‘রিউমাটয়েড নডিউল’ এর চিকিৎসা কী 

বাংলাদেশে বাতরোগে ভোগা মানুষের সংখ্যা কম নয়। এর মধ্যে “রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস” নামের রোগটি অনেকের কাছে পরিচিত। এই রোগে শরীরের জয়েন্টে ব্যথা, ফুলে যাওয়া আর শক্তভাব অনুভূত হয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না, এই রোগের সঙ্গে আরেকটি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এর নাম “রিউমাটয়েড নডিউল”।

রিউমাটয়েড নডিউল দেখতে ছোট ছোট গাঁটের মতো, অনেকটা চাকা বা ছোট টিউমারের মতো লাগে। এগুলো ত্বকের নিচে থাকে। তাই বাইরে থেকেই দেখা যায়। সাধারণত কনুই, আঙুল বা হাতে যেখানে চাপ পড়ে বেশি সেই জায়গায় এগুলো দেখা যায়। কখনো কখনো একাধিক নডিউল একসাথে দেখা দিতে পারে, আবার কখনো হতে পারে মাত্র একটি।

ভয়ের কিছু নেই। রিউমাটয়েড নডিউল সাধারণত ব্যথা করে না। তবে এটি দেখে বা বুঝে অনেকেই ভয় পেয়ে যান। কারণ এটি শরীরের বাইরে থেকে দেখা যায় বলে অস্বস্তি তৈরি করে।

কারা বেশি ঝুঁকিতে?

-যাঁদের অনেক বছর ধরে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রয়েছে

-যাঁদের শরীরে রিউমাটয়েড সম্পর্কিত অ্যান্টিবডির পরিমাণ বেশি (যেমন: রিউমাটয়েড ফ্যাক্টর, অ্যান্টি-সিসিপি)

-বয়স্করা ও নারীরা তুলনামূলক বেশি আক্রান্ত হন

কিছু ক্ষেত্রে “মেথোট্রেক্সেট” নামের ওষুধ নিয়মিত খেলে নডিউল বাড়তে পারে

তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, মেথোট্রেক্সেট একটি গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ওষুধ, এবং তা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বন্ধ করা উচিত নয়।

চিকিৎসা দরকার হয় কবে?
রিউমাটয়েড নডিউল সাধারণত বড় কোনো সমস্যা তৈরি করে না। তাই আলাদা চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। 

-নডিউল ব্যথা করলে

-জায়গাটি সংক্রমিত হলে (ইনফেকশন)

-নড়াচড়া বা ব্যবহার করতে সমস্যা হলে

এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসক ওষুধ দিতে পারেন অথবা বিশেষ প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নডিউল অপসারণও করা হয়।

রিউমাটয়েড নডিউল শুনলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটি শুধু রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের একটি দিক। নিয়মিত চিকিৎসা ও ফলোআপে থাকলে সমস্যা বড় হওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শরীরের যেকোনো পরিবর্তন বা অস্বাভাবিকতা দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।