ঈদে হতদরিদ্র-তৃণমূলের প্রতি নজর দিন
ঈদকে ঘিরে সবার এক ধরনের উত্তেজনা থাকে। কিন্তু বিত্তবানরা যেভাবে তাদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সমাজের হতদরিদ্র ও তৃণমূলরা সেভাবে পারে না। বরং অনেকেই আছে, উচ্চমূল্যের কারণে সন্তানকে একটু সেমাই-মিষ্টি বা একটা নতুন জামাও কিনতে পারে না। সন্তানের মুখের ম্লান দৃশ্য দেখে ওই বাবা-মায়ের কষ্টের সীমা থাকে না! অন্যদিকে বিত্তবানদের দেখা যায়, একটি জামার জায়গায় দশটিও কিনতে। তাই যাদের সামর্থ্য আছে, তারা একটির জায়গায় পাঁচটি পোশাক না কিনে বরং তার সামর্থ্য অনুযায়ী দরিদ্রদের প্রতি নজর দেওয়া উচিত।
বাড়ির পাশের দরিদ্র মানুষটার ওপর নজর দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিজের সন্তানের জন্য ৫টি পোশাক কেনার সময় সমাজের বিত্তবানশালী বা যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের দেখা উচিত তার পাশের বাড়ির মানুষটা ঈদের দিনে খেতে পারছে কি না! ঈদের কেনাকাটার সময় যদি মানুষ একটু মিতব্যয়ী হয়, তবেই এ জগৎ-সংসার কল্যাণময় হয়ে উঠবে। নিজের সন্তানের মুখটা খুশিতে ভরে উঠলে প্রত্যেক বাবা-মায়ের আত্মতৃপ্তি জাগে! কিন্তু সেই সন্তান যখন কষ্টে থাকে, একমুঠো খাবার না পেয়ে অভুক্ত থাকে, তখন সেই মা-বাবাই সবচেয়ে বেশি কষ্টে থাকেন!
ঈদ এলেই দেখা যায়, সবার কেনাকাটার ধুম। যার সামর্থ্য আছে, সে নিজের ও পরিবারের সবার জন্য এক বা একাধিক জামা-কাপড় কিনছেন। তার এই কেনাকাটারর ছবিও শেয়ার করেছেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ্য মাধ্যমে। আর যে বা যাদের সেই সক্ষমতা নেই, তারা এসব দেখে মনোকষ্টে ভুগছেন। শুধু তাই নয়, ঈদকে কেন্দ্র করে নিজের পছন্দ ও চাহিদামতো শপিং না করতে পেরে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও যে ঘটেনি, এমন নয়৷ ফলে সমাজের কথা ভেবে হলেও বিত্তবানদের এদিকে একটু নজর দিতে হবে।
ঈদ মানে তো আনন্দ। আর আনন্দ বরং ভাগাভাগি করে নিলেই তার মহিমা ও সৌন্দর্য বেশি ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ঈদে কেনাকাটার ক্ষেত্রে দরিদ্র তৃণমূলদের প্রতি যেন খেয়াল থাকে বিত্তবানদের।
ঈদ হোক সবার জন্য আনন্দের। দরিদ্র ও তৃণমূল পর্যায়ের মানুষদের প্রতি সাহায্যের হাত পৌঁছে যাক। তারও যাতে সুন্দরভাবে সময়টাকে উদযাপন করতে পারে, সেদিকে বিত্তশালীরা সচেতন দৃষ্টি দিতে পারেন। সাম্যের ও শান্তির পৃথিবী গড়ে উঠুক। ঈদকে ঘিরে সম্প্রীতির অতল বন্ধন সৃষ্টি হোক মানবের।