নেতাজি ফিরে আসবেন
ছোটবেলায় রচনা পড়তে পড়তে
একটু ওপরের ক্লাসে ইতিহাস বইতে বিস্তারিত
আমরা ভাবতাম,নেতাজি একদিন ফিরে আসবেন
আবার ঘোড়া ছুটবে, থর থর মাটি কাঁপবে
পদে পদে শত্রুরা ভয় পাবে।
পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় চড়ে বজ্রের মতো নেতাজি দাপিয়ে বেড়াবেন গোটা আকাশ
পুষ্প বৃষ্টি হবে, ধন্য হবে মাটি
আমাদের মুখে মুখে, বুকে বুকে,ফুটবে যুদ্ধ জয়ের হাসি।
এরপর নেতাজিকে মুখস্ত করতে করতে
নেতাজিকে ঠোঁটস্থ করতে করতে
মনে মননে, সরবে নীরবে উপলব্ধি করতে করতে
স্বপ্নে বাস্তবে নেতাজির ঘোড়ার পেছন ছুটতে ছুটতে
জীবনের কতো কম নম্বর, বেশী নম্বর
পাশ-ফেল পেরিয়ে এলাম
নেতাজি আর কখনো এলেন না।
মনের মধ্যে কৌতূহল, নেতাজির তো বয়স হয়েছে ঢের
ফিরে এলে এখন দেখতে কেমন হবে ?
গলার স্বর টিভিতে শোনা স্বরের মতো কি একই থাকবে ?
মন বলতো, হ্যাঁ, এই বজ্রকন্ঠ কখনো পাল্টানোর নয়
নেতাজির বয়স কখনো বাড়ে না
কিন্তু দিন যেতে থাকে, রাত গড়াতে থাকে
জীবনের কতো আশাহীন আশাহত সময় পেরিয়ে যায়
রূপকথার ঠুলি খসে পড়ে।
চোখের সামনে দেখি গরিব নিপীড়িত মানুষের বুকফাটা ক্রন্দন
দেখি ভাঙা ভাঙা দেশ,ভাঙা ভাঙা মুখ
রক্ত, শবদেহ,মিছিল
ধর্মধ্বজীদের হুংকার, বিভাজন,ধর্মের নামে লড়াই
ক্ষমতার আস্ফালন
এখন মনে হয়, এই হতভাগ্য পোড়া দেশে নেতাজি আর না-এলেই ভালো।