Skip to content

৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রথম ‘মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’: নারীর সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

নারী -পুরুষের বৈষম্য এ সমাজে চিরন্তন। তবে সেই বৈষম্য-অবহেলাকে তুড়ি মেরে নারীরা আজ অগ্রসর হচ্ছে বিশ্ব দরবারে। আর ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছে নিজেদের প্রতিভা-মেধা-যোগ্যতা ও দক্ষতার শক্তি। তবে সেই শক্তিকে সমুন্নত করতে দরকার প্রকৃত শিক্ষা। যার মাধ্যমে নারীরা সর্বত্র তাদের বিজয়গাঁথা রচনা করতে সক্ষম হবেন। নারীদের এই ধাপকে আরও সুগঠিত করতে এই প্রথম দেশে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ‘মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট’।

উত্তরাঞ্চলে নারীদের কারিগরি শিক্ষায় আরও দক্ষ করতে তৈরি হচ্ছে রংপুর মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে এই ইন্সটিটিউটটি নগরীর শালবন এলাকায় তিন একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে।

কারিগরি শিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের চাকরিযোগ্য দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করার লক্ষে এটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই প্রতিষ্ঠানে পাঠের মাধ্যমে নারীরা যুগোপযোগী কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। যার মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে নারীরা নিজেদের পরিচয়কে সমুজ্জ্বল করতে সক্ষম হবে। আমরা জানি, বিশ্ব এখন অনেক এগিয়ে গেছে। সেখানে বাঙালি নারীরা অনেক পিছিয়ে আজও। প্রথম কারণ, পারিবারিক-সামজিক নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা, দ্বিতীয়ত, শিক্ষার অপ্রতুলতা। তবে রংপুরে এই প্রথম নারীদের জন্য পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট নির্মাণের মধ্যে দিয়ে অনেক নারীর সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। নারীরা কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হলে শুধু দেশেই নয় বরং বহির্বিশ্বেও নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ করে নিতে পারবে। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আরও বেশি তারা নিজেদের প্রস্তুত করার সুযোগ সুবিধা পাবে।

সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ‘চারটি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনা শীর্ষক’ প্রকল্পের আওতায় ৭টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে ৭টি প্যাকেজের মাধ্যমে এই প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। রংপুর ছাড়াও সিলেট, বরিশাল, ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরে গৃহীত প্রকল্পের আওতায় ৪টি মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন, প্রকল্প করা হচ্ছে। নারী এগুলো দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে সহজেই। ফলে নারীদের এগিয়ে নিতে সরকারের এ ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। নারী বাঁচলে, বাঁচবে দেশ। বাঁচবে জাতি। ফলে নারীদের এগিয়ে নিয়ে শিক্ষার কোনোই বিকল্প নেই। শিক্ষার মাধ্যমে অবহেলিত নারী সমাজ নিজের ভালো-মন্দের জ্ঞান যেমন লাভ করবে তেমনই স্বাবলম্বী হয়ে পরিবার-পরিজনদের দেখভাল করতেও সক্ষম হবে।

আজও পত্রিকার পাতা খুললেই চোখের সামনে নারী নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র উঠে আসে বারবার। এমন কোনো দিন নেই যেদিন নারীর সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটছে! আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষ আরও নিমজ্জিত হচ্ছে। খসে পড়ছে পলেস্তারা। পচা-গলা শব নিয়েই মানুষের পথচলা। অর্থাৎ এ সমাজে মানুষের মধ্যে দিনে দিনে উবে যাচ্ছে মানবিকতা-বিবেক। যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় লেনা-দেনার সম্পর্কের মাঝেও থেকে যাচ্ছে বিবাদ-বৈষম্য-হিংস্রতা। তাই এসবের মাঝে নারীদের হিংস্র হায়েনার দল থেকে বাঁচার জন্য থাকতে হবে বুদ্ধি-জ্ঞান-শিক্ষা। যা নাহলে নারীদের শোষণ-উৎপীড়নে পাশে থাকার মতো কেউ নেই!

একমাত্র শিক্ষায় পারে নারীর জীবনকে গতিশীল করতে। ফলে রংপুর মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সত্যিই এক প্রসংশনীয় উদ্যোগ। যা নারীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দান করে কর্ম উদ্যোগী করতে সক্ষম করে তুলবে। নারীর পথচলার নির্ভীক সঙ্গী হোক শিক্ষার আলো। ছড়িয়ে পড়ুক আপামর নারীর মনের গহীনে। যার আলোয় আলোকিত হোক নারী নিজে সেইসঙ্গে পরিবার-পরিজন-সমাজ-দেশ-রাষ্ট্র। উচ্চকিত হোক নারীর শিরদাঁড়া, ভেঙে ফেলুক সব অন্যায়-অবিচার-অত্যাচারের শৃঙ্খল।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ