Skip to content

করোনায় মানসিক স্বাস্থ্যেরও খেয়াল রাখবেন যেভাবে

করোনায় মানসিক স্বাস্থ্যেরও খেয়াল রাখবেন যেভাবে

বিশ্বজুড়ে চলমান করোনা আতঙ্কে শারীরিক সুস্থতা নিয়ে তো আমরা কমবেশি সবাই চিন্তিত। তাইতো পাল্লা দিয়ে সকলের প্রচেষ্টা শারীরিক সুস্থতা ধরে রাখার।  কিন্তু মানসিক সুস্থতা? করোনা শুধু শারীরিক নয় প্রভাব ফেলছে মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও। অনেকের হয়তোবা ধারনাই নেই মানসিক সুস্থতার জন্যও রয়েছে কিছু করনীয়। তাইতো পৃথিবীর এই কঠিন সময়ে মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার উপায় নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।  

 

মানসিক আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে তার সাথে তাল মিলিয়ে চলা খুব একটা সহজ কাজ নয়। এর জন্য দরকার আপনার দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তন আনা। মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার জন্য জেনে নিন কিছু পরামর্শ:

 

 

শারীরিক যত্ন নিন

মানসিক সুস্থতার সাথে শারীরিক সুস্থতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।  তাই মানসিক সুস্থতা  নিশ্চিত করতে হলে প্রাথমিক ভাবেই শারীরিক সুস্থতার দিকে নজর দিতে হবে। এজন্য দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন, এতে করে ভাল ঘুম হবে যা আপনার ক্লান্তভাব দূর করবে এবং চাঙ্গা করে তুলবে। যা আপনাকে মানসিকভাবেও সুস্থ  রাখবে। 

দুশ্চিন্তাকে যথাসম্ভব দূরে রাখুন

করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমাদের প্রতিনিয়ত নানান দুশ্চিন্তার তৈরি হচ্ছে। যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যে ব্যাঘাত ঘটায়।  তাই জরুরিভিত্তিতে আমাদের দুশ্চিন্তাকে দূরে রাখতে শিখতে হবে।  তাই কখনো কোন কারণে দুশ্চিন্তার শিকার হলে, সেই বিষয় নিয়ে কারো সাথে আলোচনা করতে পারেন, ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করতে পারেন,  স্ট্রেস কমাতে একটু হাটাহাটি,ব্যায়াম করতে পারেন,  প্রয়োজনে গান শুনতে পারেন। আত্মবিশ্বাসী হবেন এবং মনে মনে ভাববেন সব সমস্যারই  সমাধান রয়েছে।  এবং অবশ্যই যথাসম্ভব চেষ্টা করুন দুশ্চিন্তার উৎসগুলো এড়িয়ে চলার।  

 

সর্বদা আত্মবিশ্বাসী থাকুন

মানসিক সুস্থতার অনেক বড় একটি হাতিয়ার হতে পারে আত্মবিশ্বাস। নিজের উপর কখনো ভরসা হারাবেননা। চলার পথে হাজারো বাঁধা আসবে কিন্তু সর্বদা আত্মবিশ্বাসী থাকুন। নিজের দূর্বলতাকে নিজেই দূর করার চেষ্টা করুন এবং  নিজের ক্ষমতায় বিশ্বাস রাখুন। লক্ষ্যও তৈরি করুন নিজের ক্ষমতানুযায়ী। কোনো মানুষই নিখুঁত নয়, সবারই রয়েছে কিছু দুর্বলতা। তাই নিজেকেও তা বোঝানোর চেষ্টা করুন, নিজের কোন দুর্বলতাকে নিয়ে মন খারাপ করবেননা এটাই হল সুস্থ মানসিকতার পরিচয়।

একাকীত্বকে না বলুন

কথায় বলে 'অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা'। আপনি যখনি কোন কাজের মধ্যে না থেকে একা থাকবেন তখনি মানসিক স্বাস্থ্যে বিঘ্ন ঘটার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দেয়।  এমনিতেই বেশিরভাগ সময় কাটছে ঘরবন্দী হয়ে। তারউপর একা থাকা আরো বড় সমস্যা। তাই কখনো একা ঘরবন্দী না থেকে সর্বদা লোকজনের মধ্যে থাকার চেষ্টা করুন। আশেপাশের লোকজনের সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা  করুন। হোক তা পরিবারের সদস্যদের সাথে, বন্ধুবান্ধবদের সাথে, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর সাথে, আত্মীয়স্বজনের সাথে। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিন, খেতে যান,  আনন্দ করুন। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির আশীর্বাদকে কাজে লাগিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন সকলের সাথে৷ 

 সৃজনশীল কিছু করার চেষ্টা করুন

একঘেয়েমি আমাদের মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটায়।  তাই প্রতিনিয়ত নতুন কিছু করার ও শেখার চেষ্টা করুন। নতুন নতুন কিছু শখ গড়ে তুলুন। নিজের শখে সৃজনশীল কাজ করলে আপনার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে। নতুন কিছু শেখার আনন্দে মনও ভালো থাকবে।   

যান্ত্রিক নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনুন

বর্তমান সময় মানুষ দিনের বেশিররভাগ সময় কাটিয়ে দেন যন্ত্রের উপর নির্ভরশীল হয়ে। মনোযোগ কেড়ে নেয়ার মতো যন্ত্র আমাদের সামনে নেহাত কম নেই। আধুনিক এই যুগে ছোটো বড় প্রায় সবার হাতেই রয়েছে ফোন। যা বাইরেরে জগৎ থেকে আমাদের মনোযোগ কেড়ে নেয়ার প্রধান অস্ত্র বলা যায়। যুগের সাথে তাল মেলাতে যন্ত্রের উপর নির্ভরশীল তো হতেই হয়। তবে মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে তাই যন্ত্রের প্রতি নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে হবে। কোন কারণ ছাড়া সারাদিন ফোন বা টেলিভিশন এর দিকে তাকিয়ে না থেকে বাইরে ঘুরতে পারেন,  গাছ লাগাতে পারেন, বই পড়তে পারেন, কারো সাথে গল্প করতে পারেন। 

উক্ত  নিয়মগুলো অনুসরণ করে করোনার  এই কঠিন পরিস্থিতিতে শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই নিজেকে সুস্থ রাখুন।