ডিজিটাল মস্তিষ্ক ডাইনোসরের!
ডাইনোসরেরা কেমন ছিল, কি খেত, এসব নিয়ে গবেষণা কম হয়নি। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে যে প্রাণীটির বিচারণ এই পৃথিবীতে। প্রাণীটিকে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে সৃষ্টি হয়েছে আজগুবি কিছু গল্প। এবার বিজ্ঞানীরা বানিয়ে ফেললেন খোদ ডাইনোসরের মাথা। ডিজিটালই তৈরি করা হয়েছে এই মস্তিষ্ক। আর তার থেকেই নাকি ডাইনোসরদের বেশ কিছু আচরণগত বৈশিষ্ট্য এবং খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে পাওয়া গিয়েছে তথ্য।
এই বিষয়ে জুলজিক্যাল জার্নাল অফ লিনিয়ান সোসাইটি তথ্য প্রকাশ করে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা থেকোডন্টোসরাস নামে একটি ডাইনোসর প্রজাতির মস্তিষ্ক তৈরি করেছে। প্রায় ২০৫ মিলিয়ন বছর আগে ডাইনোসরের এই প্রজাতির অস্তিত্ব ছিল ব্রিটেনে। এই গবেষণার মাধ্যমে জানা গিয়েছে, থেকোডন্টোসরাস ছিল মাংসাশী এবং এরা দুই পায়ে চলা ফেরা করত।
জার্নালে এই গবেষণার বিষয়ে লিখেছেন অ্যান্টনিও ব্যালেল। তাঁর মতে, “থেকোডন্টোসরাসের মস্তিষ্ক নিয়ে বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এর মধ্যে বেশ কিছু তথ্য যথেষ্ট বিস্ময়কর। যেমন এদের পরবর্তী প্রজন্ম চার পায়ে হাঁটলেও, এরা কিন্তু দুই পায়েই চলাফেরা করত। এছাড়া এরা মাংসাশীও ছিল।”
এই প্রজাতির ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া গিয়েছিল উনবিংশ শতকে। যদিও মস্তিষ্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই, সফটওয়্যারের সাহায্যে মস্তিষ্ক এবং কানের ভিতরে অংশের পুনর্গঠন করেছেন। খুলির যে অংশ এখনও ভাল আছে তার থেকেই তারা ধারণা পেয়েছেন মস্তিষ্কের আকৃতি সম্পর্কে।
এই প্রজাতির ডাইনোসরদের মস্তিষ্কে চারটি ফ্লক্যুলার লোব ছিল, এমনই ইঙ্গিত দিয়েছে বিজ্ঞানীদের তৈরি ডাইনোসরের ব্রেইন। এই লোবই তাদের সাহায্য করত দু’পায়ে চলার সময় শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে। এমনকি চোখ এবং ঘাড়ের নিয়ন্ত্রণের সঙ্গেও জড়িত মস্তিষ্কের এই কাঠামো।আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই এই ডাইনোসরের মস্তিষ্কের ৩ডি মডেল তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
বিষয়টি কৃত্রিমতা পুরোপুরি থাকলেও পরবর্তী প্রজন্ম ডাইনোসর সম্পর্কে একটি মোটামুটি ধারনা পেতে পারে। পৃথিবী থেকে ডাইনোসরের বিলুপ্তি হয়েছিল সে অনেক বছর হয়ে গেছে। তবে ডাইনোসর সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান ধরে রাখার ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র।