Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শরতের শুভ্রতায় যত সাজসজ্জা

প্রকৃতিতে লেগে গেছে শরতের মায়াবী স্নিগ্ধ ছোঁয়া। নদী পাড় ছেয়ে গেছে কাশফুলের শুভ্র মেলায়। এখনকার আকাশটা কখনো স্বচ্ছ নীল আবার কখনো সেখানে মেঘের খামখেয়ালি আনাগোনা। খরতাপে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দেয় হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি আর সকালে শিউলি ফুলের শুভ্রতা। প্রকৃতি এই বিচিত্র খেলায় মেতে উঠে শরৎকালে। বিচিত্র এই রঙের খেলার সঙ্গে জীবনকে আরও রঙিন করতে পোশাকেও আনতে পারেন বৈচিত্র্য। আবার সাজগোজ করে বাইরে বেরিয়ে হঠাৎ বৃষ্টির ঝাপটায় যেন পুরোটাই ম্লান না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তাই এই সময়ের সাজ হতে হবে সময়োপযোগী।

 

ভাদ্র-আশ্বিন এই দুইমাস নিয়ে ষড়ঋতুর এ দেশের তৃতীয় ঋতু শরৎকাল। প্রতিটি ঋতুর মতো একদমই ভিন্নরূপে উপস্থিত হয় শরৎ। একই সঙ্গে এই ঋতুর রয়েছে একটা আলাদা আবেদন। প্রকৃতিতে যখন নীল, সাদা আকাশ আর সবুজের সমাহার তাই পোশাকেও আনতে পারেন এই রঙগুলো। পড়তে পারেন প্রকৃতির মতো রঙিন পোশাক। শরতের সাজে শাড়িই সবচাইতে বেশি মানানসই। এ সময়টাতে পরতে পারেন সুতি, সিনথেটিক, জর্জেট, চিনন ইত্যাদি রকমের শাড়ি। তবে ব্লাউজটা হওয়া চাই গর্জিয়াস।

 

শরতের সিগ্ধ সাজের জন্য জমকালো সাজ বা অলঙ্কার কোনোটাই মানানসই নয়। সেক্ষেত্রে ভারী গয়না না পরাই ভালো। কানে হালকা একটা দুল পরে নিতে পারেন। সাদা বা সিলভার রঙের দুল বেছে নিন। আর হাতে ভারী একটা ব্রেসলেট পরুন। সোনা, রূপা, মুক্তা, অক্সিডাইজ, মেটাল, কাঁচ, মাটি, পুঁতি, কাঠ কিংবা যে কোনো রকমেরই হোক না কেন, হাতে চুড়ি বা প্লেন বালা, গলায় লকেট, কানে দুটো হালকা গহনা কিংবা পাথর বসানো টব কিংবা মুক্তা বসানো দুল পরলেই সুন্দর লাগবে। শাড়ির সঙ্গে এ ধরনের গয়না নিঃসন্দেহে আপনাকে আরও বেশি স্নিগ্ধ করে তুলবে।

শরতের শুভ্রতায় যত সাজসজ্জা

যেহেতু বছরের এ সময়টাতে ঘরের বাইরে রোদ-বৃষ্টির খেলা লেগেই থাকে, তাই সাজের ক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখবেন, আপনার সাজের উপকরণটি যেন পানিরোধক হয়। পাশাপাশি ভারী সাজ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। খেয়াল রাখবেন, সাজসজ্জায় স্নিগ্ধভাবটা থাকা

চাই। এজন্য হালকা মেকআপই ভালো। আর সাজের উপকরণের রঙে অবশ্যই উজ্জ্বল রং বেছে নেওয়া উচিত। এ সময় লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ, সবুজ রঙে ইচ্ছামতো সেজে উঠতে পারেন। যারা রঙটা একটু বেশিই পছন্দ করেন, তারা পোশাকের রঙের বিপরীত রঙটিও বেছে নিতে পারেন। এটি চোখের কাজল, শ্যাডো, লিপস্টিক সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। দিনের বেলা ব্লাশন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কপালে টিপ দিতে পারেন।

 

শাড়ি কিংবা গহনার ভীড়ে ত্বকের কথা ভুলে গেলে একদমই চলবে না। সাজার আগে ত্বকে অবশ্যই ময়েশ্চারাজার মেখে নিবেন। মেকআপ বা ফাউন্ডেশন যাই ব্যবহার করেন না কেন ত্বকের সাথে মিলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। ফাউন্ডেশনের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশন মুখে ও গলায় লাগিয়ে একটা ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে দিন। এরপরও যদি মুখে ভাঁজ বা দাগ থাকে তাহলে কনসিলার ব্যবহার করতে হবে। এবার কমপ্যাক্ট পাউডার দিন। কাজল শুধু চোখের ভেতর লাগান, ওপরে আইলাইনার লাগান। সবশেষে মাশকারা লাগান। লিপ পেন্সিল আউট লাইন এঁকে নিয়ে হালকা রঙের লিপগ্লসও লাগিয়ে নিতে পারে।

 

5

চুলের সাজের ক্ষেত্রে অনুসরণ করুন কিছু বিশেষ পন্থা। পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে চুলটা খোলা রাখুন, আর দেশীয় পোশাকের সঙ্গে করতে পারেন ইচ্ছামতো খোঁপা বা ঝুঁটি। লম্বা চুলে বেণি করে পাঞ্চ ক্লিপ ব্যবহার করতে পারেন। আবার চুলের খোঁপায় ফুল কিংবা ফুলের কুঁড়ি গুঁজে নিতে পারেন। হতে পারে গোলাপ সেটা, কিংবা রজনীগন্ধা। যদি খোঁপা বাঁধতে চান, তবে ছোট্ট মালা গেঁথে খোঁপায় জড়িয়ে নিতে পারেন। চাইলে, মালা ঝুলিয়েও রাখতে পারেন খোলা চুলের এক পাশে। আবার হাতখোঁপা করে তাতে ব্যবহার করতে পারেন তামা বা রুপার কাঁটা। যাদের চুল ছোট, তাদের জন্য পনিটেল তো আছেই। খোঁপা বা পাঞ্চ ক্লিপও ব্যবহার করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন, পোশাক যখন হালকা, চুলের স্টাইলও যেন তাই-ই হয়। আবার যারা বাইরে বেরুলে হিজাব ব্যবহার করেন, তারা শাড়ির ধরন, রঙ এবং সাজের সঙ্গে মিলিয়ে মানানসই হিজাব পরতে পারেন।

 

শাড়ির সঙ্গে ক্লোজড হিল বা পেনসিল হিল পরলে আকর্ষণীয় লাগে। তবে যারা পেনসিল হিল পরতে অভ্যস্ত নন, তারা ফ্যাশনেবল ওয়েজেজ হিলগুলো বেছে নিতে পারেন। এই গরমে শাড়ির সাথে খুব বড় ব্যাগ না নেয়াই ভালো। ছোট মানানসই ক্ল্যাচ ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন নিশ্চিন্তে। আর শরতের সুন্দর প্রকৃতির সঙ্গে মানানসই শাড়ি, সাজের সঙ্গে অবশ্যই শরীরে ছড়িয়ে দেওয়া চাই মিষ্টি ঘ্রাণের সুগন্ধি। ব্যস, আপনি শাড়িতে হয়ে গেলেন শরতের মোহময়ী অনন্যা নারী। নিজে সুন্দর ও পরিপাটি করে শাড়িতে সাজুন, অন্যকেও সাজান। ভালো থাকুন সবাই। উপভোগ করুন শরতের শুভ্র মিষ্টি রোমান্টিসিজম।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ