Skip to content

৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেঘালয়ের পাদদেশে এক পাথুরে রাজ্য!

সিলেটের সীমান্ত উপজেলা কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে মেঘালয়ের আকাশছোঁয়া পাহাড়ের পাদদেশে ভাসছে অসংখ্য ছোট ছোট পাথর। আর পাহাড় এর গাঘেঁষে নেমে আসছে স্বচ্ছ ঝর্ণধারা। নয়ন জুড়ানো এই জলধারায় ভাসছে সেই ছোট ছোট অসংখ্য পাথর। জল আর পাথরের মেলবন্ধনই এখন ‘সাদা পাথর’ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছে সিলেটের অন্যতম একটি পর্যটন স্পটে।

শীত-বর্ষা এই দুই মৌসুমেই হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে এই পর্যটন কেন্দ্র। সবার উদ্দেশ্য অপরূপ সুন্দর সেই ‘সাদা পাথর’ দর্শন। সবাই যেন অপূর্ব এক পাথরের রাজ্যে হারিয়ে যেতে চান। প্রতিদিন এখানে অন্তত ৩০ সহস্রাধিক লোকের আনাগোনা। চলুন তবে জানা যাক কিভাবে যাবেন ‘ সাদাপাথর’ এলাকায়, সিলেট থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তরে সড়ক পথে যাওয়া যায় ‘সাদা পাথর’ এলাকায়। তবে সেখানকার ধূলিময় ১০ নম্বর নৌকা ঘাট এলাকা প্রথমে বিরক্তির পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। কারণ ওই স্থানে রয়েছে পাথর ভাঙার অসংখ্য ক্রাশার মেশিন। তাছাড়া ওই স্থানে রয়েছে ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশন। এই পথে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানি হয়। তাই এলাকাটি সব সময় ধূলিময় থাকে।

আশেপাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টগুলোর কথা শুনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে লাভ নেই। এখানেও বিপাকে পরতে হয় পর্যটকদের। নেই ভালো মানের ওয়াশ রুম। আর এ কারণে নারীদের যেন একটু বেশিই ভোগান্তি পোহাতে হয়। এরপর ১০ নম্বর ঘাট থেকে নৌকা করে ২০ মিনিটের দূরত্বে যেতে হয় সাদা পাথর স্পটে।

বহুকাল আগেও জায়গাটি ছিলো অনেকটাই দুর্গম প্রকৃতির । বিগত কয়েক বছরে সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কটি উন্নত হওয়ায় এখন ‘সাদা পাথর’ পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। এছাড়া, গত বছর কয়েক দফা বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে ভারত থেকে প্রচুর সাদা পাথর নতুন রূপে সাজিয়েছে ভোলাগঞ্জকে। দর্শনার্থীদের জন্য করে তুলেছে আরও আকর্ষণীয়।

শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের দর্শনার্থীদের দেখা যায় এখানে। কেউ গরমে হিমশীতল জলে গা ভিজিয়ে ঝিরি ঝিরি স্রোতে আপন মনে ভেসে চলেছে। কেউবা হামাগুড়ি দিয়ে সাঁতার কাটছে। আবার কেউবা টিউবের ওপর ভেসে বেড়াচ্ছে স্রোতের টানে। কেউবা পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা স্ফটিক স্বচ্ছ জলের নিচে নানা রঙের পাথরের খেলা মন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে অথবা ক্যামেরাবন্দি করছে। এছাড়া, নদীতে দেখা যায় পর্যটকবাহী নৌকার মেলা। আর মাঝে মধ্যে সনাতন পদ্ধতিতে নর-নারীর পাথর তোলার দৃশ্য।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্য বলেন, অচিরেই ১০ নম্বর ঘাটে পর্যটকদের থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় সুবিধার লক্ষ্যে অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এর ডিজাইন করা হচ্ছে।

পর্যটকরাও নিশ্চয়ই এমন সুবিধার অপেক্ষায়ই আছেন। তবেই তো ঝামেলাহীনভাবে উপভোগ করতে পারবেন অপরূপ সুন্দর এই ‘সাদা পাথর’-এর সৌন্দর্য।

অনন্যা/এসএএস

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ