Skip to content

৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেছনের জরাজীর্ণ মুছে স্বাগতম নতুন বছর

মহাজাগতিক নিয়মে প্রতিদিন সকালে পূব আকাশে সূর্য উঠে সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে অস্ত যায়। শুরু হয় একটি নতুন দিন, সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় সন্ধ্যায় তা আবার শেষ হয়ে যায়। এভাবেই দিন যায়, দিনের পরে মাস যায় এবং বারো মাস পরে আবার নতুন বছর আসে। 

 

একটি বছরে কত হাসি-কান্না, দুঃখ-কষ্ট, পাওয়া- না পাওয়া, কতো রকমের স্মৃতি জড়িয়ে থাকে তা বলে শেষ করা যাবেনা। বছরের শুরু জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে একেবারে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৬৫ দিনে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে থাকে আমাদের জীবনে। শত কিছুর পরও মানুষ ঘুরে দাঁড়ায় নতুন উদ্যমে। অপেক্ষা করে একটি নতুন বছর, নতুন প্রহর, নতুন সূর্যের। পেছনের সমস্ত জরাজীর্ণকে ধুয়ে মুছে স্বাগতম জানায় নতুন বছরকে। 

 

নতুন বছর মানেই আনন্দের ধারা। নতুন বছরে সবকিছু নতুন করে শুরু করবে এই প্রত্যাশা সকলের। ব্যক্তিজীবনে নতুন বছরে নিজের জীবনকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখে মানুষ। ব্যবসায়ীরা নতুন করে ব্যবসার পরিকল্পনা করে। চাকুরীজীবীরা নতুন স্বপ্নের বীজ বোনে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ছাত্রের আগমনে মুখরিত হবে চারদিক এমনটা প্রত্যাশা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের। নতুন বই পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হবে শিক্ষার্থীরা। এমনই নানান কিছু অপেক্ষমাণ থাকে নতুন বছরের জন্য। এই যে একটি বছরের পাওয়া না পাওয়া আরেকটি বছরের অপেক্ষা এ যেনো সব মানুষের প্রাণের সাথে মিশে থাকা না বলা কথা। 

 

নতুন বছরের অপেক্ষায় থাকে অনেক কিছু। আবার নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বিভিন্ন দেশ, বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় একেক রকম অনুষ্ঠানের। ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ৩১ ডিসেম্বর রাতে অনুষ্ঠিত হয় নানান ধরণের অনুষ্ঠান। পারিবারিক পার্টি, সঙ্গীতানুষ্ঠান, পারিবারিক মিলন মেলা, ফানুস উড়ানো থেকে শুরু করে নানান ধরণের আয়োজনে মুখরিত থাকে চারদিক। পুরাতন বছরের সমস্ত ব্যর্থতা, গ্লানি, দুঃখ-কষ্টকে পেছনে ফেলে অধীর আগ্রহে থাকে নতুন বছরকে বরণ করার জন্য। ফুলের দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো থাকে নানান ফুল। ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে আর যাই হোক অন্তত একটা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় প্রিয়জনদের। বড় বড় কনসার্টের আয়োজন করা হয় বছরের শেষদিন। বছরের শেষ দিনের সূর্যাস্তও যেনো জানিয়ে দেয় এ বছরের জন্য আজকেই আমার শেষ অস্ত যাওয়া, নতুন ভোরের অপেক্ষা করো। চারদিকের পরিবেশে একটা থমথমে ভাব বিরাজ করে। বিদায়ের চিহ্নটুকু উপলব্ধি করা যায়। তবে এ বিদায়ের পেছনেও লুকিয়ে থাকে নতুন কিছু পাওয়ার। 

 

সারাদিনের রোদ যেনো জানিয়ে যায় কাল থেকে আমি নতুন করে আলো ছড়াবো। গাছের পাতা বলে নতুন বছরে আমি নতুন করে সাজবো। নদীর পানি কলকলিয়ে বলে উঠে এইতো এ বছর আমার শেষ ঢেউ খেলানো, সামনের বার নতুন রূপে হাজির হবো। সাধারণ মানুষ বলে যাক জরাজীর্ণতায় এ বছরটা কেটেছে কাটুক সামনের বছরটা যেনো অন্তত ভালো কাটে। কৃষকের প্রত্যাশা এ বছর কাঙ্ক্ষিত ফলন না পেলেও নতুন বছরে পেতে পারি। রাস্তার মোড়ে মোড়ে প্রতিটি চায়ের দোকানেও পুরাতন বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর কথা শোনা যায়। 

 

একটা বছরে একটা পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের অনেক হাসি কান্না জড়িয়ে থাকে। হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার মধ্য দিয়ে চলে যায় প্রতিটি বছর। গেরস্থ বউ বলেন, এইতো সেদিন বছর শুরু হলো দেখতে দেখতেই শেষ! থেকে যায় কতো না বলা কথা, থেকে যায় কতো না দেখা নানান রূপ বৈচিত্র্য। বছরের শেষ দিনের সূর্যটা জানিয়ে দেয় এইতো আর কিছুক্ষণ, তারপর আমি তোমাদের কাছ থেকে বিদায় নেবো। তোমাদের জন্য আসছে নতুন একটি ভোর। নতুন বছরে নতুন সূর্যের আলোয় আঁধারের চাদর সরিয়ে উন্মোচিত হবে নতুন একটি ভোর। যে ভোরে পাখি গাইবে নতুন করে, নতুন সুরে। প্রজাপতিরা নতুন ফুলে ফুলে উড়বে। বাগানে নতুন কুঁড়ি ধীরে ধীরে ফোটবে। নদীর স্রোতের ধারা নতুন বছরে কলকল করে উঠবে। নতুন বছরে সব কিছু নতুন ভাবে শুরু করবে। নতুন ভোর, নতুন সূর্য, এক চিলতে রাঙা আলোয়, পেছনের জরাজীর্ণতা ভুলে স্বাগতম হে নতুন বছর।
 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ