Skip to content

৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের ক্ষতি কম সৌরঝড়ে!

পৃথিবীর মানুষের মহাকাশ নিয়ে চিন্তা ভাবনার যেন অন্ত নেই। মহাকাশ নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা বিভিন্ন সময় হয়ে থাকে। এগুলো নিয়ে বিভিন্ন জরিপ হয়। কোন দেশের কোন অঞ্চল কেমন ঝুঁকিপূর্ণ সে ব্যাপারে। সৌরঝড় ব্যাপারটি বাংলাদেশে কি প্রভাব ফেলতে পারে তার ব্যাপারে কিছুটা আলোকপাত করা যাক।

ভয়ংকর সৌরঝড়ে বিকল হতে পারে বিশ্বের ইন্টারনেট সংযোগ। সাবমেরিন কেবল নষ্ট হতে পারে যোগাযোগের স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহগুলো। শুরু থেকে বোঝার চেষ্টা করি সৌরঝড় মূলত বিষয়টা কি?

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সৌরঝড়কে বলেন ‘করোনাল মাস ইজেকশন’। এমন ঘটনায় সূর্য থেকে তীব্র চৌম্বকীয় কণার নিঃসরণ হয়। এই কণাগুলো ঘণ্টায় কয়েক মিলিয়ন কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে। এভাবে ১৩ ঘণ্টা থেকে ৫ দিনের মধ্যে এসে পৌঁছায় পৃথিবীতে।

সৌরঝড় মানুষের ক্ষতি করে বলে প্রমাণ মেলেনি। সূর্য থেকে ছুটে আসা ওই কণাগুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আটকে যায়। তবে ক্ষতি করতে পারে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের। পাশাপাশি তীব্র বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রবাহিত করে মানুষের তৈরি অবকাঠামোগুলোর ক্ষতি করতে পারে।

১৮৫৯ সালের এক সৌরঝড় প্রায় ১৭ ঘণ্টায় পৃথিবীতে পৌঁছেছিল। সে সময় টেলিগ্রাফ নেটওয়ার্কের ক্ষতি করেছিল। বৈদ্যুতিক শক অনুভূত হয়েছিল বলেও জানিয়েছিলেন টেলিগ্রাফ অপারেটররা। ১৯২১ সালের আরেক সৌরঝড় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টেলিগ্রাফ সংযোগ এবং রেলপথের ক্ষতি করেছিল। ১৯৮৯ সালে তুলনামূলক কম শক্তির আরেক ঝড়ে কানাডার কেবেকের বিদ্যুতের গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

শুরুতে যেমনটা বলা হয়েছে, দীর্ঘ সাবমেরিন কেবল বিচ্ছিন্ন হলে তার প্রভাব পড়বে ইন্টারনেট সংযোগে। আর যোগাযোগের স্যাটেলাইটগুলো কাজ করা বন্ধ করে দিলে মুঠোফোনে যোগাযোগও সম্ভব হবে না, মুঠোফোনে ইন্টারনেট সংযোগও কাজ করবে না। তবে এমন অবস্থার মুখোমুখি আমরা এত দিন হইনি। কারণ, ইন্টারনেট কিংবা সার্বিকভাবে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ হয়েছে গত তিন দশকের মধ্যে। এই সময়ে সূর্য তেমন সক্রিয় ছিল না। ফলে বড়সড় কোনো সৌরঝড়ের প্রভাব ইন্টারনেট-যোগাযোগে পড়েনি। বেশি ও কম সক্রিয়তার চক্রের মধ্য দিয়ে যায় সূর্য, আর শিগগিরই সে চক্রের চূড়ায় পৌঁছাবে। অর্থাৎ আমাদের জীবদ্দশায় শক্তিশালী একটি সৌরঝড়ের কবলে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।অরোরা যে মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি দেখা যায়, সেটাও এ কারণেই।

নিম্ন অক্ষাংশের দেশগুলোর ঝুঁকি অনেক কম। তবে সেটা নিশ্চিত করে বলার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান হচ্ছে ২০°৩৪' উত্তর থেকে ২৬°৩৮' উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°০১' পূর্ব থেকে ৯২°৪১' পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। বিষুবরেখার ৩০ ডিগ্রি ওপর থেকে ৩০ ডিগ্রি নিচে পর্যন্ত নিম্ন অক্ষাংশ ধরা হয়। অর্থাৎ বাংলাদেশের অবস্থান নিম্ন অক্ষাংশে।

সেদিক থেকে সৌরঝড়ের প্রভাব বাংলাদেশেও কম পড়ার কথা। পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের অবস্থানের কারণে উচ্চ অক্ষাংশের অঞ্চলগুলোর ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। আর চৌম্বকীয় মেরুর অবস্থান পৃথিবীর মেরুগুলোর কাছাকাছি। সৌরঝড়ে ক্ষতি হয় মূলত পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে প্রতিক্রিয়ার প্রভাবেই। সে কারণেই সৌরঝড়ে পৃথিবীর চৌম্বকীয় মেরুর কাছাকাছি অঞ্চলগুলোর ক্ষতির ঝুঁকি বেশি। অরোরা (মেরুপ্রভা) যে মেরু অঞ্চলের কাছাকাছি দেখা যায়, সেটাও এ কারণেই।

এই ব্যাপারটি থেকে মোটামুটি পৃথিবীর অবস্থানগত দিকে থেকে তুলনামূলক ভাবে ভালো অবস্থানে রয়েছে সেটি বোঝা যায়।তবে সে যাই হোক নাহ কেন একটি সৌরঝড় অনলাইন যোগাযোগ ব্যবস্থাকে একদম ধূলিসাৎ করার জন্য যথেষ্ট।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ