কর্মজীবী স্ত্রীকে সাহায্য করুন পাশে থেকে
দশভুজা নারী’ কথাটি শুধু কথার কথাই নয়। সত্যি সত্যিই নারীকে দুই হাতে সামাল দিতে হয় দশ হাতের কাজ। একজন নারীই পারেন ঘরে-বাইরে সমানতালে সামলাতে। কর্মজীবী নারীদের কর্মক্ষেত্রে সব কাজ সুচারুভাবে তো করতেই হয়; আবার ঘরে এসেও সামাল দিতে হয় সংসারের সব কাজ। নয়টা পাঁচটা অফিস সামলানো এবং সংসার সামলানো একইসঙ্গে নিপুণ হাতেই করতে পারলেই নারী সর্বজয়ার তকমা অর্জন করতে পারেন। আর তা না পারলে শুনতে হয় না গঞ্জনা।
বিষয়টা এমন যে একজন কর্মজীবী নারী তার কর্মক্ষেত্রে যতই ব্যস্ত থাকুক তবুও ঘরের কাজ, রান্না করা, সন্তান সামলানো ও স্কুলে আনা-নেওয়া, বাচ্চাদের পড়তে বসানো, ঘরে কেউ অসুস্থ হলে তার সেবা করা, সামাজিক দায়িত্ব, মেহমানদারি সবই একহাতে সামলানোর দায়িত্বও তারই। কারও কারও হয়তো সাহায্যকারী রয়েছেন কিন্তু মূল দায়িত্ব তো পালন করতে হয় তাকেই।
অথচ সংসারের সব কাজের দায়িত্ব কেবল নারীর নয় পুরুষেরও এই ভাবনা থেকে যদি কর্মজীবী স্ত্রীর পাশাপাশি স্বামীও সাংসারিক কাজ ভাগ করে নেন তাহলে স্ত্রী যেমন মানসিক ও শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে পারেন, এবং এতে একে-অপরের প্রতি সম্পর্কও দৃঢ় হয়। যেহেতু সংসারটা দু’জনারই। তাই সংসারকে সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে স্বামী-স্ত্রী দু’জনারই রয়েছে সমান দায়িত্ব। সংসারের হাজারও কাজ সামলাতে গিয়ে একজন কর্মজীবী নারীকে অনেকটাই হিমশিম খেতে হয়। তাই সেক্ষেত্রে অনেক কর্মজীবী নারী তার সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার ছেড়ে দিতে হয় সংসার সামলাতে গিয়ে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই পুরুষের উচিত কর্মক্ষেত্র সামলে সামান্য কিছুটা হলেও তার কর্মজীবী স্ত্রীর পাশে থেকে সাংসারিক কাজে সহযোগিতা করা। এ সামান্য সহযোগিতাই স্ত্রীর জন্য অনেকখানি স্বস্তিজনক। এবং দুজনের মধ্যেও সম্পর্ক হবে আরো গভীর।
অনেক পুরুষকে দেখা যায় অফিস থেকে ঘরে ফিরে খবর দেখতে বা ফ্রেশ হয়ে বাইরে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেই বেশি পছন্দ করেন। অথচ চাকরিজীবী স্ত্রী অফিস থেকে ঘরে ঢুকেই ঘর গোছানো, সন্তানের যত্ন, পড়তে বসানো, বিকালের নাশতা তৈরি, রাতের রান্নাসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন মাঝরাত পর্যন্ত। এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই যদি কর্মজীবী হলে সংসারের কাজ ভাগাভাগি করতে পারেন।
যেকোন মানুষই অফিস থেকে বাসায় ফিরে ক্লান্ত থাকেন। আর যদি বিশ্রামের বেলায় কেবল পুরুষ নিতে পারেন স্ত্রীন ক্লান্তির কথা কেউ ভাবেনা। এভাবে দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক চাপ আর নিজের যত্ন না নিতে পারার কারণে অনেক নারীই অসুস্থ হয়ে পড়েন, শারীরিক সৌন্দর্য হারান, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকেন। তাই আমাদের ভুলে গেলে চলবে না সংসারটা দু’জনার, সংসারের কাজগুলোও দু’জনার।
তাই চাকরিজীবী প্রত্যেক নারীই স্বামীর কাছ থেকে সংসারের কাজে সহযোগিতা কামনা করেন। আর শুধু স্ত্রীর চাপ কমানোর জন্যই নয় স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে সংসারের কাজ ভাগাভাগি করে নিলে দু’জনার মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সম্মান ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও বজায় থাকে।