ভালোবাসা

আমার ভালবাসা সে
আজো বাতাসে তার রক্তের গন্ধ পাই।
এ যে বড্ড চেনা গন্ধ আমার।
শকুনের খাদ্যে পরিণত হওয়া ময়নার মাংসের গন্ধইতো আমাকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়।
ঘুম থেকে উঠে আড়মোড়া ভাঙতেই শকুনের চোখ আমায় তাড়িয়ে বেড়ায়।
এ জীবনে অনেক শকুন দেখেছি
কিন্তু তাকে খুবলে খাওয়া সেই শকুনের চোখ দুটি কেন যেনো খুব আপন মনে হয়।
কি বলছি আমি?
শকুন কি কারো আপন হয় নাকি!
হয়তো হয়।
জীবনে যখন শুধু বেঁচে থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ
বাকি সব তুচ্ছ
যখন দুমুঠো ভাতের জন্যে সব করা যায় তখন হয়তো শকুনেরাই মানুষের বন্ধু হয়।
রক্তের গন্ধ আজ আমার বড্ড প্রয়োজন
তাজা রক্ত।
শুকিয়ে যাওয়া রক্তে আর ক'দিন!
পশুর রক্তে চলবে কি?
না,ওসব আমার পোষবে না।
আমার নরাধমের খুন চাই।
যার মাংস আমি প্রিয় শকুনকে খাওয়াবো
কারণ সে মাংস খুবলে খেয়ে রক্তটুকো আমার জন্যে তুলে রাখবে।
আত্মহত্যা মহাপাপ।
তাই আমার এই বাঁচার চেষ্টা।
বাঁচতে চাই
নরাধমের রক্তের গন্ধ নিয়ে নয়।
বরং ভাল কাজের মজুরিতে কেনা এক দুমুঠো সাদা ভাত আর শাপলার তরকারি খেয়ে।
এর চেয়ে আনন্দের এখন আমার জীবনে আর কি আছে!
আমার সব আনন্দতো সেদিনই হারিয়ে গিয়েছে
যেদিন আমার ময়না নরাধমের হাতে বিবস্ত্র হয়ে শকুনের আহার হয়েছে।
শেষ চেষ্টাটুকু করেও আমার সাধের ময়নাকে নরাধমের হিংস্র ছোবল থেকে বাঁচাতে পারি নি।
শেষে কিনা শকুনের খাদ্য হতে হলো ময়নাকে?
অভাবের মাঝেও ভালোবাসা দিতে পেরেছিলাম
আমার ভালোবাসার ময়নাকে,
এটাই এখন আমার একমাত্র তৃপ্তি।
আর নিজের জন্যে?
কেবল দমটুকুর জন্যে যতটা খাওয়া প্রয়োজন ততটা।
জীবনের আড়ম্বরতা কেবল সেই শকুনের জন্যে।
কারণ নরাধমের মাংসের লোভেই যে সে বেঁচে আছে।