সাজে অপরূপা শ্যামা মেয়ে
গায়ের রং শ্যামলা বলে আপনার কি কখনো মন খারাপ হয়? আমাদের অনেকেরই ধারণা দেখতে ফর্সা মানেই সুন্দর। সে ধারণা থেকে অনেকেরই থাকে ফর্সা হওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টা। যার ফলে ফেয়ারনেস ক্রিমের কো€úানিগুলোও হয় ব্যবসায় লালে লাল। যদি আপনার গায়ের রং ঠিক ফর্সা না হয়ে একটু চাপা অর্থাৎ শ্যামলা বা কালো হয়ে থাকে তবে একদমই মন খারাপ করার কিছু নেই। আপনি জেনে খুশি হবেন, ফর্সা ত্বকের চেয়ে শ্যামলা ত্বক অনেক বেশি সুস্থ থাকে। কারণ কালো ত্বকে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি খুব একটা খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে না। কিন্তু ত্বক ফর্সা বা শ্যামলা বড় কথা নয়, বরং সুস্থ-স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও লাবণ্যতাই আসল সৌন্দর্য। শ্যামলা গায়ের রং যাদের, সব ধরনের সাজে তাদের মানায় না। তাই সাজপোশাকের ক্ষেত্রে একটু নজর দিলেই আপনি হয়ে উঠবেন অনন্যা।
কালো হরিণ চোখ
কৃষ্ণকলির ছিল কাজল কালো চোখ। আজকাল আবার বিভিন্ন রঙের ব্যবহার দেখা যায় চোখের সাজে। আজকের শ্যামলবর্ণ মেয়ের বারণ নেই নানান রঙে চোখ সাজানোর বেলাতেও। বিউটি এক্সপার্ট আফরোজা পারভীন জানালেন মেরুন, ফিরোজা, নীল, বারগেন্ডি, তামাটে (কপার) কিংবা মাঝারি শেডের বেগুনি রঙে চোখ সাজাতে পারেন অনায়াসেই। আর আইলাইনারের ক্ষেত্রেও নীল, ফিরোজা, মাঝারি শেডের বেগুনি, একটু গাঢ় সবুজ বা তামাটে রং চলতে পারে। তবে চোখের সাজে কেউ কমলা রং ব্যবহার করতে চাইলে তিনি কমলা রঙের আইলাইনারের সঙ্গে হালকা করে একটু তামাটে রঙের ছোঁয়া লাগিয়ে নিতে পারেন। চোখ সাজাতে কাজল খুব বেশি লাগাবার দরকার নেই। ব্যবহার করুন একদম হালকা করে। আর অ্যাইশ্যাডো লাগাতে চাইলে সোনালি, বারগেন্ডি রং ব্যবহার করতে পারেন। এরপর দিন মাস্কারা। তবে, যাদের শ্যামলা ত্বক তারা লাইনার সরু করে লাগাবেন। খুব বেশি মোটা ভালো লাগবে না। আর চোখকে সাজাবার আগে কমপ্যাক্ট হালকা করে বুলিয়ে নিন চোখের চারপাশে।
ত্বকের যত্ন
ত্বকের রং কালো হলে অনেকেই নিজেকে ঠিকমতো সাজান না। হোক না ত্বক কালো, সঠিকভাবে মেকআপ করলে সবার চোখ থাকবে আপনার দিকে। দিনের বেলা মেকআপ করার সময় হালকা বেজ ব্যবহারেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন অনন্যা।
ত্বক পরিষ্কার করে নিয়ে ফেসপাউডার লাগিয়ে নিলেই হলো। তবে ত্বক যদি শুষ্ক প্রকৃতির হয়, তাহলে ফেস পাউডারের আগে লাগাতে পারেন একটু ময়েশ্চারাইজার। আর রাতের সাজে বেজ হতে পারে একটু ভারি। সোনালি বা তামাটে রঙে এ-সময় মানাবে বেশ। মনে রাখবেন, সাজের প্রথম ধাপ হলো ফাউন্ডেশন। এটাই বেজ মেকআপ তাই একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ত্বকের রঙের সঙ্গে যায় এমন রঙের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা উচিত। ত্বকের রঙের থেকে খুব বেশি হালকা রং নেবেন না। ত্বকের রঙের থেকে এক শেড হালকা রঙের ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। আর ত্বকের রং চাপা হলে ওয়াটার বেজ ফাউন্ডেশন ব্যবহার করাই ভালো।
কৃষ্ণকলির নখের রঙে
বাহারি রঙের নেইলপলিশ রয়েছে বাজারে। তবে এগুলোর মধ্যে থেকে উজ্জ্বল কমলা বা কটকটে গোলাপি রং যদি বেছে নেন, তা আপনার হাতে না-ও মানাতে পারে। গাঢ় রঙের অন্য নেইলপলিশ সহজেই মানিয়ে যাবে হাতে।
ঠোঁটের মেকআপ
আপনার নিজের পোশাক এবং স্কিন টোনের সঙ্গে যায় এমন লিপস্টিক ব্যবহার করুন। যাদের শ্যামলা ত্বক তারা গ্লসি লিপস্টিক লাগাবার পরিবর্তে ব্যবহার করুন একটু ডার্ক শেডের ম্যাট লিপস্টিক। আর ম্যাট এখন বেশ ফ্যাশনেবল। বারগেন্ডি, হালকা পিংক, কফি, চকোলেট এসব রং ব্যবহার করে দেখতে পারেন। চাইলে লিপগ্লস ব্যবহার করতে পারেন। তবে কখনোই খুব হালকা রঙের লিপগ্লস লাগাবেন না।
সবার থেকে আলাদা
বয়স বেড়ে গেলে সব মেয়েই বন্দি হয় সময়ের খাঁচায়। রূপের মোহে যে পাখি দেয়ালবন্দি হয়, তার চোখে কি আর আলো ফুটে? দেয়ালজুড়ে এলিয়ে যাওয়া মেয়ের ছায়া তো কালোই দেখায়, হোক সে যতই রূপালি! তাই গায়ের রং কালো বলে হীন€§ন্যতায় ভুগবেন না। ভেতরের সুন্দরই আপনার আদর্শ, আপনার স্বরূপ। নিজ ফ্যাশনে, সাজ-সুন্দরের অপার মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে উঠুক আজকের কৃষ্ণকলি।
অলংকার-বাহার
উজ্জ্বল সোনালি বা চকচকে রুপার গয়নার চেয়ে অক্সিডাইজড অলংকার আপনার জন্য বেশি ভালো। গাঢ় রুপালি রঙের সঙ্গে কালো রঙের মিশেলে তৈরি গয়নাও বেশ মানানসই। তামাটে রঙের অথবা সোনালি ও তামাটে রঙের মিশ্রণে তৈরি গয়নাও পরতে পারেন।
-ছবি : ফ্রিডম্যান কিন্নাত চৌধুরী
-সাজসজ্জা: পিংক ব্লাস বিউটি লাউঞ্জ