Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওভারি বা ডিম্বাশয় ক্যান্সারের ধারণা

নারীদের জরায়ুর দুই পাশে একটি করে মোট দুইটি ডিম্বাশয় থাকে। সেখানে যে ক্যান্সার হয়ে থাকে তাকেই মূলত ওভারিয়ান ক্যান্সার বলা হয়ে থাকে। ওভারিয়ান বা ডিম্বাশয় ক্যানসারকে বলা হয় নীরব ঘাতক। আর এই ক্যান্সারেই নারীরা বেশি আক্রান্ত হন।
সাধারণত সুস্পষ্ট কোনো লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াই শরীরের বিভিন্ন আছে এ ক্যান্সারটি ছড়াতে পারে। সাধারণত মেনোপজের পর এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে। অধিকাংশ রোগীই টের পান না তিনি এই ক্যানসারে ভুগছেন।
ওভারি বা ডিম্বাশয় ক্যান্সারের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছেন গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ডালিয়া তাবাচ্ছুম। তিনি বলেন সন্তানধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ডিম্ব তৈরি করে। পাশাপাশি শরীরের জন্য জরুরি ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। ডিম্বাশয় ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ এবং উপসর্গ অনুপস্থিত বা খুব সুক্ষ্ম হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এই রোগ সনাক্তকরণ এবং নির্ণয় করতে কয়েক মাস লেগে যায়, এর মধ্যেই রোগ ছড়িয়ে পড়ে অনেক।
ডিম্বাশয় ক্যান্সারে প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যাথা থাকেনা। লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরে এর উন্সর্গগুলো পরিবর্তিত হতে থাকে। তবে ডিম্বাশয় ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে।
এই ক্যান্সার ডিম্বাশয়কে সংক্রমিত করে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত পেলভিক জোনে (শ্রোণি এলাকা) এবং পেটে না ছড়ায় ততক্ষণ পর্যন্ত এটি বোঝা যায় না।

ডিম্বাশয়ে ক্যানসারে হলে খাদ্য হজম প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে ক্ষুধা কমে যায় ও পেট ভরা ভরা লাগে সব সময়। পেট ফুলে যায়।

এসময় বমি বমি ভাব হয় আবার কারও কারও বমি হয়। ঋতুস্রাবের সময়ে তলপেটে, কোমরে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু ঋতুস্রাব শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যদি এই ব্যথা থেকে যায় বা বার বার ব্যথা হতে থাকে তা ওভারিয়ান ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

এছাড়া ওভারিয়ান ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ হল অনিয়মিত পিরিয়ড। আবার যোনিপথে হঠাৎ রক্তপাত হওয়াও ভালো লক্ষণ নয়। তবে অনেক সময় ডিম্বাশয়ের সিস্টের জন্যও অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে।

হঠাৎ ওজন কমতে শুরু করা, ঘন ঘন প্রস্রাব, পেলভিস এরিয়ায় ঘন ঘন ব্যথা, যোনি পথের আশেপাশের চামড়ার রং পরিবর্তন বা ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।
পেলভিস অঞ্চলে ব্যথা, পানি খুব বেশি না খেয়েও ঘন ঘন প্রস্তাব পাওয়াও ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

এসব লক্ষ্মণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শে, রক্ত পরীক্ষা, ল্যাপারোস্কপি, আলট্রাসনোগ্রাফি বা সিটি স্ক্যান, ক্যানসার মার্কার, পেট বা ফুসফুসের পানি পরীক্ষা ইত্যাদির মাধ্যমে রোগটি নির্ণয় করতে হবে।

জেনে রাখবেন প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে ও চিকিৎসা করা হলে পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যেই রোগী ৯০ শতাংশ সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। সাধারণত বয়স ও রোগের স্টেজের ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসাপদ্ধতি নির্ধারিত হয়। এক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি ও হরমোন থেরাপি দেওয়া হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, যেসব নারী সন্তানকে বুকের দুধ দেন তাদের মাঝে ওভারিয়ান ক্যানসারে হওয়ার প্রবণতা কম। তবে উপরোক্ত লক্ষণ থাকলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে চিকিৎসায় অনেকাংশে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ