ডিমের সাতকাহন
ব্যাচেলর জীবন মানেই আগোছালো জীবন। মায়ের হাতের রান্নাগুলোকে ভীষণ মিস করা। এই আলসে জীবনে রান্নায় সময় দিতে চান না ব্যাচেলররা একদমই, পুষ্টিগুণের ব্যাপার মাথায় রাখার কথা তো ভাবাই যায় না! ফলে স্বাস্থ্যহীনতায় ভোগেন তারা।
ডিম প্রোটিনে ভরপুর একটি একটি খাবার। সহজলভ্য পুষ্টির উৎস হিসেবে ডিমের তুলনা কেবল ডিমই হতে পারে। ডিম খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি অল্প সময়ে খুব সহজেই ডিম দিয়ে বানানো যায় নানা রেসিপি।
ডিম সালাদ
উপকরণ
ডিম ৪টা
মেয়নিজ ১/২ কাপ
গোলমরিচ ১ চা চামচ
সবজি পছন্দ মতো (শসা, গাজর, টমেটো)
লবণ স্বাদ মতো
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমেই ডিমগুলোকে ভালোভাবে সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। একটি বাটিতে ডিম এবং সবজিগুলো ছুরির সাহায্যে বেশ মিহি করে কুচি করে কেটে নিতে হবে। এবার মেয়নিজ, গোলমরিচ এবং স্বাদমতো লবণ কুচি করে নেয়া সবজি এবং ডিমের মিশ্রণে হালকা হাতে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হবে ঝটপট ডিমের সালাদ। স্বাদে হালকা টুইস্ট আনতে চাইলে কাঁচা মরিচ এবং টমেটো কেচআপ যোগ করে নিতে পারেন।
এই সালাদটি কিন্তু দুটি পাউরুটির স্লাইসের মাঝে বিছিয়ে নিলেই হয়ে যাবে স্যান্ডউইচ, যা সকালের নাস্তা কিংবা দুপুরের খাবারে আপনার স্বাস্থ্যকর সঙ্গী হতে পারে অনায়াসেই।
ডিমের শাকশুকা
মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় এই রান্না তাদের জন্য, বিশেষ করে যাদের হাতে একেবারেই ডিনার কিংবা লাঞ্চের জন্য সময় কম।
উপকরণ
ডিম ৩টা
তেল ১/৩ কাপ
পেয়াজ কুচি ১/২ কাপ
আদা কুচি ১/২ চা চামচ
রসুন কুচি ১ চা চামচ
টমেটো (কিউব করে কাটা) ২টি
ক্যাপসিকাম ১/২ কাপ
গোটা কাঁচামরিচ ৪/৫টি
মরিচ গুড়ো স্বাদ মতো
হলুদ গুড়ো ১/২ চা চামচ
ধনে গুড়ো ১ চা চামচ
জিরে গুড়ো ১ চা চামচ
লবণ স্বাদ মতো
গোলমরিচ সামান্য
ধনে পাতা সামান্য
প্রস্তুত প্রণালী
প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। পেঁয়াজ সাদাটে থাকা অবস্থাতেই আদা এবং রসুন কুচি দিয়ে নেড়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে টমেটো কিউব ও ক্যাপসিকাম কুচি গুলো দিয়ে দিতে হবে। সেইসঙ্গে ১/৩ কাপ পানি দিয়ে এতে একে একে সবগুলো গুড়ো মশলা এবং স্বাদমতো লবণ দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে-চেড়ে চুলার আঁচ মাঝারি রেখে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে। ৮/১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে ৪/৫টা গোটা কাঁচা মরিচ ছড়িয়ে দিতে হবে যা রান্নায় সুন্দর একটা ফ্লেভার নিয়ে আসবে। এবার প্যানের মাঝে থেকে সবজিগুলোকে সরিয়ে তিনটা গর্ত মতো করে প্রতিটা গর্তে একটা করে ডিম ভেঙ্গে দিতে হবে এবং শুধু ডিমের ওপর হালকা করে লবণ এবং গোলমরিচ ছিটিয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে অল্প আঁচে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রান্না করতে হবে, এর মাঝে কোন অবস্থাতেই ঢাকনা খোলা যাবে না। ঢাকনা খুলে এই পর্যায়ে সামান্য ধনে পাতা কুচি ছিটিয়ে নিলেই তৈরি হবে ডিমের শাকশুকা।
ঝটপট এই রান্না গরম ভাত কিংবা রুটি অথবা পোলাও বা পরোটার সাথেও খেতে চমৎকার।
আলু-ডিমে ডাল
ডাল আমাদের নিত্য দিনের খাবার। একঘেয়ে এই খাবারে ভিন্ন স্বাদ আনতে ডাল ডিম একত্রে রান্না করলে সময় যেমন বাঁচে, তেমনি পুষ্টিগুণের অভাবও মেটে।
উপকরণ
ডিম ৩/৪টি
মসুর ডাল ৩০০ গ্রাম
পেঁয়াজ কুচি ১/২ কাপ
আদা বাটা ১ চা চামচ
রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ
চেরা কাঁচা মরিচ ৬/৭ টি
আলু ৪/৫ টি
ধনে পাতা কুচি সামান্য
লবণ স্বাদমতো
তেল পরিমাণ মতো
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে ডাল খুব ভালোভাবে ধুয়ে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। সেইসঙ্গে ডিম ও আলুও সেদ্ধ করে নিতে হবে অন্য একটি পাত্রে।ডাল সেদ্ধ হয়ে আসলে ঘন ঘন নেড়ে দিতে হবে। ডাল গলে গেলে ফোড়নের জন্য অন্য একটি পাত্রে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দিতে হবে। পেঁয়াজ হালকা বাদামি হয়ে আসলে চেরা কাঁচামরিচ, আদা রসুন বাটা ও লবণ দিয়ে দিতে হবে।ডিম ও আলু সেদ্ধ হয়ে আসলে খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরো করে ডালের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।ফোড়নের সুগন্ধ ছড়ালে ডিম, আলু ও ডালের মিশ্রণ দিয়ে নেড়ে ৭/৮ মিনিটের মতো রান্না করতে হবে। এবার ওপর থেকে সামান্য ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিয়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি হবে মজাদার আলু ডিমে ডাল।
নিয়মিত রেস্তোরার ব্যয়বহুল এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার না খেয়ে ব্যাচেলরদের একটু কষ্ট করে সুস্বাস্থ্যের দিকে পা বাড়াতেই এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। ভালো থাকুক সকল ব্যাচেলর।