রোদের দেশে আরামের বেশে
গরম যেখানে মাত্রাতিরিক্ত পোশাকের বিলাসিতা সেখানে অর্থহীন। গরমে তাপদাহের সাথে বেড়ে ওঠা কোনভাবেই সম্ভব নয়। সূর্যের তাপমাত্রা ঝড়ের বেগে বাড়ছে। প্রকৃতি কখন কি করবে তা বোঝা বড় দায়। তবে পরিবেশকে মাথায় রেখে আমাদের পোশাক নির্বাচন করতে হবে। পরিবেশ এবং প্রকৃতি দুটো সমন্বয়ে পোশাক নির্বাচন না করলে তার চোখে বা শরীরে আরাম দেবে না। সৌন্দর্যের জন্য জোর করে এমন পোশাক না পরুন, যে পোশাক অশান্তির সৃষ্টি করে। জর্জেট, সাটিন, নেট বা ভারি ধরণের কাপড় এই ধরনের পোশাক নিঃসন্দেহে এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
তাই গরমের আরাম, স্বস্তি, স্বাচ্ছন্দ্য, শান্তি সব মিলবে সুতিতে। গরমে পোশাক হিসেবে সুতিকে বেছে নেওয়া উচিত কেন বিশেষ কারণগুলো শুনুন:
সুতি কাপড় গরমে সবচেয়ে আরামদায়ক পোশাক। সুতি কাপড়ে অতি দ্রুত ঘাম শুষে নেয়। পাতলা তন্তুজ দিয়ে তৈরি হওয়ায় খুব সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। ভারী তন্তুজের ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারেনা। সুতি কাপড়ে রয়েছে উচ্চ পানি শোষণ ক্ষমতা। কটনের হাইড্রোফিলিক প্রোপার্টি অন্য যেকোনো ফাইবারের থেকে বেশি। হাইড্রোফিলিক বলতে সহজ ভাষায় পানির প্রতি আকর্ষণ বা পানির প্রতি ভালোবাসা বুঝায়। কটন ফাইবার নিজের ওজনের ২৪ থেকে ২৭ গুন পরিমাণ বেশি পানি শোষণ করতে পারে। আর একারণেই কটন দিয়ে তৈরি সুতি পোশাক খুব সহজেই শরীরের ঘাম শুষে নেয়। ফলে শরীরে চিটচিটে-ভাব তৈরি না করে দেয় আরামদায়ক অনুভূতি। তাই সব দিক থেকে গরমের সবচেয়ে আরামদায়ক পোশাক সুতি কাপড়ের পোশাক। সে হোক সালোয়ার-কামিজ হোক কিংবা কুর্তি বা ফ্রক কখনো প্রয়োজনে শাড়ি। সুতি কাপড়ের যেরকম আরাম পাওয়া যায় সেই আরাম অন্য কোন কাপড়ের পাওয়ার একদমই কঠিন। এছাড়াও সুতি কাপড় বাসা বাড়িতে, অফিস আদালতে কিংবা কোন সামাজিক অনুষ্ঠানেও সহজে পরা যায়। শুধু ডিজাইন ও রংয়ের পরিবর্তন হলেই হয়ে যাবে।
পোশাকের ধরণ- ধারণ
পোশাক যার যার স্বাধীনতা ও স্বাচ্ছন্দ্য। যে যেমন পোশাক পরে আরাম অনুভূত করবে, সে সেইরকম পোশাকই পরবে। পোশাক মানুষের ব্যক্তি রুচির পরিচয় তো দেয়। তার পাশাপাশি নিজের কতটা আরাম অনুভূত করছে সেটাই দেখার বিষয়। দিনের বেশিরভাগ সময় যাদের বাইরে থাকতে হয় তাদের সৌন্দর্যের আগে স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভাবতে হয়। সেইসব দিক চিন্তাভাবনা করে এমন পোশাকে নির্বাচন করতে হবে। যাতে করে সারাদিন পড়ে থাকলেও অসহ্য অনুভূত হয় না। তাই একটু ঢিলে-ঢালা ধরনের পোশাক পরাই সুবিধা জনক। এছাড়াও সালোয়ার কামিজ, কুর্তি,ফ্রক যে যে ধরনের পোশাক পড়ে খুশি সে ধরনের পোশাক পরতেই পারে।
এবার আসি ডিজাইনের কথায়-
অনেকে এভাবেই একই ধরনের সুতি কাপড়ের উপর কি-ই- বা ডিজাইন করা যাবে বা সেই ডিজাইন কেমন হবে! বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস এবং অনলাইন ফ্যাশন হাউজ সব জায়গায় গরমের সুতি কাপড়ের ডিজাইন এবং কাপড়ের সমাহার তৈরি করেছে। তাই ডিজাইন নিয়ে কোন ধরণের চিন্তার কারণ নেই। ভেজিটেবল বাটিক, স্কিন প্রিন্ট, টাই-ডাই ব্লক, এমব্রয়ডারি প্রভৃতি অনেক ধরনের কাপড় রয়েছে। তার মধ্যে আছে বিভিন্ন নান্দনিক ডিজাইন। এছাড়াও ড্রেসে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের প্যাটার্ন এবং বিভিন্ন ধরনের ছাট, ডিজাইন প্রভৃতি। কাপড় বা কালেকশন কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোন কারণ নেই। এত এত ডিজাইনের সমাহারে কোন কিছু পছন্দ হবে না বলে মনে হয় না।
সুতি কাপড়ের যত্ন
কখনোই গরম পানিতে কিংবা কুসুম গরম পানিতে সুতি কাপড় ধোয়া যাবেনা। খুব বেশি প্রখর গুড়া সাবান সুতি কাপড় ধোয়া যাবেনা। এটি সুতি কাপড়ের রং উজ্জ্বলতা এবং টেকসই ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক বেশী রোদে সুতি কাপড় মেলা যাবে না। ঠাণ্ডা পানিতে শ্যাম্পু কিংবা সাবান দিয়ে সুতি কাপড় খুব আলতো। করে পরিষ্কার করতে হবে। সুতি কাপড় বেশিক্ষণ ভিজিয়ে রাখা যাবে না। খুব অল্প তাপমাত্রায় সুতি কাপড় ইস্ত্রি করতে হবে। পছন্দ কিংবা প্রয়োজনে ন্যাপথালিন ব্যবহার করতে পারেন।