Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিবাহিত মেয়েদের হলে থাকার বিধিনিষেধ বাতিলের দাবী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবাহিত মেয়েদের হলে থাকার বিধিনিষেধ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্য বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের একজন ছাত্রীকে বিবাহিত হবার কারণে হল প্রশাসন দ্বারা হেনস্তার অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে এলে এ বিষয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক স্ট্যাটাস তুলে ধরা হলো: 

 

আজকের দিনের ঘটনাগুলো উল্লেখ করি। গর্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত ছাত্রীদের কিভাবে ট্রিট করা হয় সেটা সবার জানা দরকার আছে।

 

বিবাহিত মেয়েদের হলে থাকার বিধিনিষেধ বাতিলের দাবী

গতকাল একবেলা অপেক্ষা করেও ভিসি স্যারের সাথে দেখা করতে পারিনি। আজকে সকালে দেখা করবার কথা ছিল। সকালে যেয়েও স্যার মিটিং এ থাকায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর দেখা পাই স্যারের, এক মিনিটও কথা বলার সুযোগ হয়নাই। স্যার বিরক্তির সাথে কম করে হলেও তিনবার জিজ্ঞাস করে আমরা কে। আমরা পরিচয় দিয়ে বলি যে বিবাহিত ছাত্রীদের যে হলের সিট কেটে দেয়া হয় এই নিয়ম বাতিল করতে হবে। স্যারের অভিব্যক্তি দেখে মনে হয় তিনি নিজেও বোধহয় অবগত ছিলেন না বিবাহিত ছাত্রীদের সিট যে কেটে দেয় হল প্রশাসন। স্যার অত্যন্ত তাড়াহুড়োর মধ্যেও বলেন আমাদের দাবিটি যৌক্তিক, তিনি দেখবেন। আমি তখন স্যারকে জিজ্ঞাস করি আমরা আবার আসব কিনা যেহেতু বিস্তারিত শোনার সময় স্যারের ছিল না। স্যার অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে ধমক দিয়ে আমাকে জিজ্ঞাস করেন আমি আবার কেন আসব। 

বিবাহিত মেয়েদের হলে থাকার বিধিনিষেধ বাতিলের দাবী

 

এরপর বিকেলে আবার যায় মেয়েরা। প্রায় ঘন্টাখানেক বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় তাদের এবং অফিসের স্টাফদের দ্বারা চরমভাবে হেনস্তা হতে হয়। এরপর স্যারের দেখা পাওয়া যায়। মৈত্রী হলের একটা মেয়ের হাতে শাঁখা-পলা দেখেই তৎক্ষণাৎ তার হলের সিট কেটে দেয়। মেয়েটাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্যারের কাছে। আমাদের হলের মেয়েটাকে নিয়ে যাওয়া হয়। স্যার বলেন নিয়ম যেটা আছে-রিভাইস না হওয়া পর্যন্ত সেটা চলবে। হল কমিটি, ডীন কমিটির মিটিং ছাড়া কোন কিছু পরিবর্তন হবে না। মেয়েদেরকে অস্থিরচিত্ত হতে নিষেধ করা হয়। স্যারের কাছে যখন জিজ্ঞাস করা হয় তাহলে বিবাহিত মেয়েটা যাবে কই-স্যার উত্তর দেন সেটা ও ভালো জানে ও কই যাবে। স্যার আরও বলেন নিয়ম যেটা আছে সেটা থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় সবার আবাসন তো দিবে না। যারা নিয়ম জেনেই আছে তারা সিট কেটে দিলে চলে যাবে। আমাদের পক্ষ থেকে আরও দাবি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক নিয়ম আছে যা ২০২১ সালের সাথে যায়না। সেগুলো সব রিভাইস করতে হবে। নিয়মের ফর্দ এবং আমাদের দাবি এটাচ করে দিয়েছি ছবিতে। তখন স্যার উত্তর দেন দেখতে হবে।
 
এবং স্যারের শেষ কথা ছিল – "কিছু লোকের হঠকারী মাথার চিন্তায় যেকোনো কিছু করা যাবে না" এখন কথা হচ্ছে, উমুক ক্লাবের বরাদ্দ বাড়ানো, উমুক প্রোগ্রামের টাকার চেকে সাইন, তমুক স্যারের পিএইচডির ফেলোশীপ সংক্রান্ত বিষয়, তমুক লোকের বিয়ের দাওয়াত, তমুক কার্ড, তমুক সংগঠনের দাওয়াত- সবকিছুই তো ঠিক আছে। হলের আবাসিক ছাত্রীদেরকে এমনভাবে কেন ট্রিট করবে যেন তারা অছ্যুৎ??? কেন তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার ফুরসতটুকু হবে না??? কেন একটা মেয়েকে হল থেকে বের করে দেয়ার মতন একটা বিষয় তমুক দাওয়াত, তমুক কার্ডের তুলনায় কোনো প্রায়োরিটিই পাবে না???

বিবাহিত মেয়েদের হলে থাকার বিধিনিষেধ বাতিলের দাবী

 

ছেলেদের হলে চাকরি হয়ে যাবার পরেও, বিয়ে করে সন্তানের বাপ হয়ে যাবার পরেও আদু ভাইরা বছরের পর বছর হলের সিট দখল করে থাকে। পাঁচ বছর আগে  মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া কমিটির ন্যাতারা রুম দখল করে ক্যাম্পাসে আয়েশ করে বেড়ায়, একটিমাত্র রাজনৈতিক দলের পলিটিক্যাল সুবিধাভোগী ছাত্রীরা বছরের পর বছর রাজার হালে হলে থেকে যায়, বিবাহিত হলেও তোষিত হয়- তাহলে বাকি ছাত্রীদের বেলায় এই বৈষম্য কেন হবে??? ওদের বেলায় এই বস্তি প্রশাসনের অওকাত কই যায়???

 

নিয়মাবলীতে কোথাও লেখা নাই বিবাহিত হলে সিট কেটে দিবে। তবুও যে বছরের পর বছর বিবাহিত মেয়েদেরকে ছাত্রী হলের প্রশাসন যেভাবে চাপ সৃষ্টি করে হল ছাড়তে বাধ্য করেছে, যেভাবে আমার হলের ফার্স্ট ইয়ারের মেয়েটাকে বলা হয়েছে যে তার বিবাহিত কাজিন হল ছাড়লেই কেবলমাত্র সে হলে উঠতে পারবে – তা কেন অবৈধ হবে না এবং এই অপরাধের জন্য কেন জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চাই।

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ