Skip to content

১৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পৃথিবীর প্রথম ক্যাপসুল হোটেল

অনেক পর্যটক ভ্রমণে গিয়ে সাশ্রয়ী হোটেল খোঁজেন, যাদের জন্য রাত্রিযাপনে বিলাসিতার চেয়ে মূলত নতুন স্থান ও খাবার অনুসন্ধানেই খরচ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের ভ্রমণকারীর সংখ্যা নেহাত কম নয়, আর তাঁদের জন্য আদর্শ হয়ে উঠছে ক্যাপসুল হোটেল।

ক্যাপসুল হোটেল এক ধরনের হোটেল ব্যবস্থা, যেখানে ছোট আকারের, ব্যক্তিগত পড বা ক্যাপসুলে থাকার ব্যবস্থা থাকে। জাপানে জনপ্রিয়  এই হোটেলগুলোতে অতিথিদের জন্য কেবল একটি বিছানা এবং প্রয়োজনীয় কিছু সুবিধা থাকে। ক্যাপসুলগুলো সারিবদ্ধভাবে সাজানো থাকে এবং প্রতিটি ক্যাপসুলে সাধারণত আলাদা টিভি, আলো, চার্জার পয়েন্ট, এবং কন্ট্রোল প্যানেল থাকে।

এই ধরনের হোটেলগুলো সাধারণত কম খরচে স্বল্পস্থানের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং যাত্রীদের জন্য রাতে থাকার একটি সুবিধাজনক বিকল্প ব্যবস্থা হয়ে উঠেছে।

ক্যাপসুলের আভিধানিক অর্থ ছোট প্রকোষ্ঠ বা ছোট জায়গা। সেখান থেকেই এমন নামকরণ। ক্যাপসুল হোটেলের কক্ষ সাধারণ আকারের একটি বিছানার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের সমান। অর্থাৎ কক্ষে শুধু একটি বিছানার সমান জায়গা থাকে। বসে থাকা যায় কিন্তু দাঁড়ানো যায় না, এমন উচ্চতার ছাদ এসব কক্ষের বৈশিষ্ট্য। আমাদের দেশের দূরপাল্লার স্লিপিং বাসের কেবিনের সঙ্গেও এর তুলনা করা যায়। হোটেলগুলোতে একটি কক্ষের উপর আরেকটি কক্ষ থাকে। এজন্য উপরে উঠতে হয় সিঁড়ি বেয়ে। অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে হয় ওয়াশরুম, রান্নাঘরসহ অন্যান্য সুবিধা।

১৯৭৯ সালে জাপানের বন্দরনগরী ওসাকার উমেদা অঞ্চলে প্রথম ক্যাপসুল হোটেল নির্মিত হয়, যা পরিচিত ছিল ‘ক্যাপসুল ইন ওসাকা’ নামে। এই হোটেলের নকশা করেছিলেন খ্যাতনামা স্থপতি কিশো কুরোকাওয়া। এর পূর্বে, কিশো ১৯৭২ সালে  ‘নাকাগিন ক্যাপসুল টাওয়ার’ নামে একটি ভবনের নকশা করেন, যা বাণিজ্যিক ও আবাসিক ব্যবস্থাসম্পন্ন ছিল এবং এখান থেকেই ক্যাপসুল হোটেলের ধারণা বাস্তবে রূপ নেয়। পরে ধীরে ধীরে জাপানের বিভিন্ন শহরে এই ধরনের হোটেল ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমা বিশ্বে ‘পড হোটেল’ নামে পরিচিত এই হোটেলগুলো এখন চীন, ইন্দোনেশিয়া, বেলজিয়াম, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে দেখা যায়, যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সহায়ক।

প্রথম দিকে কর্পোরেট অফিসের কর্মীদের জন্য এ ধরনের আবাসন তৈরি করা হয়েছিল। ওই সময়ে জাপানে দীর্ঘ কর্মঘণ্টা শেষে অনেকেই রাতের পার্টিতে বুঁদ হয়ে থাকতেন। কেউ কেউ দীর্ঘ সময় ট্রেনে ভ্রমণ করে বাড়ি ফিরতে চাইতেন না। বাড়ি ফেরার থেকে বরং অল্প খরচে ছোট্ট টিভি ও শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রসমেত একটি ব্যক্তিগত কামরায় রাত কাটাতে পারলে মন্দ কী! এছাড়া খরচের দিকগুলো মাথায় রেখে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের জন্যও ক্যাপসুল হোটেলের কথা ভাবা হয়েছিল। যাঁরা একা থাকেন, আয় করেন অল্প, অনায়াসেই তাঁরা যেন এসব জায়গায় রাত কাটাতে পারেন।

অনেক পর্যটক ক্যাপসুল হোটেলকে নতুন এবং আকর্ষণীয় অভিজ্ঞতা হিসেবে বিবেচনা করেন।

ক্যাপসুল হোটেল বিশেষভাবে এশিয়ার কিছু দেশের মধ্যে জনপ্রিয়, যেমন জাপান, যেখানে এই ধরনের হোটেলগুলো মূলত সাশ্রয়ী মূল্যের এবং কার্যকরী থাকার ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ