ফুটবলার সাবিনা খাতুনের জন্মদিন আজ
নারীদের খেলাধুলার বিষয়ে বাঙালিদের কার্পণ্য যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। পরিবার থেকে সমাজ সবর্ত্রই এ কার্পণ্য। নারীদের খেলাধুলা নিয়ে সমাজে যে ট্যাবু আছে তা ভাঙতে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি সাড়া জাগিয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এই নারী ফুটবল দলের কান্ডারি সাবিনা খাতুন। ‘বেঙ্গল মেসি কন্যা’ খ্যাত বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের জন্মদিন আজ।
১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মো: সৈয়দ গাজী ও মা মমতাজ বেগম, সাবনিা তাদের চতুর্থ সন্তান। ২০০৭ সালে অস্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকে ফুটবলের সাথে সাবিনার সম্পর্ক। সাতক্ষীরা জেলা ফুটবল কোচ আকবরের মাধ্যমেই ফুটবলের হাতেখড়ি। স্কুল পর্যায়ে, আন্তঃস্কুল ও আন্তঃজেলা পর্যায়ে ভাল খেলার সুবাদে ডাক পেয়ে যান জাতীয় দলে।
২০০৯ সালে জাতীয় দলের হয়ে সাবিনার অভিষেক ঘটে। ২০১৫ সাল থেকে তিনি জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০২২ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ নারী দল তার নেতৃত্বে এবং অসাধারণ নৈপুণ্যে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। একেই বলে ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক’! সদ্য শেষ হওয়া মেয়েদের সাফে যোগ্য অধিনায়কের মতো সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিজে তো গোল করেছেনই, সতীর্থকে দিয়ে গোল করিয়েছেনও সাবিনা খাতুন।
ব্যক্তিগত ও দলীয় সাফল্যে রাঙিয়ে দিয়েছেন সাফ ফুটবলকে। পাকিস্তান ও ভুটানের বিপক্ষে করেছেন হ্যাটট্রিক। টুর্নামেন্টে ৫ ম্যাচের ৩টিতেই পেয়েছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। ৮ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি। সাফের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও উঠেছে সাবিনার হাতে। জাতীয় দলের জার্সিতেও বাংলাদেশ দলে সাবিনার ধারেকাছে কেউ নেই। শুধু সাফেই করেছেন ২২ গোল। সব মিলিয়ে ৪৮ ম্যাচে গোল ৩২টি।
বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের সব নক্ষত্রের মধ্যে সাবিনাও একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। সাবিনা এক হাতে সংসারের হাল ধরেছেন আরেক হাতে দেশের। নিজ দায়িত্বে দেশকে বিশ্ব দরবারে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। দেশের যেসব নারীরা পিছিয়ে আছে তাদের জন্য হয়েছেন রোল মডেল। সাবিনা খাতুনের জন্মদিনে পাক্ষিক অনন্যার পক্ষ থেকে রইলো শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।