে দিন, তেলের ছিটকা উঠবে না।
ডালের মজা জ্বালে! অর্থাৎ যত বেশি সময় জ্বালানো হবে স্বাদ বেড়ে যাবে ততই।
যদি তেলাপিয়া মাছে কোন গন্ধ থাকে তবে তেলাপিয়া মাছ হলুদ ও ভিনিগার/লেবুর রস মাখিয়ে মিনিট ১৫ রেখে ধুয়ে নিলে গন্ধ থাকেনা।
লাল সর্ষে তিতা বা ঝাজ বেশী হয়। হলুদ সর্ষে ব্যাবহার করলে তিতা হয়না। আরেকটি কথা: সর্ষে বাটার সময় লবণ আর কাঁচামরিচ এক সাথে বাটলে তিতা হয়না।
রান্না নির্দিষ্ট কোনো তথ্যের উপর ভিত্তি করে করা সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই যতটা সম্ভব রান্নার সময় প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো মাথায় রেখে রান্না করা এতে করে রান্নার স্বাদও অটুট থাকবে এবং রান্নাও সহজে হয়ে যাবে।