Skip to content

৬ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | সোমবার | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্মার্টফোনকে ফাস্ট করবেন যেভাবে

ফোন ছাড়া চলতে পারে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কারণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম সঙ্গী স্মার্টফোন। অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মতো স্মার্টফোন অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে স্লো হয়ে পড়ে। কখনো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে স্মার্টফোন স্লো কাজ করলে বিরক্তিকর মনে হয়। তবে এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনের স্পিড কমে যাওয়া নির্ভর করে ব্যবহারকারী ও ফোনের সেটিংসের ওপর। স্মার্টফোন ব্যবহারের রয়েছে কিছু নিয়ম কানুন আর কিছু সেটিংস পরিবর্তন করার মধ্য দিয়েও বাড়তে পারে ফোনের স্পিড ঠিক আগের মতোই।

স্মার্টফোনের স্পিড বাড়ানোর কিছু উপায়
সিস্টেম আপডেট
স্মার্টফোন স্লো হওয়ার প্রধান কারণ অপারেটিং সিস্টেম সবসময় আপডেট না থাকা। একে সংক্ষেপে ওএস বলা হয়। এটি আপডেট রাখা স্মার্টফোনের জন্য খুবই প্রয়োজন। কারণ কোম্পানিগুলো ওএসের আপডেটের মাধ্যমে সিস্টেমে থাকা ত্রুটি ও বিচ্যুতিগুলো দূর করে থাকে। সে কারণে ওএস আপডেট না থাকলে স্মার্টফোন স্লো হয়ে পড়ে। তাই স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম সবসময় আপডেট রাখার চেষ্টা করুন।

অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনইন্সটল করে দিন
এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ আনইন্সটল করে দেওয়া। ফোনে প্রচুর স্টোরেজ থাকার কারণে আমরা ইদানীং অতিরিক্ত অ্যাপ দিয়ে ফোন ভরিয়ে ফেলি। এই অ্যাপগুলো হয়তো ফোনের স্টোরেজে কোনো প্রভাব ফেলে না, তবে ফোনের অনেক অ্যাপই রেমের জায়গা দখল করে থাকে। আর এই কারণেই ফোনে অ্যাপ বেশি থাকলে ফোন স্লো হয়ে যায়। তাই চেষ্টা করুন, আপনার এন্ড্রয়েড ফোনে যথাসম্ভব কম ও শুধু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপগুলো রাখতে।

অ্যাপস আপডেট রাখা
স্মার্টফোনের কার্যক্ষমতা স্লো হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ব্যবহৃত অ্যাপস আপডেট না রাখা। যেকোনো অ্যাপস আপডেট করা হলে ব্যবহারকারীর কাছে সেই অ্যাপস সম্মতি চায়। ব্যবহারকারীকে কেবল অ্যাপটি আপডেটের জন্য সম্মতি দিতে হবে। এতে স্মার্টফোনকে স্লো হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব।

অ্যাপ এর ক্যাশ ডিলিট করে দিন
ক্রোম, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, মেসেঞ্জার ইত্যাদি অ্যাপ ফোনে প্রচুর পরিমাণ ক্যাশ (Cache) তৈরি করে৷ এসব ডেটাগুলো ওই অ্যাপের সেটিংসে গিয়ে ক্লিয়ার করুন। তবে অ্যাপের ডাটা (Data) ক্লিয়ার করবেন না। সেক্ষেত্রে ওই অ্যাপে থাকা দরকারি তথ্য মুছে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া এর ফলে আপনি লগ-আউটও হয়ে যেতে পারেন।

ইন্টারনাল স্টোরেজ যথাসম্ভব খালি রাখুন
এন্ড্রয়েড ফোনের স্পিড বাড়ানোর আরেকটি কার্যকর উপায় হচ্ছে ইন্টারনাল স্টোরেজ যথাসম্ভব খালি রাখা। তবে আপনার ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ একদম খালি করে রাখতে বলছি না। ধরুন, আপনার ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ ৩২ জিবি আর আপনি ২জিবি স্পেস নেয়, এমন অ্যাপ বা গেম চালিয়ে থাকেন। আপনি যখন ওই অ্যাপটি চালাবেন, তখন ওই অ্যাপের ডাটাগুলো লোড করতে অ্যাপটি ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজকে ব্যবহার করে। তাই ওই ২জিবির অ্যাপ বা গেমটি চালাতে আপনার ফোনে কম করে হলেও ২ থেকে ৪ জিবি ফ্রি স্পেস থাকা প্রয়োজন। এভাবে ইন্টারনাল স্টোরেজ কিছুটা জায়গা খালি রাখার ফলে অ্যাপগুলো খুব স্মুথভাবে রান করবে আর ফোনের স্পিডও বাড়বে।

মাইক্রো-এসডি কার্ড ব্যবহার করুন
ফোনের ইন্টারনাল স্টোরেজ খালি রাখতে সম্ভব হলে ফোনে এক্সট্রা মাইক্রো-এসডি কার্ড অর্থাৎ মেমোরি কার্ড ব্যবহার করুন। তবে মাইক্রো-এসডি কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি মাথায় রাখা প্রয়োজন, সেটা হলো ওই মাইক্রো-এসডি কার্ডের ডাটা লোডিং স্পিড কেমন। আপনি যদি আপনার ফোনে একটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল মাইক্রো-এসডি কার্ড ব্যবহার করেন, তবে ফোন আগের তুলনায় আরও স্লো হয়ে যাবে। তাই মাইক্রো-এসডি কার্ড কেনার সময় দেখে শুনে পরীক্ষা করে কিনবেন।

লাইভ ওয়ালপেপার ও উইজেটস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন
অনেকেই ফোনকে সুন্দর দেখাতে হোমস্ক্রিনে বিভিন্ন ধরনের উইজেট (Widgets) ও লাইভ ওয়ালপেপার ব্যবহার করে থাকেন। তবে এসব উইজেট ও লাইভ ওয়ালপেপার ফোনের স্পিডে প্রভাব ফেলে ও ফোনকে স্লো করে দেয়। তাই আপনার এন্ড্রয়েড স্মার্টফোনটিতে ভালো স্পিড পেতে চাইলে লাইভ ওয়ালপেপার ও উইজেটস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।

অটো-সিনক বন্ধ করে দিন
অটো সিনক (Auto-Sync) চালু রাখলে ফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে বিভিন্ন এক্টিভিটি চালু থাকে, যার ফলে ফোন কিছুটা স্লো হয়ে যায়। আপনার ফোনেও যদি অটো সিনক চালু থাকে, তবে সেটি বন্ধ করে দিন। উল্লেখ্য যে, অটো সিনক বন্ধ করে দিলে আপনি সদ্য আসা মেইলগুলো সম্পর্কে নোটিফিকেশন পাবেন না। এছাড়া, অটো ক্লাউড সিনক ও বন্ধ হয়ে যাবে।

ডাটা সেভার মোড ব্যবহার করুন
ফোনে আপনি যে ব্রাউজার ব্যবহার করেন, সেটির ডাটা সেভার মোড অন করে দিন। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইট গুলো দ্রুত লোড হবে এবং ভালো স্পিড পাবেন। তবে এতে আপনার ব্রাউজিং কোয়ালিটির অবনতি হতে পারে।

ওয়াইফাই কানেকশন অপটিমাইজ করুন
অনেক সময় দুর্বল ওয়াইফাই কানেকশনে কানেক্টেড থাকার দরুন ফোন স্লো হয়ে যায়। তাই ওয়াইফাই ডিসকানেকট করে আপনার ফোনের স্পিড পরীক্ষা করে এটি নিশ্চিত করুন যে, আপনি ওয়াইফাইজনিত কারণে ফোন স্লো হওয়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কি না। এমন অবস্থায় আপনার ওয়াইফাই কানেকশন অপটিমাইজ করার ব্যবস্থা করুন।

টাস্ক কিলিং মাত্রা রেখে করুন
অনেকেই মনে করেন টাস্ক ম্যানেজার ক্লিয়ার রাখলে ফোনে অধিক স্পিড পাবেন। তাই তারা সবসময় একটি অ্যাপ থেকে অন্য অ্যাপে প্রবেশ করার সময় আগের অ্যাপটি টাস্ক ম্যানেজার থেকে কেটে দেন। তবে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। একটি অ্যাপ ক্লোজ করে দিলে পরেরবার অ্যাপটি চালু করতে ফোনকে প্রচুর মেমোরি খরচ করতে হয়, যার কারণে ফোন স্লো হয়ে যায়। তাই মাত্রার বাইরে সবসময় টাস্ক কিলিং করবেন না। পাশাপাশি একসঙ্গে অনেকগুলো অ্যাপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এতেও ফোন স্লো হয়ে যায়।

ব্যাটারি বদলে ফেলুন
অনেকসময় দুর্বল ব্যাটারির কারণেও ফোনের পারফরম্যান্সে ব্যাঘাত ঘটে। তাই এটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন আপনার ফোন স্লো হওয়ার পেছনে ব্যাটারিজনিত কোনো সমস্যা দায়ী কি না। সেক্ষেত্রে ফোনের ব্যাটারি বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

ফোন রিস্টার্ট করুন
এটি প্রথম ও সবচেয়ে সহজ উপায়। ফোনটি রিস্টার্ট করার পর মোবাইল নেটওয়ার্ক সার্চ করে, এর কারণ ইন্টারনেটের স্পিড কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই উপায় ছাড়াও মোবাইল ডেটা একবার বন্ধ করে আবার চালু করতে পারেন।

অনন্যা/এসএএস

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ