ঘুমিয়েও যেভাবে শরীর সুস্থ রাখা যায় !
আমাদের একেকজনের ঘুমের অভ্যাস একেকরকম। আর এই অভ্যাসগত কারণে ঘুম নিয়ে অনেকেই জেনে বা না জেনেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকি। এমনকি ঘুমের সমস্যাগত কারণে ঘুমের মধ্যেই শারীরিক বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। আর ঘুম ভালো না হলে তো কথাই নেই; সারাদিন যাবে খিটখিটে মেজাজে আর অবসন্নতায়।
চলুন দেখে আসি, সুস্থ থাকতে কেন আপনি বাম দিকে ফিরে শোবেনঃ
এসিডিটি সমস্যা কম হয়ঃ
ঘুমের আগে ব্যাপক খাওয়া-দাওয়া করে শান্তির ঘুম দিতে চাইলেও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায় এসিডিটি। পেটে ও বুকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টির মাধ্যমে ঘুমের যেমন সর্বনাশ করে ছাড়ে, তেমনি অতিরিক্ত এসিডিটি আপনার মারাত্মক শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাম দিক ফিরে ঘুমালে এই এসিড রিফ্ল্যাক্স প্রবণতা কম হয়।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ
ঘুমানোর সময় ডান দিকের চাইতে বাম দিকে ফিরে ঘুমালে শরীরের খাবারের হজম প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত হয়। মানব শরীরের গঠনের জন্য বাম দিকে ফিরে ঘুমালে এই সুবিধা পাওয়া যায়। বাম দিকে ফিরে ঘুমালে শরীরের নাইট্রোজেন ঘটিত পদার্থ বৃহদান্ত্র থেকে সহজেই ডিসেন্ডিং কোলোনে পৌঁছাতে পারে। বাম দিকে ঘুমালে পেট ও প্যানক্রিয়াস স্বাভাবিক ভাবে ঝুলে থাকতে পারবে। যার ফলে হজমে প্যানক্রিয়াটিক উৎসেচক এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে চালিত হবে।
হৃদপিণ্ডের জন্য ভালোঃ
বাম দিকে ফিরে ঘুমালে হৃদপিণ্ডের রক্ত চলাচলে সুবিধা হয় বলে, বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন। ফলে, হৃদপিণ্ডের কাজে সুবিধা হয় বলে ঘুমও আরামদায়ক হয়।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ভালোঃ
যেহেতু শরীরের ডান দিকে লিভার থাকে, সেহেতু বাম দিক ফিরে ঘুমালে শরীরের লিভার ও মেয়েদের শরীরের জরায়ুতে চাপ কম পড়ে। তাছাড়া পিঠের উপর চাপ কম পড়ায়; কিডনি, জরায়ু, ভ্রূণে রক্ত চলাচলে সুবিধা হয়। এই জন্য ডাক্তাররা প্রায়শই গর্ভবতী মহিলাদের বাম দিকে ফিরে ঘুমাতে পরামর্শ দেন।
পিঠের ব্যথা কমায়ঃ
শরীরের ডান দিকের তুলনায় বাম দিকে ফিরে ঘুমালে স্পাইনকর্ডের উপর চাপ কম পড়ে। এই জন্য যারা দীর্ঘস্থায়ী পিঠের ব্যথায় ভোগে বা পিঠে মাঝে মাঝে তীব্র ব্যথা অনুভব করে, ডাক্তাররা তাদের বাম দিকে ফিরে শোবার পরামর্শ দেন।
নাক ডাকা কমায়ঃ
শরীরের পিঠের উপর ভর দিয়ে ঘুমালে আপনার মুখের চোয়াল, জিহ্বা ও মুখ সবচাইতে বেশি স্বস্তিতে থাকে। তাই এই সময় আপনি সবচাইতে আরামদায়ক অবস্থায় প্রচণ্ড আওয়াজে নাক ডাকতে পারেন, যা আপনার সঙ্গীর ঘুমের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে এবং আপনাকে শুনতে হতে পারে কটু কথা। তাই বিশেষজ্ঞরা এই সমস্যা সমাধানেও বাম দিকে ফিরে ঘুমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।