ঘিয়ের উপকারিতা
ঘি খাবারের স্বাদকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। আমাদের আশে পাশে এরকম অনেক মানুষ ই আছে, যারা ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে ঘি খেতে চায় না। তবে আপনারা জেনে অবাক হবেন, ঘি কখনই ওজন বাড়ায় না বরং ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়াও ঘি তে আছে অনেক উপকারিতা।
ভারতের পুষ্টিবিজ্ঞানী রুজুতা দিয়াকর বলেন, ঘি খেলে মোটেই ওজন বা কোলেস্টেরল বাড়ে না। বরং ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেশারের মতো জটিল সমস্যা গুলো কমে যায়। তাই প্রতিদিন ডায়েটে অর্থাৎ সকালে, দুপুরে, বিকেলে বা রাতে খাবার পাতে ঘি থাকলে, এই সমস্যা গুলো ছাড়াও নানান সমস্যার সমাধান হবে। যেমন- হৃদরোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য, হজমের সমস্যা, ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম কমবে ঘি খেলে।
ঘি এর উপকারিতা
আর্থ্রাইটিস দূরে থাকে, খালি পেটে ঘি খেলে শরীরে বিশেষ কিছু উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা একদিকে যেমন জয়েন্টের সচলতাকে বাড়িয়ে তোলে, তেমনি ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে। ফলে আর্থ্রাইটিস ও হাড়ের যেকোনো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। ঘিয়ে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শরীরের গঠন ঠিক রাখতে ভূমিকা পালন করে।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
খালি পেটে ঘি খেলে শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টেরলকে একেবারে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ফলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে
মস্তিষ্ক সচল রাখতে উপকারী ফ্যাটের প্রয়োজন পরে। ঘিয়ে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যাসেনশিয়াল ফ্যাট, যা মস্তিষ্কে সেলের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ঘিয়ে উপস্থিত প্রোটিন মস্তিষ্কে থাকা নিউরো ট্রান্সমিটারকে কাজ করতে সাহায্য করে, যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তির বৃদ্ধি ঘটে।
উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ
ঘিয়ে রয়েছে কে২ এবং সিএলএ নামক দুটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান বের করে দিয়ে ক্যান্সারের সৃষ্টির আশঙ্কাও কমায়।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঘিয়ে থাকা মিডিয়াম চেন ফ্যাটি অ্যাসিড, শরীরে জমে থাকা ফ্যাট কে গলাতে সহায়তা করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে
প্রতিদিন খালি পেটে ঘি খেলে শরীর ভিতর থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে ত্বকের ভেতরে কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। যার ফলে ত্বকের সৌন্দর্যও বেড়ে যায়। এছাড়া প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে, হাতে সামান্য ঘি নিয়ে কিছু সময় মুখে হালকা ম্যাসাজ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললেও ত্বকের শুষ্কতা দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
এছাড়াও নিয়মিত ঘি খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। যে কোন ধরনের শারীরিক ক্ষত দ্রুত সেরে ওঠে। দুপুরে ভাতের সাথে ঘি খেলে পেট ভরা থাকে অনেকক্ষণ। ফলে বিকেলে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার ইচ্ছেটাও আস্তে আস্তে কমে যায়। রাতে নিয়মিত ঘি খেলে ঘুম ভালো হয়। নিয়মিত ঘি খেলে লিপিড প্রোফাইল কমে। গুড কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে। তবে প্রত্যেকের উচিত প্রতিদিন ৩-৬ চামচ ঘি খাওয়া।