বাঁশে সাজুক বসার ঘর
যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের ব্যবহার্য জিনিসপত্রেরও পরিবর্তন এসেছে। মানুষ এখন ডিজিটাল যুগে বাস করছে তাই ঘরের জিনিসপত্রও এখন পরিবর্তন এসেছে। এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পারটেক্সের জিনিস পত্র দিয়ে ঘর সাজাতে দেখা যায়। এতে ঘরের সৌন্দর্য বাড়ে ঠিকই কিন্তু তাতে আধুনিকতার ছোঁয়াও বোঝা যায়। আধুনিকতার ছোঁয়া যে শুধু পারটেক্স কিংবা কাঠের তৈরি জিনিসপত্রে আসে এমনটা না। বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র দিয়েও ঘর সাজানো যায়।
বাঁশ বাঙালির জীবনের সাথে জড়িত। একটা সময় বাঙালি ঘর সাজাতে কিংবা দৈনন্দিন ব্যবহার্য নানা জিনিসপত্রের জন্য বাঁশ ব্যবহার করে থাকতো। এখনও যে বাঁশ দিয়ে সুন্দর ঘর সাজানো যায় তা হয়তো অনেকেই জানেন। বাঁশের সাজে বসার ঘরে বাঙালিয়ানার ছাপ পড়ে সেইসঙ্গে দেখতেও আকর্ষণীয় লাগে।
ড্রয়িং রুমে সকলেই সোফা সেট রাখেন। একটু অন্যরকম দেখাতে বাঁশের তৈরি চেয়ার, টেবিল রাখতে পারেন। জানলার পাশে রাখতে পারেন বাঁশের ল্যাম্প সেট।
বাঁশের তৈরি পাত্র টেবিলের উপর রাখতে পারেন। এছাড়া ফুলদানিতেও থাক বাঁশের ছোঁয়া। দেওয়ালেও বাঁশের কোনও হ্যাংগিং শো–পিস রাখতে পারেন। এতে আপনার ঘরের সৌন্দর্য যে একেবারেই বদলে যাবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
জানলায় কাপড়ের পর্দা টাঙাতে সকলেই দেখা যায়। তবে বাঁশ বা বেতই কিন্তু কাপড়ের পর্দার জায়গা কেড়ে নিতে পারে নিমেষে। তার ফলে আপনার নতুন ফ্ল্যাটের জানলায় আসবে একেবারে অন্যরকম লুক।
খাবার টেবিলে প্লাস্টিকের বদলে ব্যবহার করুন কাঠ বা বেতের কভার। এতে আপনার ডাইনিং টেবিল হয়ে উঠবে এক্কেবারে অন্যরকম। যা সকলেরই ভালো লাগবে।
বসার ঘরে গাছ সাজাই প্ল্যান্টার বাস্কেটে। ঘরের ভেতর বা বাহিরে রাখা ছোট বা মাঝারি আকৃতির ফুল বা পাতাবাহার গাছের টব দড়ি বা পাটের ঝুড়িতে রাখা এখন বেশ ট্রেন্ডি। প্লাস্টিকের রঙিন পট বা মাটির টবে থাকা গাছগুলো আরও সুন্দর দেখাতে ব্যবহার করতে পারেন বেত, দড়ি বা পাট দিয়ে বানানো বাস্কেট। বাস্কেটের সাইজ কেমন হবে তা নির্ভর করবে আপনার বাসায় থাকা প্ল্যান্টস বা গাছের টবের আকৃতির উপর। কাজটা খুবই সহজ, মাটির টব বা পাত্রটি প্ল্যান্টার বাস্কেটে রেখে পছন্দমতো জায়গায় সাজিয়ে রাখুন, চাইলে হ্যাং করে বা ঝুলিয়েও রাখতে পারেন ছোট গাছগুলো।
বসার ঘরে অনেকেই বই রাখতে পছন্দ করেন, আর বই রাখার জন্য প্রয়োজন বুকশেলফ। বুকশেলফে বই রাখার বরাবরের নিয়ম পাল্টে নতুন নিয়মে অর্থাৎ মাঝারি বা বড় বাস্কেট নিয়ে এর মধ্যে ফাইল, বই, ম্যাগাজিন ভাগে ভাগে নাম লিখে রাখলে তা দেখতে অনেক বেশি সাজানো দেখাবে। জায়গাটা আরেকটু সুন্দর করে তুলতে ফোকাস লাইট অথবা ল্যাম্প এবং ছোট ধরনের গাছ রাখলে তা দেখতে আরও সুবিন্যস্ত দেখাবে।
ডুপ্লেক্স বাসাগুলোর সিঁড়ির কোণে বাস্কেট রেখে সেখানে প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন ছাতা, পত্রিকা বা ম্যাগাজিন অথবা ড্রাই ফ্লাওয়ার এর স্টিক রাখা যেতে পারে। এতে একদিকে ডেকোরেশন করা যেমন হবে, তেমনি বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ছাতা কিংবা পত্রিকা হাতে নিয়ে বের হতে পারবেন খুব সহজেই। ছাতা না নিয়ে বের হওয়ার ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে অনেকাংশেই। বাস্কেট বা ঝুড়ি হতে পারে বিভিন্ন সাইজ এবং আকৃতির। গোলাকার, ওভাল শেপ, লম্বাটে কিংবা চ্যাপ্টা ধরনের। প্রয়োজন ভেদে বাসার কোন অংশের জন্য বাস্কেট নিচ্ছেন, তা ভেবে কিনলে ঘরে রাখলে তা দেখতেও বেশ ফ্যাশানেবল দেখাবে।
দেখতে সুন্দর সঙ্গে বাঙালিয়ানা তুলে ধরতে বাঁশের তুলনা নাই। তাই বসার ঘরের সৌন্দর্য ফুটে উঠুক বাঁশের সাজে।