Skip to content

১০ই জুন, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২৭শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শীতের আগমন হোক পিঠার সাথে

বাঙালির আদি খাদ্য সংস্কৃতির একটি বড় অংশ হল পিঠা। বাংলা ক্যালেন্ডারে পাতায় পৌষ মাস মানেই শীতকাল শুরু আর সেই সাথে শুরু হয় শহর এবং গ্রামে পিঠা উৎসব। ঘরে তোলা অগ্রহায়ণের নতুন চাল দিয়ে তৈরি হয় শীতের পিঠা। 

এদেশে শতাধিকের বেশি পিঠার প্রচলন রয়েছে। প্রাচীন অনেক পিঠার প্রচলন বর্তমানে আর নেই। কিন্তু বর্তমানে আবার ভিন্ন আঙ্গিকে নতুন করে পরিবেশিত হচ্ছে তা প্রাচীন প্রচলনের অবার কিছুটা হলেও দূর করছে। আমাদের দেশে একেক অঞ্চলের একের পিঠার বৈশিষ্ট্য একেক রকম। তবে শহরের থেকে গ্রামের পিঠা উৎসব বেশ জাঁকজমক ভাবে হয়। ঘরে ঘরে বাংলার নারীরা ভিন্ন ভিন্ন নকশা ও ছাঁচে পিঠা তৈরি করেন। শহরের অলিগলিতে, রাস্তার আশেপাশে পিঠার দোকান বসে। আবার অনেক সময় বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসবের। 

এদেশে ১৫০ ধরনের বেশি পিঠা থাকলেও মোটামুটি ৩০ ধরনের পিঠা বেশি প্রচলিত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, নকশি পিঠা, পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, কাটা পিঠা, সিদ্ধপুলি, রুটি পিঠা ইত্যাদি। বেশি প্রচলিত কয়েকটি পিঠার ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

ভাপা পিঠাঃ শীতকালের অন্যতম জনপ্রিয় পিঠা হল ভাপা পিঠা। নুন ছাড়া তরকারি এবং ভাপা পিঠা ছাড়া শীতকাল একই কথা। মূলত ভাপ দিয়ে তৈরি করা হয় বলে এই পিঠার নাম ভাপা পিঠা। এর মূল উপকরণ চালের গুঁড়া, নারকেল, খেজুরের গুঁড়। 

নকশি পিঠাঃ ছাঁচ দিয়ে বিভিন্ন নকশা আঁকা হয় বলে এগুলোকে নকশি পিঠা বলে। প্রথমে চালের গুঁড়া বা আটা সিদ্ধ করে মন্ড তৈরি করা হয়। এর উপর মাটি, কাঠ বা ধাতুর তৈরি ছাঁচ দিয়ে মাছ, গাছ, লতাপাতা, ফুল ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের নকশা করে তৈরি করা হয় নকশি পিঠা। 

পাটিসাপটাঃ হালকা বাদামি অথবা সাদা রঙের এই পিঠা তৈরি কথা হয়। এর ভেতর থাকে নারিকেলের পুড় অথবা ক্ষীর। শীতকাল ছাড়াও বিভিন্ন উৎসবে তৈরি করা হয় এই পাটিসাপটা। 

চিতই পিঠাঃ চালের গুঁড়া দিয়ে তৈরি এই পিঠা বিভিন্ন ধরনের ভর্তা দিয়ে খাওয়া হয়। বিশেষ করে ধনিয়া, সরিষা এবং শুটকি ভর্তা দিয়ে বেশি খাওয়া চল রয়েছে। আবার এই পিঠা দুশ বা গুড়ের সরে ভিজিউএ তৈরি করা হয় দুধ চিতই বা রস পিঠা। 

বেশিরভাগ পিঠার স্বাদই মিষ্টি, তবে কিছু ঝালপিঠাও রয়েছে। এসকল পিঠার নামে রয়েছে বিশেষত্ব, যেমন গোলাপ ফুলের আকারে তৈরি হয় গোলাপ পিঠা, নকশা দিয়ে তৈরি করা হয় নকশি পিঠার মত আরও নানা পিঠা। 

এদেশের প্রচীন সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে পিঠা-পুলির ঐতিহ্য, শীতের সকালে কুয়াশার মাঝে খেজুরের রস আর গরম গরম পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। শহরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বড় করে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। তবে কালের বিবর্তনে এই ঐতিহ্য হারাবার পথে। তাই আমাদের প্রতি শীতে এধরনের পিঠে উৎসবের আয়োজন করা উচিৎ যাতে হারাতে না পারে বাংলার এই ঐতিহ্য।

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ