ডাইনোসর বিলুপ্ততে সাপের আবির্ভাব!
পৃথিবীতে সরীসৃপ প্রাণীর মধ্যে সাপের উপরই হয়তো মানুষের ভীতিটা বেশি। গ্রামাঞ্চলে প্রায়শই দেখতে পাওয়া গেলেও শহরে খুব কমই দেখা যায়। সাপ নিয়ে ভ্রান্তির নানান তথ্যেরও যেন কমতি নেই। তবে এই সাপের আবির্ভাব নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণারও যেন কোন কমতি নেই।
জীবন ধারণে ও জীববিবর্তনের পথে ভয়াল মহা-বিনাশে আজ থেকে ৬ কোটি বছর আগে ডাইনোসর একেবারে মুছে গিয়েছিল পৃথিবীর বুক থেকে। মহাকাশ থেকে অ্যাস্টোরয়েড পড়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল দুই তৃতীয়াংশ প্রাণী প্রজাতি ৷ সে সময় যে জাতিগুলি বেঁচেছিল তাদের থেকে আজকের সাপ তৈরি হয়েছে, তা বলে দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা৷
পৃথিবীতে ৪০০০ প্রজাতির সাপ রয়েছে৷ সাপেদের এই সবকটি প্রজাতি সেই মহা-বিনাশের প্রক্রিয়ার পর থেকেই তৈরি হয়েছে৷ জীবাশ্মের সাহায্যে পরীক্ষা চালিয়ে সাপেদের বিবর্তন বুঝতে পারছেন বিজ্ঞানীরা৷
গবেষণা থেকে জানা যায় যে পৃথিবীতে জীবিত থাকা সমস্ত সাপ ৬ কোটি বছর আগে হওয়া গ্রহাণুর সঙ্গে মহা ধাক্কায় সব বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার সময় থেকে শুরু হয়েছে৷ সাপের মাটির সঙ্গে লেপ্টে থাকা এবং বিনা খাওয়াদাওয়া ও বিনা পানীয়ে থাকা ওই বড় ধ্বংসের পরেও বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে ডাইনোসরদের ধ্বংসের পর তারা বিভিন্ন দেশে মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে৷
এরপর সাপেরা ভাইপার, কোবরা, গার্টর, পাইথন, বোয়াস এরকম নানা প্রজাতিতে ভাগ হয়ে যায়৷ তারা নিজেদের বাসস্থান বদলের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসও বদলে ফেলে৷ এই সব ধরণের সাপ যাদের কেউ গাছে থাকে, কেউ মাটিতে, কেউ বিষধর, কেউ নির্বিষ সবাই তৈরি হয়েছে ডাইনোসরের বিলুপ্তির পরেই৷ এরপর যে সাপের বংশ তৈরি হয়েছিল তারা ১০ মিটার অবধি লম্বা হত৷
মহা-বিনাশ নিয়ে অন্য এক রিসার্চে এই ধ্বংস প্রক্রিয়াকে রচনাত্মক বিনাশ বলা হয়েছে৷ যাতে পুরনো প্রজাতি ধ্বংস হয়ে নতুন প্রজাতি তৈরি হয়৷ মহাবিনাশের পর এরা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে৷ দক্ষিণ গোলার্ধে থেকে এই প্রথমবার তারা এশিয়াতে পা রাখে৷
পৃথিবীর একটি বড় বদল হয়েছিল যখন গরম গ্রিনহাউস থেকে ঠাণ্ডা আইসহাউস জলবায়ুতে বদল হচ্ছিল৷ সাপেদের প্রজাতিগুলির বিবর্তন থেকে এই পরিবর্তনের খোঁজ পাওয়া যায়৷ সেই থেকেই আস্তে আস্তে সাপের নানান প্রজাতির উৎপত্তি ঘটতে থাকে। যার সব প্রজাতির সন্ধান এখনো বিজ্ঞানীদের নাগালের বাইরে। তবে বিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্বের বিশ্লেষণের মাধ্যমে সাপ নিয়ে জানা যাবে অজানা আরও নতুন তথ্য।