Skip to content

৭ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারী হাফেজ শামসুন্নাহার ও তার মেয়েরা

মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক কেরাত প্রতিযোগিতায় ৭ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন হাফেজা কারিয়া শামসুন্নাহার সিদ্দিকা। ২০০৪ সাল থেকে টানা ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি বজায় রেখেছেন চ্যাম্পিয়নশিপের ধারা। সর্বশেষ ২০১৬ সালে। এর আগে ১৯৯৮ সালে হয়েছিলেন দ্বিতীয়। ইরানেও গিয়েছেন একবার।

 

শামসুন্নাহারের এই সফলতা কিন্তু একদিনে আসেনি। ১০ বছর বয়সে তিনি প্রথম হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় জাতীয় পুরস্কার পান। ১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে ও আরেকটি ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে।  তার বাবা মাওলানা শরাফত উল্লাহ খুব করে চাইতেন, মেয়ে তার আন্তর্জাতিক কেরাত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করুক। কিন্তু ১৯৯০ সালে আন্তর্জাতিক কেরাত প্রতিযোগিতায় যেতে চান তিনি। কিন্তু বয়স স্বল্পতার কারণে তার অনুমতি মেলেনি।

 

কিন্তু তাই বলে থেমে থাকেননি তিনি। বিয়ের পর তাকে আরেকটু এগিয়ে দিলেন তার স্বামী ডাক্তার মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম। স্বামীর অনুপ্রেরণায় দেশের সীমানা পেরিয়ে তখন স্বপ্ন পূরণ করতে যান বিদেশের মাটিতে। তারপর থেকে একের পর এক সফলতার মুখ দেখতে থাকেন।

 

বিশ্বজয়ী হাফেজা শামসুন্নাহার বলেন, ‘শেরপুর থেকে ঢাকায় এসে তেজগাঁও রহমতে আলম মিশন মাদ্রাসায় পড়াশোনা করি। মূলত এখানে হেফজ শুনাই। পাশাপাশি অন্যদের মশকও করাতাম। বিয়ের পর কিছুদিন এখানে শিক্ষকতা করেছি। তারপর চলে এসে নিজে একটি মাদ্রাসা দিই। মাদ্রাসার বয়স ২৭ বছর।' 

 

শামসুন্নাহারের চার মেয়ে। মেয়েদের সবাইকে তিনি নিজেই হাফেজা বানিয়েছেন। তারা হলেন- হাফেজা ফাতিমাতুজ জুহরা মারিয়া, হাফেজা কারিয়া খাদিজাতুল কুবরা উলফাত, হাফেজা কারিয়া আয়েশা সিদ্দিকা, হাফেজা ফাবিহা বুশরা আরাবিয়া।

 

হাফেজা আয়েশা সিদ্দিকা পাঁচ বছর বয়সে ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জাতীয় পুরস্কার পায়। সে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় যেতে চেয়েছিল। বয়স স্বল্পতার অজুহাতে অনুমতি মেলেনি। ২০১৮ সালে বয়স পার হলেও পাসপোর্ট জটিলতায় তার ইরান যাওয়া অনেকটাই আটকে যায়। অবশ্য বহু কাঠখড় পড়ানোর পর যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল তার। ইরান থেকে নিয়ে এসেছিলেন চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার। সর্বশেষ ২০১৯ সালে দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হন। কিন্তু করোনার প্রকোপে আর যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তার বড় বোন খাদিজাতুল কুবরা ২০২০ সালে ইরান আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। করোনার প্রকোপে তাও থমকে গেছে।

 

আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘রমজানে এখন নামাজে বেশি তিলাওয়াত করি। প্রতিদিন জোহর নামাজে যে দুই পারা তিলাওয়াত করি, সেই দুই পারা আসর, মাগরিব, এশা ও তাহাজ্জুদেও তেলাওয়াত করি। ফলে একদিনে এই দুই পারা পাঁচবার তিলাওয়াত হয়। পুরো রমজানে নামাজেই হবে ১০ খতম।’

 

খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ‘কুরআন তিলাওয়াত আমার নেশা হয়ে গেছে। দৈনিক পাঁচ পারা কাউকে না শুনালে আমার ভালোই লাগে না।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ