চুল চিটচিটে?
গরম, আর্দ্র আবহাওয়া কিংবা তৈলাক্ত ত্বক ছাড়াও নিজের ভুলের কারণে চুল হয়ে যেতে পারে চিটচিটে। চুলের এই চিটচিটে ভাব দূর করার জন্য রইলো কিছু পরামর্শ-
প্রয়োজনমতো শ্যাম্পু না করা
মুখ যেমন পরিষ্কার না করলে লোমকূপে ময়লা জমে বন্ধ হয়ে যায়, তেমনি মাথার ত্বক পরিষ্কার না করলে ব্যাক্টেরিয়ার বিস্তার হয়ে চুলের গোড়া বন্ধ করে দেয়। একেবারেই শ্যাম্পু না করলে চুল আঠালো হয়ে যাবেই। আর এটা হওয়ার কারণ হলো মাথার তেল, মৃত চামড়া ও ভাঙা চুল মাথার ত্বকে জমে চুল ভারি করে ফেলে।
বেশি শ্যাম্পু করা
শরীরের অন্যান্য অংশের মতো মাথার ত্বকও শুষ্ক হয়ে গেল বেশি বেশি তেল নিঃসরণ করবে। আর এটা হওয়ার একমাত্র কারণ হতে পারে অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা। যদি মাথার ত্বক সুস্থ হয় তাহলে দুদিন পর পর শ্যাম্পু করলেই হয়। আর মাথার ত্বক নাজুক হলে এবং চুল পাতলা হওয়া শুরু করলে দিনে একবার চুলে শ্যাম্পু করা উচিত।
আবার পরিবেশের ওপরও নজর দিতে হবে। এমন কোনো জায়গায় থাকা হয় যেখানে বাতাস বিশুদ্ধ, আর্দ্রতা কম সেরকম পরিবেশে কয়েকদিন পর পর শ্যাম্পু করলেই হয়। আবার শহুরে পরিবেশ বা প্রতিদিন ব্যায়াম করার অভ্যাস থাকলে প্রতিদিন চুল ও মাথার ত্বক পরিষ্কার করা উচিত।
কন্ডিশনারের ভুল ব্যবহার
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি আর্দ্রতা ধরে রাখতে কন্ডিশনার ব্যবহার করা প্রয়োজন।
যদি তৈলাক্ত চুল হয় তবে সবসময় কন্ডিশনার ব্যবহার করার দরকার নেই। তারপরও যদি করতেই হয়, তবে চুলের গোড়া এড়িয়ে চলতে হবে। মাথার ত্বক নিজেই প্রাকৃ তিকভাবে তেল নিঃসরণ করে। সেজন্য চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার ব্যবহারের দরকার নেই। বরং মাঝ থেকে শেষপর্যন্ত চুলে কন্ডিশনার ব্যবহারের মনোযোগ দিন।
বেশি গরম পানি ব্যবহার
অতিরিক্ত গরম পানির কারণে মাথার ত্বক শুকিয়ে যায়। ফলাফল শুষ্ক ত্বক। আর সেটা থেকে রক্ষা পেতে মাথার ত্বক অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ করে। তাই মাথা ধোয়ার জন্য কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো। সবচেয়ে ভালো হয় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে পারলে। আরও মনে রাখতে হবে, গোসলে যত কম গরম পানি ব্যবহার করা যায় ততই ত্বকের জন্য মঙ্গল।
স্টাইলিং পণ্য বেশি ভারি
চুল তৈলাক্ত করে ফেলতে পারে ‘ওয়ালে’, ‘ক্রিম’ এবং তেল।তাই চুলের জন্য হালকা প্রসাধনী পণ্য বেছে নিতে হবে। পাশাপাশি খেয়াল করতে হবে চুলে এই ধরনের পণ্য ব্যবহারের পর কীরকম প্রতিক্রিয়া হয় চুলে। যদি চুল হয় সিদ্ধি বা পিচ্ছিল তবে অত ভারি প্রসাধনী ব্যবহার না করলেও চলে। পাশাপাশি পণ্য কেনার সময় উপাদানের চাইতে কী সুবিধা দিচ্ছে সেদিকে নজর দিতে হবে।
প্রায়ই চুল ‘স্ট্রেইট’ করা
‘নাট আয়রন’ ব্যবহার করে চুল সোজার করা একটা প্রচলিত জনপ্রিয় পদ্ধতি। স্ট্রেইনার’ ব্যবহারের সময় মাথার ত্বক থেকে চুল নিচে দিকে টানা হয়। ফলে মাথার তেল সারা চুলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলাফল চিটচিটে হল।
কেশচর্চার হাতিয়ার যদি হয় ময়লা
যদি কেশচর্চার হাতিয়ার যেমন। ব্রাশ নোংরা হয় তবে সারা চুলেই তেল আর ময়লা ছড়িয়ে যাবে।
বেশি আঁচড়ানো
যদিও প্রচলিত ধারণা মতে বেশি আঁচড়ালে চুল ভালো থাকে। তবে আসল কথা হলো এতে বরং চুল আরও। তৈলাক্ত হয়ে যায়। বেশি চুল আঁচড়ানোর ফলে তেল উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। তাই চুল ধোয়ার মাথা আঁচড়ানোর আগে খেয়াল করুন ব্রাশের ডগা যেন মাথার ত্বক স্পর্শ করে। এরফলে মড়া চামড়া এবং অন্যান্য ময়লা ব্রাশের সঙ্গে উঠে আসবে। গোসলের পর ভেজা চুল প্রথমে নিচের দিকে আঁচড়িয়ে ওপরের দিকে উঠতে হবে। আর হালকাভাবে বড়ো ফাঁকা দাঁতের চিরুনি দিয়ে ধীরে ধীর আঁচড়াতে হবে।
ড্রাই শ্যাম্পু
যারা ড্রাই শ্যাম্পু বেশি ব্যবহার করেন তাদের চুল চিটচিটে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করাই যায়। তবে প্রতিদিন ভালো মতো পরিষ্কার করতে হবে যাতে মাথায় সেটা জমে না থাকে। ডাই শ্যাম্পু ব্যবহারের কৌশল হলো, প্রথমে চওড়া একটি ব্রাশে ড্রাই শ্যাম্পু স্প্রে করে সাবধানে চুল আঁচড়ানো। এতে মাথায় অতিরিক্ত ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহারের ঝুঁকি কমবে। আর আঁচড়াতে হবে নির্দিষ্ট জায়গায় অথবা চুলের গোড়া থেকে তিন-চার ইঞ্চি ভাগে ভাগ করে।