Skip to content

২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার তৈরি হচ্ছে ঝিঁঝিঁ পোকা দিয়ে পিৎসা

পরিবেশের ওপর মাংসের কুপ্রভাব ও বেড়ে চলা জনসংখ্যার প্রোটিনের চাহিদার সমাধানসূত্র হিসেবে পোকার কদর বেড়ে চলেছে। ইটালিতে ঝিঁঝিঁর ময়দা মিশিয়ে পিৎসা তৈরির চেষ্টা চলছে।

এক খামারে হাজার হাজার ঝিঁঝিঁ পোকা পালন করা হচ্ছে। সেগুলি পিৎসার টপিং হিসেবে শোভা পাবে। কারো কাছে সেটা একটা দুঃস্বপ্ন মনে হলেও কার্লো দেল বুয়োনো ও জোসে চানির মতে, সেই ব্যবসার ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল৷ নিউট্রিইনসেক্ট ক্রিকেট ফার্মের চানি বলেন, ‘‘এই ঝিঁঝিঁ পোকাগুলির আজই জন্ম হয়েছে৷ জীবনের প্রথম দিন! প্রথম তিন বছরের গবেষণার ফল হিসেবে আমরা প্রতিটি প্লাস্টিকের আধারের জন্য ঝিঁঝিঁপোকার নির্দিষ্ট পরিমাণ নির্ণয় করতে পেরেছি৷ কারণ পোকাগুলি জীবনের প্রথম থেকে শেষ দিন পর্যন্ত সেখানেই থাকবে৷”

ইটালির কেন্দ্রভাগে মন্টেকাসিয়ানোয় এক পুরানো গুদামে জোসে চানি এক বন্ধুর সঙ্গে নিউট্রিইনসেক্ট নামের স্টার্টআপ কোম্পানি খুলেছেন৷ জার্মানি থেকে ১০,০০০ ঝিঁঝিঁ পোকা আমদানির মাধ্যমে সেই অ্যাডভেঞ্চার শুরু হয়েছিল৷ সেটাই ছিল বিদেশ থেকে প্রথম এবং শেষ আমদানি৷ তখন থেকেই ক্রিকেট ব্রিডিং প্রক্রিয়া চলছে৷ জোসে চানি বলেন, ‘‘এই আধারে প্রায় দশ হাজার ক্রিকেট রয়েছে৷ অর্থাৎ সেটা দিয়ে আমরা এক কিলো ক্রিকেট ময়দা তৈরি করবো৷ তার মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ প্রোটিন৷ প্রতি কিলোগ্রাম ক্রিকেটের জন্য মাত্র পাঁচ লিটার পানির প্রয়োজন হয়৷ মনে রাখতে হবে, এক কিলো গরুর মাংসের জন্য পনেরো হাজার লিটার পানি লাগে৷”

পিৎসার টপিং ঝিঁ ঝিঁ পোকা
জোসের মতে, এভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম চালানো হচ্ছে৷ তিনি মাসে দুই টন ক্রিকেট ফ্লাওয়ার উৎপাদন করেন৷ চলতি বছরের শুরুতেই ইটালি মানুষের খাদ্য হিসেবে ঝিঁঝিঁপোকার ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে৷ এরই মধ্যে চানি অর্ডারের চাপ সামলাতে পারছেন না৷

এই পোকার আয়ু ৩০ দিনের মতো৷ সেই প্রাণীর ঘুমিয়ে পড়া ও মারা যাওয়া পর্যন্ত এক রেফ্রিজরাটর যন্ত্রে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমানো হয়৷ ব্যবসায়ী হিসেবে চানির দাবি, এর ফলে পোকাগুলি বিনা যন্ত্রণায় মারা যায়৷

কাছেরই এক কোম্পানি সেই পোকা গুঁড়া করে ময়দায় রূপান্তরিত করে৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই ধূসর পাউডার কি ইটালির রন্ধনপ্রণালীর পবিত্র জগতে প্রবেশ করতে পারবে? শুরুতে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার আশা করা হচ্ছে৷

রোমের উপকণ্ঠে নিজের পিৎসেরিয়ায় কার্লো দেল বুয়োনো এমন ক্রিকেট পিৎসা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন। প্রচলিত পিৎসার মণ্ডে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ ক্রিকেট ফ্লাওয়ার যোগ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। হাতেনাতে সেই প্রক্রিয়া দেখিয়ে কার্লো বলেন, ‘‘এবার আমি ময়দার তাল বেলে নিয়ে তার ওপর আমাদের ক্রিকেট ফ্লাওয়ার ছড়িয়ে দিচ্ছি। প্রচলিত ডো-এর সঙ্গে ভালোভাবে যাতে মেশে, তার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। আমরা সবজি ও একটু মোৎসারেলা চিজ দিয়ে একটা পিৎসা তৈরি করছি।”

টমেটো সস, মোৎসারেলা ও নানা ধরনের সবজি এবং অল্প ক্রিকেট পাউডার। এখনো সেই উপকরণ বেশ দামী। কারণ এক কিলো ক্রিকেট ফ্লাওয়ারের দাম ৬০ ইউরো। অর্থাৎ এর বৃহত্তর ব্যবহারের জন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে।

অনন্যা/এআই

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ