Skip to content

৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রযুক্তিতেও কমাতে হবে লিঙ্গ বৈষম্য!

নারীশিক্ষা নিয়ে একসময় সমাজে বেশ বিধিনিষেধ থাকলেও যুগে যুগে সে বিধিনিষেধ অনেকটাই কমে এসেছে। সর্বত্রই নারীশিক্ষাকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সকল ক্ষেত্রে নারীর সমান অংশগ্রহণ এখনো খুব একটা নিশ্চিত করা যায়নি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি খাত হচ্ছে, 'তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি'। এ খাতে নারীর অংশগ্রহণ তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কম।

গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তিতে কিশোরী দিবস (ইন্টারন্যাশনাল গার্লস ইন আইসিটি ডে) উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব বিষয়ে  কথা বলেন উপস্থিত বক্তারা। দ্রুত বর্ধনশীল প্রযুক্তি খাতে মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ও এ খাতকে পেশা হিসেবে নিতে উৎসাহিত করতে প্রতিবছর এপ্রিল মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালন করা হয়।

 

প্রযুক্তিতেও কমাতে হবে লিঙ্গ বৈষম্য!

সভায় উপস্থিত বক্তারা বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি–বিষয়ক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় মেয়েদের অংশগ্রহণ মাত্র সিকিভাগ। পেশা হিসেবে এ খাতে নারীর অংশগ্রহণ আরও কম, ১২-১৩ শতাংশ।  ‘মেয়েদের জন্য কঠিন’ উল্লেখ না করে ছোটবেলা থেকেই পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মেয়েদের প্রযুক্তি শিক্ষায় উৎসাহ দিতে হবে বলে জানান তারা। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেন, স্কুলজীবন থেকেই প্রযুক্তি শিক্ষায় মেয়েদের আগ্রহী করে তুলতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি জানান, জাতিসংঘের সহায়তায় আইসিটি বিভাগ উইমেন আইসিটি ফ্রন্টিয়ার ইনিশিয়েটিভ (ওয়াইফাই) প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার উদ্যোক্তা তৈরি করছে। এসব উদ্যোগে বেসরকারি সংস্থাগুলো সম্পৃক্ত হলে মেয়েদের আরও এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।

 

প্রযুক্তিতেও কমাতে হবে লিঙ্গ বৈষম্য!

সম্প্রতি একটি কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে  ব্র্যাকের জ্যেষ্ঠ পরিচালক কে এ এম মোর্শেদ বলেন, শুরুতে বলা হচ্ছিল, নারীদের হাতে ডিভাইস কম, তারা বিষয়টি বুঝবেন না। অথচ মাত্র দুদিনের প্রশিক্ষণে ওই নারীদের পুরো বিষয়টি বোঝানো গেছে এবং তাঁরা ভালোভাবে কাজটি চালিয়ে নিচ্ছেন। তাই শুধু অনুমানের ভিত্তিতে নারীদের পিছিয়ে না রেখে একটু শ্রম দেওয়ার মাধ্যমে সামনে এগিয়ে নেওয়া উচিত।

স্টার্টআপ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনা এফ জাবীন বলেন, প্রযুক্তিগত নেতৃত্বের দিক দিয়ে নারী এখনো অনেক পিছিয়ে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন আনতে হবে। দক্ষতা উন্নয়নে মেয়েদের এখন নিজেকেই নির্ভরযোগ্য পরামর্শকের অবস্থানে ভাবতে হবে।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিষয়ে মেয়েদের এক ধরনের ভীতি কাজ করে। ভয়টা আসলে সত্যিকারের ভয় নয়। ছোটবেলা থেকে তাদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তি খাতে নারী উদ্যোক্তা বাড়াতে ২ শতাংশ হারে ব্যাংক ঋণ, ১০ বছরের কর্পোরেট কর মুক্ত করা, বেসিসের ফাঁকা জায়গা কম খরচে বা বিনা মূল্যে ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ নারী কর্মী রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

আলোচনায় যুব প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থেকে সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজঅ্যাবিলিটির (সিএসআইডি) তুছাব্বের মুনতাহা প্রযুক্তি খাতে প্রশিক্ষণে ১০-১৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী নারীকে সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিকস অ্যান্ড মেকাট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক লাফিফা জামাল।

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ