বিয়ের বাজারে বাড়ছে প্রযুক্তির প্রভাব
মহামারীকালে প্রযুক্তি বিয়ের সিদ্ধান্তকেও পিছিয়ে দিতে পারবে না। হয়তো শারীরিক উপস্থিতি দিয়ে আপনার বিয়েকে সৌন্দর্যমন্ডিত করে তুলতে পারবে না আপনার কোন শুভাকাঙ্ক্ষী কিংবা আত্মীয় স্বজন। কিন্তু প্রযুক্তি তাদের একেবারে দূর করে দিবেনা। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম, ভিডিও কনফারেন্সিং, গুগল হ্যাং আউট, ফেসবুক লাইভ, ইনস্টগ্রাম লাইভ, জুম আপনার বিয়ের আনন্দ ছড়িয়ে দিবে আপনার শুভার্থীদের মধ্যে।
ওয়েডিংওয়াইর বলছে, প্রতি চারজনের একজন এখন অনলাইনে নিজের প্রিয়জনের সাথে কথা-বার্তা সারছে। তবে হাইটেক ওয়েডিং প্রতি চারজনের একজনে এখনো পৌঁছায়নি। পৌছাতে আর কতক্ষণ। করোনা ভাইরাস যেভাবে আমাদের ঝেঁকে ধরেছে হয়তো এমন জায়গায় পৌঁছে যাবো আমরা।
অতিথিদের আমন্ত্রণ
অফলাইন বিয়েতে অতিথিদের নিকট দাওয়াত পৌঁছানো খুবই কষ্টকর। সম্ভাব্য অতিথিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কার্ড পৌঁছে দেয়া খুবই সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টকর। হাইটেক বিয়েতে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো খুব বেশী কষ্টকর নয়। এখানে সবচেয়ে সহজ উপায় হলো অতিথিদের ই-ভাইট কিংবা ই-মেইলের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। প্রয়োজনে আপনার বিয়ের একটা টেইলর করে রাখতে পারেন। পরবর্তীতে ই-মেইলে তা পাঠাতে পারেন। প্রথমে আপনি আপনার বিয়ের বার্তা পাঠিয়ে দিবেন। তারপর অনলাইনে তাদের জন্য কি কি সুযোগ-সুবিধা থাকছে সেসব দিবেন। সর্বশেষ জুম লিঙ্ক পাঠিয়ে দিবেন এবং নিশ্চিত হয়ে নিন তারা লিঙ্কে প্রবেশের পর সংযুক্ত হতে পারবেন কিনা।
অনুষ্ঠান শুরু
বিয়ের অনুষ্ঠানে যাদের লিঙ্ক পাঠাবেন তাদের সবাই আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে মনে রাখতে হবে সঠিক সময়ে আপনাকে লিঙ্কে ঢুকে যাবতীয় কাজ শেষ করতে হবে। কন্টেন্ট এবং টাইমিং সবকিছু আপনার পরিকল্পনা মাফিক হতে হবে। বর-কনে, প্রযুক্তির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা সহ গুরুত্বপূর্ণ মানুষজন অনুষ্ঠান শুরুর ১০ মিনিট পূর্বে প্রবেশ করতে হবে। বাকীরা সবাই ওয়েটিং রুমে অবস্থান করবে। অনুষ্ঠান শুরুর সময়ে সবাই নিজের মতো করে অংশগ্রহণ করবে। অনুষ্ঠান শুরুর পর সবাইকে মিউট করে দিতে হবে। এবং প্রযুক্তির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দিবে। এতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হতে পারবে।
করোনায় বিয়ের বাজারে প্রভাব
বিয়ে ভিত্তিক সাইট ব্রাইডসের তথ্যানুযায়ী, বিয়ে নিয়ে ৮১ শতাংশ মানুষের প্রত্যাশা করোনা পরিস্থিতি পরিবর্তন করে দিয়েছে। ৮২ শতাংশ মানুষ বিয়ে করাটাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন। করোনায় বিয়ে স্থগিত চান ৬৬ শতাংশ মানুষ অন্যদিকে ৩৪ শতাংশ মনে করে বিয়ে করে ফেলা উচিত।
বিয়ের বাজারে প্রযুক্তি
ব্রাইডস তার জরিপে বলছে, ৯৪ শতাংশ বিবাহে প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষ। ৮০ শতাংশ মানুষ নিজের বিয়ের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে। ৬৭ শতাংশ মানুষ বিয়ের বাজার করতে অ্যাপ ব্যবহার করে। ২৭ শতাংশ বিয়েতে ই-আমন্ত্রণ পাঠায়। ২৬ শতাংশ তাদের বিয়েতে ফটোগ্রাফির জন্য উচ্চ-প্রযুক্তির ক্যামেরা ব্যবহার করে। ৫ শতাংশ নিজের বিয়ে জুমের মতো অ্যাপ লাইভ করে। ৪ শতাংশ মানুষ চার্জিং স্টেশনের ব্যবস্থা করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিয়ে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিয়ের ঘটনা কেমন মাতামাতি হয় তা নিয়েও জরিপ চালিয়েছে ব্রাইডস। তাদের তথ্যানুযায়ী, ২৩ শতাংশ যুগল তার সঙ্গীর সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রথম কথা বলে। ৮২ শতাংশ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, পিন্টারেস্ট ব্যবহার করে বিয়ের উৎসাহ পায়। বিয়ের কেনা কাটার জন্য ৬০ শতাংশ তরুণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে উৎসাহ পায়। ব্যতিক্রমী মাত্র ৯ শতাংশ, তারা তাদের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না দিতে বন্ধুদের অনুরোধ জানায়।